Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

নিজের গড়ে লক্ষ্যভেদ হবে ? প্রশ্ন অর্জুনকে ঘিরে

৩০ বছরের রাজনৈতিক জীবনে সমস্যা অনেক এসেছে। তবে এই প্রশ্নের মুখে তেমন পড়তে হয়নি অর্জুন সিংহকে। এ বার অর্জুনের লড়াই কিন্তু তাঁর পুরনো শিবিরের বিরুদ্ধে।

অর্জুন সিংহ

অর্জুন সিংহ

সুপ্রকাশ মণ্ডল
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৯ ০৫:২০
Share: Save:

৩০ বছরের রাজনৈতিক জীবনে সমস্যা অনেক এসেছে। তবে এই প্রশ্নের মুখে তেমন পড়তে হয়নি অর্জুন সিংহকে। এ বার অর্জুনের লড়াই কিন্তু তাঁর পুরনো শিবিরের বিরুদ্ধে। যেখানে সূচ্যগ্র মেদিনীও ছাড়তে রাজি নয় তাঁর সাবেক দল তৃণমূল। ফলে পদ্ম শিবিরে যোগ দেওয়া অর্জুনের কাছে এখন চ্যালেঞ্জ তাঁর গড়ে নিজেকে সিংহ প্রমাণ করার।

শুধু নিজের পুরনো দলই নয়, অর্জুনকে এ বার লড়তে হচ্ছে তাঁর নতুন দল বিজেপির অন্দরেও। একটা সময়ে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে বিজেপির পয়লা নম্বর রাজনৈতিক শত্রু হিসেবে বিবেচিত হতেন অর্জুনই। বেশ কিছু বিজেপি নেতার অভিযোগ, অর্জুনের জন্যই তাঁরা একদিন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন।

এখন অর্জুন তাঁদেরই দলে। ফলে তাঁদেরও নতুন করে সমীকরণের হিসেব কষতে হচ্ছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু বিজেপি নেতা তৃণমূলে নাম লিখিয়েছেন। তবে অনেকে এখনও অপেক্ষা করছেন। তাঁদের একজন বললেন, ‘‘এখন অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই। কারণ, আমরা একটা নীতি নিয়ে দল করি। ফলে সেই দল এখনই ছেড়ে অন্য দলে যাওয়ার কথা ভাবছি না। তবে নীতির সঙ্গে আপস করতে হলে তখন অন্য কথা ভাবতে হবে।’’

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

অর্জুনের জন্য একটা সময়ে দলে কোনঠাসা হয়ে পড়া এক আইনজীবী নেতা সম্প্রতি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তাঁকে ব্যারাকপুর কেন্দ্রে প্রার্থী করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। তবে তাঁর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কয়েকদিনের মধ্যে অর্জুনও পদ্ম শিবিরে যোগ দিতে হিসেব বদলে যায়। সেই নেতাও বর্তমানে দোটানায় রয়েছেন। বিজেপি তাঁকে প্রচারে কাজে লাগাতে চাইলেও তিনি নিজে নতুন দলের প্রচারকার্য থেকে কিছুটা দূরত্ব রেখেই চলছেন। আগামী দিনে পুরনো দলে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না তাঁর অনুগামীরা।

এই সব নব্য বিজেপি এবং অর্জুন বিরোধী পুরনো বিজেপি নেতাদের ভোটের কাজে নামানোটাই এখন বিজেপির কাছে চ্যালেঞ্জ। তবে বিজেপি অবশ্য প্রকাশ্যে সে কথা স্বীকার করছে না। দলের রাজ্য কমিটির সদস্য, তথা ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংগঠনিক সভাপতি অহীন্দ্র বসু বলেন, ‘‘রাজনীতিতে এটা হয়। কেউ কেউ অসন্তুষ্ট হতে পারেন। তবে তাঁরা সংখ্যায় খুব কম। তাঁরা হয়তো দল ছেড়ে যাচ্ছেন। কিন্তু তার থেকে অনেক বেশি লোক তৃণমূল ছেড়ে প্রতিদিন আমাদের দলে আসছেন।’’

অর্জুন দলে আসায় তাঁদের কোথায় লাভ হবে?

অহীন্দ্র জানান, অর্জুন দীর্ঘদিনের পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ। নিজে হাতে ব্যারাকপুরে সংগঠন তৈরি করেছেন। ফলে তাঁকে বহু মানুষ ভালবাসেন। তাঁদের সমর্থন পদ্মের ঝুলিতেই যাবে বলে নিশ্চিত বিজেপি। তবে তৃণমূল শিবিরের পাল্টা দাবি, অন্য বিধানসভা এলাকা দূরের কথা, অর্জুনের নিজের বিধানসভা ভাটপাড়াতেও বিজেপি ‘লিড’ পাবে না।

নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘‘আমরা নই, সাধারণ মানুষই এ কথা বলছেন। ভোটের ফলেই প্রমাণ হবে, কে কোথায় কত ভোট পান।’’ একই কথা বলছেন অর্জুনও। তাঁর মত, ‘‘মানুষ বিচার করবেন, এই তৃণমূলকে তাঁরা চেয়েছিলেন কিনা। এই তৃণমূলের না আছে নীতি, না আছে নেতা। এখন পুরোটাই তৃণমূল পুলিশ কংগ্রেস।’’ ব্যারাকপুরের তৃণমূল প্রার্থী দীনেশ ত্রিবেদী বলেন, ‘‘মানুষ প্রার্থী দেখে, দলের নীতি বিচার করে ভোট দেবেন। এটা নিশ্চিত, ব্যারাকপুরের মানুষ চাইবেন না অশান্তি নিজেদের এলাকায় অশান্তি কায়েম হোক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE