অপেক্ষা: এটিএমের বাইরে লাইন। নিজস্ব চিত্র
ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের জেরে প্রথম দিনই ভোগান্তি শুরু গয়ে গিয়েছে সাধারণ মানুষের।
শুক্রবার বেলা ১২টা নাগাদ হিঙ্গলগঞ্জের দু’টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখার সামনে গিয়ে দেখা গেল, সুন্দরবনের জঙ্গল-লাগোয়া সামসেরনগর, হেমনগর, কালীতলা, যোগেশগঞ্জ-সহ বিভিন্ন গ্রাম থেকে বেশ কিছু গ্রাহক হাজির হয়েছেন। তাঁরা জানতেনই না, শুক্র-শনিবার ব্যাঙ্ক ধর্মঘট। সামশেরনগরের বাসিন্দা পেশায় দিনমজুর দিলীপ মণ্ডল বলেন, ‘‘ছেলেটা খুবই অসুস্থ। ওকে নিয়ে আত্মীয়েরা ভেলোর গিয়েছেন। কাল রাতে জানতে পারলাম, আজই ছেলের অপারেশন আছে। ২০ হাজার টাকার প্রয়োজন। ১৫ হাজার টাকা ধার করেছি। তা নিয়ে সামশেরনগর থেকে ৪০ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে হিঙ্গলগঞ্জ এলাম। ব্যাঙ্কের মাধ্যমে টাকা পাঠাব ভেবেছিলাম। কিন্তু এসে দেখছি, ব্যাঙ্ক বন্ধ। বুঝতে পারছি না, কী ভাবে টাকা পাঠাতে পারব। ছেলের অপারেশন পিছিয়ে যাবে কিনা।’’
কালীতলায় থাকেন সুস্মিতা দাস। বললেন, ‘‘বারাসতের একটি সরকারি চাকরির কোচিং সেন্টারে আজই ছেলেকে ভর্তি করার পরিকল্পনা ছিল। জানুয়ারি মাস পর্যন্ত একটি অফার চলছিল। ব্যাঙ্কে এসে শুনলাম, সোমবার ব্যাঙ্ক খুলবে। এটিএম থেকেও টাকা তুলতে পারি না। মনে হচ্ছে, ১০ হাজার টাকার ছাড় আর পাব না!’’
এ দিন হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের বিভিন্ন প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে আসা অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, কেউই এটিএম ব্যবহার করতে পারেন না। ব্যাঙ্ক থেকেই টাকা তুলতে এসেছিলেন। কাজ না হওয়ায় বাড়ির পথ ধরলেন।
এটিএম কাউন্টারের বাইরে আবার লাইন দেখা গেল। কিন্তু শহরের মতো সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় এটিএম পরিষেবা সহজলভ্য নয়। তাই এ দিন কেউ কেউ টাকা তোলার জন্য ২০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করেছেন। যেমন হাসনাবাদ থানার রূপমারি, বিশপুর গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জিত মাইতি, মিতু দাস, সইদুল ইসলাম। তাঁরা জানালেন, বাড়ির আশেপাশে এটিএম নেই। বঙ্গীয় গ্রামীণ বিকাশ ব্যাঙ্ক আছে, কিন্তু তা বন্ধ। টাকার প্রয়োজনে প্রায় ২০ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে হাসনাবাদ আসতে হয়েছে। এটিএমের বাইরে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে কাজ হয়েছে।
সন্দেশখালি থানার আতাপুর গ্রামের বাসিন্দা কৃষ্ণপদ কয়াল বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর পেয়েছি। ঘরের কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করতে না পারলে দ্বিতীয় দফার টাকা আসবে না। কিন্তু সিমেন্ট ফুরিয়ে গিয়েছে। এ দিকে বিল্ডার্সের দোকানে বাকি দিচ্ছে না। আবার ব্যাঙ্কও বন্ধ। আমার এটিএম কার্ড নেই। খুব সমস্যায় পড়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy