Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বিসর্জনে ঢল নামল ইছামতীর পাড়ে

শনিবার সন্ধ্যায় ইছামতীর পারে দুর্গা প্রতিমা নিরঞ্জন উপলক্ষে ফের দুই বাংলার মিলনোৎসবের সাক্ষী থাকল টাকি। এ বারও জোড়া নৌকার মাঝে প্রতিমা তুলে ইছামতীর বুকে ভাসান হল।

কৈলাসের-পথে: ইছামতীতে নৌকায় প্রতিমা নিরঞ্জন।—নিজস্ব চিত্র।

কৈলাসের-পথে: ইছামতীতে নৌকায় প্রতিমা নিরঞ্জন।—নিজস্ব চিত্র।

নির্মল বসু
বসিরহাট শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৭ ০২:১০
Share: Save:

ফাটছে রকমারি আতস বাজি। মেলা বসেছে হরেক রকমের জিনিসের। দুই পারে তখন জড়ো হয়েছে বহু মানুষ।

শনিবার সন্ধ্যায় ইছামতীর পারে দুর্গা প্রতিমা নিরঞ্জন উপলক্ষে ফের দুই বাংলার মিলনোৎসবের সাক্ষী থাকল টাকি। এ বারও জোড়া নৌকার মাঝে প্রতিমা তুলে ইছামতীর বুকে ভাসান হল।

সম্প্রতি ফেসবুকে একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে বসিরহাটের বিভিন্ন এলাকাতে গণ্ডগোল হয়েছিল। দেশের নিরাপত্তার জন্য সীমান্ত সিল করে দেওয়া হয়। এ বার বিসর্জনে খুব একটা ভিড় হবে না বলে ভেবেছিলেন অনেকে। এই অবস্থায় টাকি তো বটেই, রাজ্যের অসংখ্য মানুষের মন ভেঙে গিয়েছিল। সকলেই চেয়েছিলেন, অনুপ্রবেশ বা শান্তি-শৃঙ্খলার দিকটি সামাল দিয়ে যেন টাকিতে ভাসানে পুরনো দিনের ছবি ধরে রাখা যায়।

শনিবার সকাল থেকেই ইছামতীর পাড়ে ভিড় হতে শুরু করে। এমনকী বৃষ্টিতে ভিজেও হাজার হাজার মানুষ বিসর্জন দেখবে বলে দাঁড়িয়েছিলেন বসিরহাট ও টাকির ইছামতী নদীর ধারে। বসিরহাট মহকুমার টাকির অন্য পারে বাংলাদেশের শ্রীপুর, পারুলিয়া, ভাতসালা, শাকরা, দেভাটা, ঘলঘলে গ্রাম। এ দিন দুই প্রতিবেশী দেশের মানুষ নিজের নিজের দেশের জাতীয় পতাকা নিয়ে জাতি-ধর্ম ভুলে ভাসানের দিনে ইছামতীর বুকে ভেসে বেড়ান। একে অন্যের দিকে ফুল-মিষ্টি ছুড়ে পরিচয় বিনিময় করেন। ভাসান দেখতে দু’দেশের মানুষ মিলেমিশে একাকার। নৌকো থেকেই চলছে চকলেট-বাতাসা বিতরণ। চলছে বিজয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়। কোলাকুলি করতে দেখা গিয়েছে অনেককে। তবে গত বছরগুলির তুলনায় এ বারে টাকি, হাসনাবাদ, বসিরহাটে ভিড় বেশি হয়েছে।

এ দিন টাকিতে ইছামতীর মাঝ বরাবর সীমানা ভাগ করে পুলিশ, বিএসএফের লঞ্চ এবং স্পিড বোড ছিল। নদীর পাড়ে বিএসএফ জওয়ান এবং পুলিশি টহলও ছিল জোরদার। বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বিজিবিদেরও দেখা গিয়েছে নদীর মাঝে টহল দিতে। টাকির পুরপ্রধান সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ বারে যেমন প্রতিমার নৌকাতে ভিড় ছিল। তেমন পাড়ে দাঁড়িয়ে প্রতিমা নিরঞ্জন দেখেছেনও বহু মানুষ।’’

দমদম থেকে আসা সফল সেনগুপ্ত, জামসেদপুরের বাসিন্দা চন্দ্রা বন্দ্যোপাধ্যায়রা বলেন, ‘‘টেলিভিশন, ফেসবুকে দেখা টাকির ভাসান আর সামনে থেকে দেখা অনেক আলাদা। এখানে না এলে অনেক কিছুই বাকি থেকে যেত।’’

পুরপ্রধান তপন সরকার বলেন, ‘‘পুলিশ ও প্রশাসনের সহযোগিতায় এখানকার মানুষ সুষ্ঠ ভাবে প্রতিমা নিরঞ্জনের আনন্দ উপভোগ করেন।’’ কোনও দুর্ঘটনাও ঘটেনি। এ জন্য অবশ্য বিএসএফ, বিজিবি এবং উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পুলিশ-প্রশাসনকেই এ জন্য কৃতিত্ব দিচ্ছেন টাকির মানুষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE