Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

বিশ্বজিতের সঙ্গে প্রেম, মানছেন শাখী

বুধবার রাতে অশোকনগরে ২৬ নম্বর রেলগেট এলাকায় রেল লাইনের পাশ থেকে অজয়ের দেহ উদ্ধার করে জিআরপি। ট্রেনের গার্ড জিআরপিকে জানিয়েছিলেন, এক যুবক ট্রেনের ধাক্কা খেয়ে ছিটকে পড়েছেন।

আদালতের-পথে: শাখী ও বিশ্বজিৎ। ছবি: সুজিত দুয়ারি

আদালতের-পথে: শাখী ও বিশ্বজিৎ। ছবি: সুজিত দুয়ারি

নিজস্ব সংবাদদাতা
অশোকনগর শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৮ ০২:১১
Share: Save:

তরুণ ক্রিকেটার অজয় করের মৃত্যুর পরে তাঁকে অপহরণের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল শাখী বিশ্বাস ও তাঁর বন্ধু বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্যকে। পরে অজয়ের পরিবার খুনের অভিযোগ দায়ের করে শাখী-বিশ্বজিৎ সহ চার জনের বিরুদ্ধে। আদালতের অনুমতিতে খুনের মামলাও রুজু হয়েছে ওই দু’জনের বিরুদ্ধে। শনিবার শাখী ও বিশ্বজিৎকে বারাসত আদালতে তোলা হলে বিচারক ৫ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

বুধবার রাতে অশোকনগরে ২৬ নম্বর রেলগেট এলাকায় রেল লাইনের পাশ থেকে অজয়ের দেহ উদ্ধার করে জিআরপি। ট্রেনের গার্ড জিআরপিকে জানিয়েছিলেন, এক যুবক ট্রেনের ধাক্কা খেয়ে ছিটকে পড়েছেন। ময়নাতদন্তে পাঠানো হয় দেহ। তখনও অজয়ের পরিচয় জানা যায়নি। শুক্রবার সকালে তাঁর পরিবার দেহ শনাক্ত করেন। এরপরেই শাখী ও বিশ্বজিতের উপরে ক্ষোভ উগরে দেন তাঁরা। পরিবারের দাবি, শাখীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল অজয়ের। সম্প্রতি তাতে চিড় ধরে। বিশ্বজিতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে শাখীর। ওই যুবককে কাজে ‌লাগিয়ে শাখী পথের কাঁটা অজয়কে সরিয়ে দিয়েছে।

পুলিশের দাবি, প্রাথমিক জেরায় খুনের অভিযোগ স্বীকার করেননি ধৃতেরা। তবে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল, তা মেনে নিয়েছেন।

তা হলে এর মধ্যে অজয় এলেন কী ভাবে? পুলিশের দাবি, জেরায় শাখী জানিয়েছেন, অজয়ের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল গত কয়েক বছর ধরে। কিন্তু বিশ্বজিৎকে তিনি ভালবাসেন। অজয় অবশ্য শুধুমাত্র বন্ধুত্বের সম্পর্ক নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না। শাখীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে চেয়েছিলেন বলেই দাবি ওই তরুণীর।

শাখী পুলিশকে জানিয়েছেন, বুধবার সন্ধ্যায় অজয়ের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়েছিল। কথা কাটাকাটি হয়। অজয়কে তিনি চড়ও মেরেছিলেন। ওই দিনই বিশ্বজিৎ অজয়কে হুমকি দিয়েছিল বলে তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ। তবে বিশ্বজিৎ ও শাখীর দাবি, তাঁরা কেউ অজয়কে খুন করেননি।

শাখীর বছর ন’য়েক আগে বিয়ে হয়েছিল অশোকনগরের এক যুবকের সঙ্গে। তাঁদের এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলে থাকে বাবার কাছে। মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়িতে থাকতেন শাখী। এ দিন সকালে উত্তেজিত জনতা সেই বাড়ির সামনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখায়।

শাখীর বাবা অবসরপ্রাপ্ত কলকাতা পুলিশ কর্মী স্বপন চৌধুরী। তিনি বাড়িতে জড়োসড়ো হয়ে বসেছিলেন। বললেন, ‘‘ঘর বন্ধ করে বসে থাকতে হচ্ছে। যে কোনও সময়ে হামলা হতে পারে। লোকজন এসে গালিগালাজ করেছে, হুমকি দিয়ে গিয়েছে। ভাবছি বাড়ি ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যাব।’’ মেয়েকে ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি বাবার। বিশ্বজিতের সঙ্গে মেয়ের প্রেমের কথা তাঁর জানা ছিল না বলেই দাবি করেছেন স্বপন। তিনি বলেন, ‘‘দু’জনের মেলামেশা ছিল। কিন্তু আমি তো ভাবতাম, ভাই-বোনের মতো সম্পর্ক।’’ কয়েক বছর আগে বিশ্বজিতের বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু নেশাভান করতেন তিনি। তেমন কোনও কাজকর্ম করতেন না বলে জানিয়েছেন পাড়া-পড়শিরা। মেয়েকে নিয়ে স্ত্রী বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছেন কয়েক বছর হল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE