Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

‘চপ্পল চাই’, ফোন ট্যাপ করে দুষ্কৃতী দল ধরল পুলিশ

ফোনের সূত্র ধরেই পুলিশ জানতে পারে ‘চপ্পল’ সরবরাহ করা হবে বাসন্তীতে। সেই মতো পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপের ওসি লক্ষ্মীরতন বিশ্বাস ও ক্যানিং থানার ওসি আশিস দাসের নেতৃত্বে অভিযানে নামে পুলিশ।

পাকড়াও: অস্ত্র কারবারিরা। ছবি: সামসুল হুদা

পাকড়াও: অস্ত্র কারবারিরা। ছবি: সামসুল হুদা

নিজস্ব সংবাদদাতা 
ক্যানিং শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৮ ০০:৪২
Share: Save:

ফোনে আড়ি পেতেছিল পুলিশ। তাতেই জনা গেল, ‘১, ৭, ৯ নম্বর চপ্পল, কিছু ফিতে লাগবে। মালের জরুরি চাহিদা আছে। সঙ্গে কিছু খাবার পাঠালেও ভাল হয়। রাতেই মাল লাগবে।’

বৃহস্পতিবার এ হেন ফোনালাপ পেয়ে ভাবতে বসে বারুইপুর জেলা পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ। কোন গাড়িতে মাল পাঠানো হবে? ফোনের কথোপকথনে জানা যায় ডব্লিউবি ৫৮ একিউ ৫৮১১ নম্বরের একটি মারুতি ওমনি ভ্যান ব্যবহার করা হবে। কী মাল পাঠানো হচ্ছে? ফোনের সূত্র ধরে তদন্তে নামে পুলিশ। জানা যায়, ‘১ নম্বর চপ্পল’ মানে পাইপগান। ‘৭ নম্বর চপ্পল’ মানে ৭ এমএম পিস্তল। ‘৯ নম্বর চপ্পল’ মানে ৯ এমএম পিস্তল। ‘জুতোর ফিতে’র মানে ম্যাগাজিন। আর ‘খাবার’ হল গুলি।

অভিযানে নেমে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে ক্যানিংয়ের মাতলা সেতুর কাছ থেকে ধরা পড়া দুষ্কৃতীদের নাম আনোয়ার মেহেবুব মণ্ডল ওরফে বাপ্পা, রুবেল মণ্ডল ও ঝন্টু পাল। ঝন্টু গাড়ির চালক। এদের কাছ থেকে ১২টি পাইপগান, ৯টি গুলি, ৪টি মোবাইল ফোন, একটি গাড়ি উদ্ধার হয়েছে। প্রত্যেকের বাড়ি মুর্শিদাবাদের জলঙ্গি এলাকায়।

বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার অরিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘মুর্শিদাবাদ থেকে এখানে অস্ত্র বিক্রি করতে আসা তিনজন বিক্রেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে বেশ কিছু আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার হয়েছে। ধৃতদের জেরা করে জানার চেষ্টা হচ্ছে, তারা কোথায় অস্ত্র-গুলি সরবরাহ করত। আর কারা এই চক্রে জড়িত, তা-ও খোঁজ করে দেখা হচ্ছে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, প্রায় দু’মাস আগে বাসন্তী থেকে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, মুর্শিদাবাদ ও কলকাতার কিছু অস্ত্র বিক্রেতার হদিস। সেই মতো পুলিশ ফোনে আড়ি পাতা শুরু করে।

এ দিন ফোনের সূত্র ধরেই পুলিশ জানতে পারে ‘চপ্পল’ সরবরাহ করা হবে বাসন্তীতে। সেই মতো পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপের ওসি লক্ষ্মীরতন বিশ্বাস ও ক্যানিং থানার ওসি আশিস দাসের নেতৃত্বে অভিযানে নামে পুলিশ। মোটর বাইক নিয়ে বিভিন্ন গাড়ির উপরে নজর রাখা হয়। ক্যানিংয়ের মাতলা সেতুর কাছে ছিল পুলিশের ওই দলটি। ফোনে ওই গাড়ির খবর আসা মাত্র পুলিশ গার্ডরেল দিয়ে রাস্তা আটকে গাড়ি ঘিরে ফেলে। তিনজন গাড়ি থেকে পালানোর চেষ্টা করলে তাদের হাতেনাতে ধরে ফেলা হয়। তল্লাশি চালিয়ে সিটের নীচে জুতোর সাজানো বাক্স দেখা যায়। সেখানেই ছিল আগ্নেয়াস্ত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Arms Recovery Phone Tapping
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE