Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যুবকের মৃত্যু নিয়ে ক্ষোভ, অবরোধ

হাইটেনশন তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল হল কুলতলির দেবীপুর এলাকা।

বিপর্যয়: তখনও দেহ নামানো হয়নি গাছ থেকে। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল

বিপর্যয়: তখনও দেহ নামানো হয়নি গাছ থেকে। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল

নিজস্ব সংবাদদাতা
কুলতলি শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:২৪
Share: Save:

হাইটেনশন তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল হল কুলতলির দেবীপুর এলাকা। গ্রামের মধ্যে থেকে হাইটেনশন লাইন সরানোর দাবিতে চলল অবরোধ। সন্ধে ৭টা নাগাদ পুলিশ এসে গ্রামবাসীদের অনুরোধ করলে তাঁরা অবরোধ তুলে নেন। কুলতলি ব্লকের, মৈপীঠ কোস্টাল থানার অন্তর্গত পূর্ব দেবীপুর গ্রামের ঘটনা। মৃতের নাম অশোক ঘোড়ই (৪২)।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, অশোকের বাড়ি পশ্চিম দেবীপুরে। তিনি নারকেল গাছে উঠে পুরনো পাতা পরিষ্কার এবং নারকেল পাড়ার কাজ করতেন। স্থানীয় ভাষায় যাকে বলে ‘গাছ ছাড়ানো’। সোমবার সকালে পাশের গ্রাম পূর্ব দেবীপুরে তেমনই গাছ ছাড়াতে আসেন তিনি। যে গাছে ওঠার কথা ছিল, সেটির কয়েকটি পাতা হাইটেনশন তারের সঙ্গে লেগে ছিল। স্থানীয় মানুষের দাবি, গাছে উঠে কাজ করার সময়ে সেই তারেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন অশোক। গাছের উপরেই মৃত্যু হয়। এলাকার লোকজন থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে লোকজনের সাহায্যে দেহ নামায়।

এরপরেই শুরু হয় বিক্ষোভ। পুলিশকে প্রাথমিক ভাবে দেহ নিয়ে যেতে বাধা দেন স্থানীয় মানুষ। অভিযোগ, বারবার বলা সত্ত্বেও গ্রামের মধ্যে দিয়ে হাইটেনশন লাইনের তার সরানো হয়নি। এমনকী, ১১০০০ ভোল্ট ও ৪৪০ ভোল্ট লাইনের তারের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে একই খুঁটি। সেই খুঁটি থেকে হাইটেনশন লাইন সরানোর দাবি জানান তাঁরা। মৃত অশোকের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিও তোলা হয়। বিকেলে দেহ নিয়ে স্থানীয় নকুলের মোড় অবরোধ করেন মানুষজন। যানজট হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা পিন্টু মণ্ডল বলেন, ‘‘গ্রামের মধ্যে এত নিচু দিয়ে হাইটেনশন তার লাগানোর সময়েই আমরা প্রতিবাদ করেছিলাম। কোনও লাভ হয়নি।’’ আর এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘এখানে এত গাছপালা, তার মধ্যে দিয়েই ১১০০০ ভোল্টের লাইন গিয়েছে। বিপদ অবশ্যম্ভাবী ছিল। সেটাই হল। প্রশাসন এবং বিদ্যুৎ দফতরের অপদার্থতার জন্যই এই ঘটনা ঘটল।’’

হাইটেনশন লাইন টানার কাজের দায়িত্বে থাকা বিদ্যুৎ দফতরের স্থানীয় কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আধিকারিক বলেন, ‘‘গ্রামের মধ্যে দিয়ে হাইটেনশন লাইন নিয়ে যাওয়া যাবে না, এ রকম কোনও নিয়ম নেই। একই পোস্টে ৪৪০ ও ১১০০০ ভোল্ট থাকতে পারবে না, এটাও ঠিক নয়। যেখানে যেমন সুবিধা সেই ভাবেই কাজ করতে হয়।’’ তিনি আরও জানান, দফতরের পক্ষ থেকে বারবার অনুরোধ করা হয়, তারের কাছাকাছি কোনও কাজ করার আগে অবশ্যই জানান। সে ক্ষেত্রে বিদ্যুৎসংযোগ আগে থেকে বিচ্ছিন্ন করে তারপরে কাজ করা সম্ভব। কিন্তু এ সব পরামর্শ কানে তোলেন না সাধারণ মানুষ।

গ্রামবাসী বিদ্যুৎ দফতরের থেকে এই মর্মে মৌখিক আশ্বাস পেয়েছেন, ওই খুঁটি থেকে হাইটেনশন তারটি আলাদা করে দেওয়া হবে। সেই আশ্বাস পেয়েই তাঁরা অবরোধ তুলে নেন। অশোকের দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায় পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Protest Death Electrocution
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE