Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Dholahat

গাড়ির ঝাঁকুনিতে প্রসব হয়ে যায় পথেই

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ঢোলাহাট থানা এলাকার উত্তরাবাদ থেকে মন্দিরতলা ঘাট পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার এই রাস্তা বহু দিন সংস্কার হয় না।

এবড়ো-খেবড়ো রাস্তা দিয়েই যাতায়াত। ছবি: দিলীপ নস্কর

এবড়ো-খেবড়ো রাস্তা দিয়েই যাতায়াত। ছবি: দিলীপ নস্কর

দিলীপ নস্কর
ঢোলাহাট শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৫:০৩
Share: Save:

সারা রাস্তা জুড়ে পিচের আবরণ উঠে কাদা-মাটি বেরিয়ে পড়েছে। তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। তাতে বর্ষার জল জমে থই থই অবস্থা। কোথাও কোথাও রাস্তার উপরে জমে থাকা কাদা মাটির ঘোলা জলে হাঁসের দল ভেসে বেড়াচ্ছে।

ঢোলাহাটের উত্তরাবাদ মোড় থেকে মন্দিরের ঘাট পর্যন্ত রাস্তা এতটাই খারাপ যে, হাসপাতালে যাওয়ার পথে অ্যাম্বুল্যান্সেই প্রসব হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে একাধিক বার।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ঢোলাহাট থানা এলাকার উত্তরাবাদ থেকে মন্দিরতলা ঘাট পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার এই রাস্তা বহু দিন সংস্কার হয় না। ফলে গত ৬-৭ বছর ধরে সারা রাস্তা জরাজীর্ণ। প্রায় ১৭ কিলোমিটার রাস্তার পুরোটাই পিচ উঠে গিয়েছে। বার বার ইটের টুকরো ফেলে গর্ত পূরণ করায় সারাটা পথ প্রায় লাল মাটির রাস্তায় পরিণত হয়েছে। আবার ইটের টুকরোর উপরে গাড়ি চলাচল করে তৈরি হয়েছে বড় বড় গাড্ডা। জল জমে গাড্ডাগুলি জলাশয়ে পরিণত হয়েছে। ঘোলা জলে গর্ত কতটা গভীর, তা বোঝা যায় না। ফলে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় অ্যাম্বুল্যান্স ঢুকতে চায় না বলে অভিযোগ।

রাস্তায় কোনও আলোর ব্যবস্থা না থাকায়, সন্ধ্যার পরে চলাচল করা দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। অথচ পাথরপ্রতিমা ব্লকের দক্ষিণ গঙ্গাধরপুর, শ্রীনারায়ণপুর এবং কাকদ্বীপ ব্লকের রামগোপালপুর, কাসিয়াবাদ পঞ্চায়েতের মানুষের কলকাতা, ডায়মন্ড হারবার বা কাকদ্বীপ শহরে যেতে হলে ওই রাস্তাই একমাত্র ভরসা। এই এলাকা থেকে কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতাল এবং ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে রোগীও নিয়ে নিয়ে যেতে হয় ওই রাস্তা দিয়ে। ওই এলাকার এক আশাকর্মীর দাবি, “খানাখন্দে ভরা রাস্তা বলে এমনিতেই অ্যাম্বুল্যান্স আসতে চায় না। আবার গর্ভবতী মায়েদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে গাড়ি গাড্ডায় পড়ে সন্তান প্রসব হচ্ছে হামেশাই। রোগীর পরিবারের লোকজন আমাদের উপরে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন। অনেকেই বলছেন, বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাব, তবুও বেহাল রাস্তা দিয়ে সরকারি হাসপাতালে যাব না।” তিনি জানান, দিন কয়েক আগেই উত্তরাবাদ গ্রামের শামিমা বিবিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে রাস্তায় সন্তান প্রসব হয়েছে।

ওই এলাকার মন্দিরতলা গ্রামের বাসিন্দা পবন মণ্ডল বলেন, “বেহাল রাস্তার জন্য কিছু দিন আগে আমার পরিবারে এক গর্ভবতীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে যে সমস্যায় পড়ছিলাম, তা কখনওই ভুলব না। বেহাল রাস্তার জন্য গাড়ি চলাচল প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে। সাইকেলে যাতায়াত করাও বিপজ্জনক। ছেলেমেয়েদের বাইরে পাঠাতে ভয় করে, এই বুঝি কোনও দুর্ঘটনা ঘটে গেল।”

দক্ষিণ গঙ্গাধরপুর এলাকার বাসিন্দা গিয়াসউদ্দিন হালদার বলেন, “কয়েক বছর ধরে রাস্তাটি খারাপ হয়ে রয়েছে। নতুন করে তৈরির জন্য স্থানীয় বিধায়ক ও পঞ্চায়েত সমিতিকে জানানো হয়েছিল। বর্ষা কাটলে রাস্তাটি নতুন করে তৈরি করা হবে বলে বিভাগীয় দফতর থেকে জানানো হয়েছে।” পাথরপ্রতিমা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শেখ রাজ্জাক বলেন, “রাস্তাটি বর্তমানে ইটের টুকরো ফেলে চলাচলের মতো করে দেওয়া হচ্ছে। বর্ষা কেটে গেলে পাকাপাকি ভাবে সংস্কার করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dholahat Road
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE