Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

গাফিলতিতে মৃত রোগী, গ্রেফতার হাতুড়ে

এই কথা জানাজানি হতেই মৃতের আত্মীয়-স্বজনেরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। খবরটা কানে পৌঁছয় ডাক্তারবাবুর। তিনি চেম্বার বন্ধ করে এলাকা ছাড়েন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
স্বরূপনগর শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৭ ০০:৩০
Share: Save:

জ্বরের প্রকোপ ছ়ড়িয়েছে স্বরূপনগরের বিভিন্ন গ্রামে। তারই মধ্যে ভুল চিকিৎসায় যুবকের মৃত্যুর অভিযোগে এক হাতুড়ে চিকিৎসককে পিটিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিল জনতা।

মঙ্গলবার স্বরূপনগরের সীমান্তবর্তী গাবর্ডা গ্রামের ঘটনা। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম সৌমেন বৈদ্য (২৬)। অভিযুক্ত চিকিৎসক আমির হোসেনের চেম্বারে ভাঙচুর চালিয়ে তাঁকে সেখানে আটকে রাখে জনতা। পরে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক বছর ধরে গাবর্ডা গ্রামের বাজারে চেম্বার খুলে বসেছিলেন আমির। জ্বরের প্রকোপ ছড়ানোর পরে কারবারও মন্দ চলছিল না। সপ্তাহখানেক আগে জ্বরে পড়েন সৌমেন। বসিরহাটের শিবহাটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি হন। দু’দিন আগে বাড়ি ফেরেন। শনিবার ফের জ্বর এলে আমিরের কাছে গিয়েছিলেন। ওষুধপত্র দেন তিনি। কিন্তু তাতে জ্বর ছাড়েনি। সৌমেনকে একটি ইঞ্জেকশন দেন। তিন বোতল স্যালাইনও দেওয়া হয়। তারপরেও রোগী সুস্থবোধ না করায় তাঁকে বসিরহাটের জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেন আমির। হাসপাতালে পৌঁছনোর আগেই রাস্তায় নেতিয়ে পড়েন ওই যুবক। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

এই কথা জানাজানি হতেই মৃতের আত্মীয়-স্বজনেরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। খবরটা কানে পৌঁছয় ডাক্তারবাবুর। তিনি চেম্বার বন্ধ করে এলাকা ছাড়েন।

চেম্বার ক’দিন বন্ধই ছিল। কয়েক দিন পরে পরিস্থিতি শান্ত হয়েছে মনে করে মঙ্গলবার চেম্বার খুলে ফের রোগী দেখা শুরু করেন আমির। এই খবর জানতে পেরে মৃতের আত্মীয়-পরিজনেরা চেম্বারে চড়াও হয়। শুরু হয় ভাঙচুর, মারধর। ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে, এই অভিযোগ তোলা হয় আমিরের বিরুদ্ধে। পরে মৃতের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ আমিরকে গ্রেফতার করে।

সৌমেনের বাবা হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক জগদীশবাবু। তিনি বলেন, ‘‘সামান্য অসুস্থ বোধ করায় ছেলেকে ওই হাতুড়ের কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম। সে মাত্র আধ ঘণ্টার মধ্যে একের পর এক তিনটি স্যালাইনের সঙ্গে একাধিক ওষুধ মিশিয়ে ছেলেকে দিল। তাতেই সে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। অল্পক্ষণের মধ্যে আমার একমাত্র ছেলেটা মারাও গেল। ওই চিকিৎসকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’’

বুধবার আদালতে পথে আমির বলেন, ‘‘ডেঙ্গি হয়েছিল রোগীর। বাড়াবাড়ি সত্ত্বেও আমার কাছে দেরিতে আনা হয়েছিল। জ্বরের ঠিক চিকিৎসাই করেছিলাম। রোগীর অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে দ্রুত শহরের হাসপাতালে ভর্তি করার জন্য বলেছিলাম। এতে আমার দোষ কোথায় বুঝতে পারছি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE