ব্যস্ততাহীন: বহু কাজই এখন থমকে ডাকঘরে। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল
ডাকঘর চলছে। কিন্তু মিলছে না অধিকাংশ পরিষেবা।
অভিযোগ, শাখা ডাকঘরগুলিতে মাস দু’য়েকের বেশি রেজিস্টার্ড পোস্ট, মানি অর্ডারের মতো জরুরি কিছু পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। এমনকী, উপ ডাকঘর অফিসগুলিতেও পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে না। ছুটতে হচ্ছে হেড অফিসে। চূড়ান্ত নাকাল হচ্ছেন জয়নগরের মানুষ।
সাধারণ দরকারে চিঠি লেখার চল প্রায় নেই। কিন্তু রেজিস্ট্রি চিঠি, স্পিড পোস্ট, মানি অর্ডারের মতো বেশ কিছু জরুরি কাজের জন্য এখনও অনেকেই ডাকঘরের উপরে নির্ভর করেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এলাকাভিত্তিক শাখা ডাকঘরগুলি থেকে এই ধরনের পরিষেবা পাওয়া যায়। কিন্তু গত সেপ্টেম্বর থেকে অনেক পরিষেবাই পাওয়া যাচ্ছে না জয়নগরে। এমনকী, কোনও কোনও জায়গায় সেভিংস অ্যাকাউন্টে টাকা জমা রাখার কাজও হচ্ছে না।
কেন এই পরিস্থিতি?
ডাক বিভাগ সূত্রের খবর, সেপ্টেম্বর মাস থেকে ‘কোর সিস্টেম ইন্টিগ্রেটর’ নামে এক ধরনের নতুন সফট্ওয়্যার চালু হয়েছে ডাকঘরগুলিতে। এর মাধ্যমেই যাবতীয় কাজ হওয়ার কথা। কিন্তু ওই সফট্ওয়্যারের লিঙ্ক পাওয়া নিয়ে একটা সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এর জেরেই বিঘ্নিত হচ্ছে কাজ। জয়নগর এলাকারই একটি শাখ ডাকঘরের পোস্টমাস্টার বলেন, ‘‘এই সফট্ওয়্যার চালুর আগে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কিন্তু কাজ করতে গিয়ে আমরা অনেক রকম সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছি। অধিকাংশ সময়েই লিঙ্ক থাকছে না। ফলে কাজ করা যাচ্ছে না।’’
এই পরিস্থিতিতে সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ। দক্ষিণ বারাসতের বাসিন্দা এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘বিশেষ প্রয়োজনে নিয়মিত মানি অর্ডার করতে হয়। ডাকঘর থেকেই করতাম। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে মানি অর্ডার করা যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে অন্য ভাবে টাকা পাঠাতে হচ্ছে।’’ গোচরণ এলাকার এক প্রবীণ নাগরিকের কথায়, ‘‘পোস্ট অফিসের অ্যাকাউন্টে টাকা সঞ্চয় করি। কিন্তু বেশ কয়েক দিন ধরে টাকা জমা করা যায়নি। সাধারণ কাজের জন্য তাই এখন বাধ্য হয়ে বারুইপুরে হেড পোস্ট অফিসে ছুটতে হচ্ছে।’’ বহড়ুর এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘আমরা দীর্ঘ দিন ধরে জয়নগর থেকে একটি সাহিত্য পত্রিকা বের করছি। সেই পত্রিকা ডাকযোগে বাইরে বিভিন্ন জায়গায় পাঠাতে হয়। কিন্তু এখান থেকে এখন সেই কাজ হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে বারুইপুর ছুটতে হচ্ছে।’’
এর জেরে এলাকায় একাধিক সরকারি দফতরের কাজেও অসুবিধা হচ্ছে। বারুইপুরে মুখ্য ডাকঘর থেকে জানানো হয়েছে, সমস্যা সমাধানে বিশেষ দল কাজ করছে। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘নতুন সিস্টেম চালু হওয়ার জন্যই এই সমস্যাটা হচ্ছে। আমাদের বিশেষজ্ঞ দল এটা নিয়ে কাজও করছে। আশা করছি মাসখানেকের মধ্যেই সমস্যা মিটে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy