খপ্পরে: এই ছবি দেখেই বিভ্রান্ত হয়েছিলেন আপতারুল। নিজস্ব চিত্র
মোবাইলে মেসেজ এসেছিল, ‘কৌন বনেগা কড়ৌরপতি’ অনুষ্ঠানে তিনি নাকি লটারিতে ২৫ লক্ষ টাকা জিতেছেন।
হাবড়ার রাউতারা গ্রামের বাসিন্দা বছর বাইশের সাদাসিধে যুবক আপতারুল ইসলাম সেলাই করে সংসার চালান। ওই মেসেজ দেখে তাঁর চোখ কপালে ওঠার জোগাড়। শেষমেশ অবশ্য আপতারুল বুঝতে পেরেছেন, প্রতারকদের খপ্পরে পড়েছেন। ইতিমধ্যেই ২৫ হাজার টাকা খুইয়েছেন তিনি। শেষমেশ দ্বারস্থ হয়েছেন পুলিশের।
বৃহস্পতিবার বিকেলে আপতারুলের হোয়াটসঅ্যাপে একটি অডিও বার্তা মেসেজ আসে। সঙ্গে একটি ফোন নম্বর দেওয়া হয়। ওই নম্বরে ফোন করতে বলা হয় আপতারুলকে। মেসেজটি যে পাঠিয়েছিল, সে নিজের নাম বলে, এমডি রাজকুমার। সে নাকি কেবিসি কোম্পানির ম্যানেজার। হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো নম্বরে যোগাযোগ করেন আপতারুল।
পুলিশের কাছে আপতারুল জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তির কথা মতো হোয়াটসঅ্যাপে আধার কার্ডের ফটো কপি, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর, ব্যাঙ্কের নাম-সহ বেশ কিছু নথিপত্র পাঠান। এরপরে তাঁকে জানানো হয়, পুরস্কারের ২৫ লক্ষ টাকা পেতে হলে তাঁকে সরকারি ট্যাক্স বাবদ ২৫ হাজার টাকা দিতে হবে।
ইতিমধ্যে আপতারুলের কাছে মোবাইলে কিছু ছবি পাঠায় রাজকুমার। সেটি ছিল অমিতাভ বচ্চন ও সোনি টিভির লোগো দেওয়া একটি শংসাপত্র। ইংরেজিতে টাইপ করা ছিল আপতারুলের নাম। তিনি যে ২৫ লক্ষ টাকা জিতেছেন, তা-ও লেখা ছিল। পাশাপাশি রাজকুমার নিজের ছবি দেওয়া পরিচয়পত্র, কেবিসি লেখা একটি অফিসের ছবিও আপতারুলকে পাঠায়। এরপরে আর অবিশ্বাসের কারণ ছিল না। আপতারুলের কথায়, ‘‘অমিতাভ বচ্চনের মতো মানুষের ছবি দেখে ভেবেছিলাম, পুরোটাই সত্যি। কিন্তু পরে ভুল ভাঙল।’’
কী ভাবে?
এক সঙ্গে ২৫ হাজার টাকা দেওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব নয় বলে জানিয়েছিলেন আপতারুল। তখন রাজকুমার প্রস্তাব দেয়, প্রথমে ১২ হাজার টাকা জমা দিন। তা হলেই আপতারুলের অ্যাকাউন্টে ১২ লক্ষ টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হবে। পরে ১৩ হাজার টাকা জমা করলে বাকি টাকাও মিলবে।
আপতারুল তাই করেন। সুনীল চৌধুরী নামে এক ব্যক্তির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে তিনি ১২ হাজার টাকা জমা করেন রাজকুমারের কথা মতো। অভিযোগ, তারপরে তাঁর অ্যাকাউন্টে কোনও টাকা আসেনি। উল্টে নানা ভাবে বাকি ১৩ হাজার টাকাও নেওয়া হয়। ওই যুবকের কথায়, ‘‘আমার অ্যাকাউন্টে কোনও টাকা ঢোকেনি। লোভে পড়ে অনেক কষ্টে জমানো ২৫ হাজার টাকাও চলে গেল।’’ শুক্রবার থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন আপতারুল। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তাদের দাবি, ভুয়ো নথিপত্র পাঠানো হয়েছিল ওই যুবককে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy