Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

সতর্ক থাকুন, বলছে পুলিশ

সাম্প্রতিক সময়ে হাবড়া থানা এলাকার একাধিক মানুষ এমন  ভাবেই খুইয়েছেন বহু টাকা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সীমান্ত মৈত্র
হাবড়া শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৮ ০৩:১৫
Share: Save:

অচেনা নম্বর থেকে হঠাৎ ফোন? গায়ে পড়ে কম সুদে ঋণ দেওয়ার প্রস্তাব?

সাবধান, প্রতারকদের ফাঁদ হতে পারে।

সাম্প্রতিক সময়ে হাবড়া থানা এলাকার একাধিক মানুষ এমন ভাবেই খুইয়েছেন বহু টাকা।

পুলিশ বহু ক্ষেত্রে তদন্ত করে অনেককে পাকড়াও করেছে। কিন্তু প্রতি ক্ষেত্রেই তদন্তকারীদের বক্তব্য, পুলিশের যতটুকু করার, তা করবে। কিন্তু মানুষকেও আরও সচেতন হতে হবে।

হাবড়ার পুলিশ ইতিমধ্যেই সচেতনতামূলক কর্মশালা করছে। মানুষকে বোঝানো হচ্ছে, ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কেউ ফোন করলে দ্রুত পুলিশকে জানান। বাড়িতে কেউ নথিপত্র নিতে এলে তাদের কাছে বৈধ সরকারি নথিপত্র রয়েছে কিনা, তা দেখতে চান। কারণ, সেবি বা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অনুমতি ছাড়া কোনও সংস্থা বা সোসাইটি আর্থিক লেনদেনের কাজ করতে পারে না। হাবড়া থানায় কাউসেলিং সেন্টার আছে। সেখানেও মানুষ সচেতন করা হচ্ছে।

সম্প্রতি হাবড়ার জয়গাছি এলাকার বাসিন্দা মিঠু পাল নামে এক মহিলা একই ধরনের চক্রের খপ্পরে পড়ে প্রায় ৩৫ হাজার টাকা খুইয়েছেন। তদন্তে নেমে প্রতারণা চক্রের এক মহিলাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। ফোনে মিঠুকে বলা হয়েছিল, আইটি ফাইল, সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্র, প্যান কার্ড, আধার কার্ডের ফটো কপির বিনিময়ে ব্যক্তিগত ঋণ দিবে তারা। বহুবার ফোনে প্রস্তাব দেওয়ার পরে রাজি হয়েছিলেন মিঠু। এক মহিলা ও এক পুরুষ বাড়িতে এসে ২ লক্ষ টাকা ঋণ পাইয়ে দেবে বলেছিল। দু’টি চেক দিয়েছিলেন মিঠু। একটি ‘ক্যানসেলড চেক’। অন্যটি ১৪৯ টাকার। সার্ভিস চার্জের নাম করে ১৪৯ টাকার চেকটি নেওয়া হয়েছিল। পর দিন মিঠুর মোবাইলে ব্যাঙ্কের পাঠানো মেসেজ থেকে তিনি জানতে পারেন, অ্যাকাউন্ট থেকে ৩৫,৫০০ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছিল, ১৪৯ টাকার চেকে ভ্যানিশিং কালি ব্যবহার করেছিল প্রতারকেরা। এ জন্য তারা মিঠুকে দিয়ে শুধু সইটুকু করিয়েছিল চেকে। বাকিটা নিজেদের পেন দিয়ে লিখে নেয়। ওই পেনেই ছিল এমন কালি, যা কিছুক্ষণের মধ্যে উধাও হয়ে যায় নিজে থেকেই। ফলে সই করা চেকে নিজেদের খুশি মতো টাকার অঙ্ক বসিয়ে নিতে বাধা থাকে না।

তদন্তকারী অফিসারেরা জানিয়েছেন, প্রতারণা চক্রের সদস্যেরা ইন্টারনেট বা অন্য নানা উপায়ে মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে। তাতে শুরু হয় ফোন। যাতে ঋণ দেওয়ার টোপ দেওয়া হতে থাকে বার বার। শেষমেশ কেউ রাজি হলেই শুরু হয় বাকি প্রস্তুতি।

বৃহস্পতিবার হাবড়ায় ফের আর্থিক প্রতারণা চক্রের হদিস মিলেছে। গ্রেফতার হয়েছে তিনজন। এ ক্ষেত্রে অবশ্য অন্য উপায়ে টাকা গায়েব করে দিত প্রতারকেরা, জানতে পেরেছে পুলিশ।

অতীতে হাবড়ায় বহু চিট ফান্ড গজিয়ে উঠেছিল। বহু মানুষ সেখানে টাকা রেখে সর্বস্বান্ত হয়েছেন। ওই সব চিট ফান্ড এখন নেই। কিন্তু নতুন মোড়কে ফের মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলতে গজিয়ে উঠেছে ঋণ দেওয়ার কারবার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Police Warning Awareness Money Forgery
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE