Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

নদীবাঁধে ভাঙন, আতঙ্ক গারুলিয়ায়

পুজোর মধ্যেই ভাঙন শুরু হয়। রাস্তা ভেঙে পড়লে এলাকার বাসিন্দাদের যাতায়াতে সমস্যা বাড়বে।

ভাঙন: ভাঙছে রাস্তা। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

ভাঙন: ভাঙছে রাস্তা। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৯ ০০:৫৩
Share: Save:

নদীবাঁধে ভাঙন শুরু হয়েছিল গত বছর। ত্রিপলের বস্তা দিয়ে আটকানোর চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু বালি ভর্তি ত্রিপলের বস্তায় বাগ মানেনি। গত কয়েক দিনে গারুলিয়ার দু’টি ওয়ার্ডে ভাঙনের ফলে তলিয়ে গিয়েছে কংক্রিটের রাস্তার একাংশ। গঙ্গার জল কমতে শুরু করায় ভাঙন ভয়াল রূপ নিয়েছে বলে এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন।

পুজোর মধ্যেই ভাঙন শুরু হয়। রাস্তা ভেঙে পড়লে এলাকার বাসিন্দাদের যাতায়াতে সমস্যা বাড়বে। ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসক আবুল কালাম আজাদ ইসলাম বলেন, ‘‘ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে পুরসভা জরুরি ভিত্তিতে ত্রিপলের বস্তা দিয়ে ভাঙন ঠেকানোর প্রাথমিক কাজ শুরু করেছিল। বর্তমানে সেচ দফতরের আরবান ড্রেনেজ বিভাগ ভাঙন রোধে কাজ করছে।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গারুলিয়া পুরসভার ১৯ এবং ২০ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় পুরোটাই গঙ্গার তীরবর্তী। গত বছর থেকেই গঙ্গার পারের রাস্তার নীচের অংশে ভাঙন শুরু হয়েছিল। ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের গঙ্গার পাড় বাঁধানো হয়েছিল কয়েক বছর আগে। গতবার বর্ষায় সেই পাড়ে ভাঙন শুরু হয়। এ স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মহালয়ার পর থেকে টানা বৃষ্টি শুরু হয়। তারপরেই গঙ্গার জল বাড়ে। সঙ্গে সঙ্গে ১৯ এবং ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বেশ কয়েকটি জায়গায় রাস্তার নীচের বাঁধানো কংক্রিটের অংশ ভেঙে পড়ে। তারপরেই রাস্তার নীচের মাটি ধুয়ে যায়।

স্থানীয় বাসিন্দা রূপশঙ্কর সরকার বলেন, ‘‘গঙ্গার জল বাড়লেই রাস্তা ভাঙতে শুরু করে। এ বার একদিকে গঙ্গার জল বেড়ে আড়াই কিলোমিটার রাস্তার অন্তত ২৫টি জায়গায় বাঁধে নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে। কোনও কোনও জায়গায় অর্ধেকের বেশি রাস্তা গঙ্গায় তলিয়ে গিয়েছে।’’ বাসিন্দারা জানান, গঙ্গার জল বাড়ার সময়ে কংক্রিটের রাস্তায় ভাঙন শুরু হয়েছিল। জল কমতে শুরু করার পরে রাস্তার নীচের মাটি ধসতে শুরু করেছে। কিছু জায়গায় রাস্তায় হাঁটাচলা করা যাচ্ছে না।

পুজোর দিন দু’য়েক আগে ভাঙন শুরু হয়। গারুলিয়া পুরসভা ত্রিপলের বস্তা দিয়ে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করে। পরের দু’দিনে আরও বেশ কয়েকটি জায়গায় রাস্তা ভেঙে যায়। অষ্টমীর দিন থেকে সেচ দফতর কাজ শুরু করে। প্রাণমিক ভাবে রাস্তার নীচে মাটি ভরাটের কাজ চলছে। তার পরে কংক্রিটের কাজ শুরু হবে।

দিন দু’য়েক আগে ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহ ভাঙন কবলিত এলাকা ঘুরে দেখেন। এই ঘটনার জন্য তিনি রাজ্য সরকারকেই দায়ী করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরেই ওই এলাকা ভাঙন কবলিত। রাজ্য সরকার সময় মতো পদক্ষেপ করেনি। বারবার তাপ্পি মারার মতো কাজ হয়েছে। তার মধ্যে কাটমানির ব্যাপার রয়েছে। সেই জন্য বাঁধ এমন পলকা হয়ে পড়েছে।’’ এই বিষয়ে কেন্দ্র কিছু করবে কিনা জানতে চাওয়া হলে অর্জুন বলেন, ‘‘রাজ্য যদি কাজ না করতে পারে, তা হলে তারা আমাদের বলে দিক। কেন্দ্র সরকার দায়িত্ব নেবে।’’

নৈহাটির তৃণমূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘‘উনি কেন্দ্রীয় সরকারের হয়ে দায়িত্ব নিচ্ছেন কি? কারণ, এর আগে একাধিকবার রাজ্য সরকার ভাঙন রোধ প্রকল্পে কেন্দ্রের কাছে টাকা চেয়েছে। কিন্তু তারা কোনও সাহায্য করেনি। এক কেউ যদি কেন্দ্রের দায়িত্ব নেয়, স্থানীয় বাসিন্দারা তাতে উপকৃতই হবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

River Erosion Garulia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE