প্রতীকী ছবি।
প্রকাশ্যে ধূমপান করা নিষেধ। কিন্তু তা ট্রেনের কামরায় চলছে রমরমিয়ে— এ নিয়ে সম্প্রতি প্রতিবাদ করেছিলেন এক ডাক্তারি পড়ুয়া ছাত্র। সেই নিয়ে তাঁকে ট্রেনের মধ্যেই হেনস্থা হতে হয়। রবিবার মেদেহি হাসান মোল্লা নামে ওই ছাত্র রেলমন্ত্রকে সরাসরি টুইট করে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা জানান। নড়েচড়ে বসেছে রেলমন্ত্রক। রবিবার সন্ধ্যায় ও সোমবার সকালে অভিযান চালিয়ে ক্যানিং লোকাল থেকে তিনজনকে ধূমপানের অভিযোগে গ্রেফতার করেছে রেল পুলিশ।
এমন অভিজ্ঞতা শুধু মেহেদির একার নয়। শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার ক্যানিং লাইনে যাঁরা নিয়মিত যাতায়াত করেন, তাঁদের অনেকেরই একই অভিজ্ঞতা। ট্রেনের কামরায় প্রকাশ্যে ধূমপান দেখতে অভ্যস্ত তাঁরা। খৈনি, গুটখাও খায় অনেকে। কেউ প্রতিবাদ করলেই নানা কটূক্তি শুনতে হয়, হেনস্থা হতে হয় বলে অভিযোগ।
দিন কয়েক আগে গোসাবার ছেলে মেহেদি ক্যানিং থেকে আপ ক্যানিং লোকালে উঠেছিলেন শিয়ালদহ যাবেন বলে। তিনি দেখেন, একদল যুবক তালদি থেকে ট্রেনে উঠে কামরায় বসেই ধূমপান করছে। প্রতিবাদ করলে তাঁকে নানা ভাবে কটূক্তি করা হয়। হেনস্থা করা হয় বলেও অভিযোগ। সে সময়ে অভিযোগ করেননি কেন? মেহেদি জানান, ক্লাস থাকায় হাতে সময় ছিল না।
রানাঘাট লোকালে সিট বুকিং নিয়ে এক যাত্রী টুইট করায় রেলমন্ত্রক দ্রুত পদক্ষেপ করেছে বলে সংবাদপত্রে দেখেছিলেন মেহেদি। রবিবার তিনিও রেলমন্ত্রকে টুইট করে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানান। তারপরেই রেলমন্ত্রক বিষয়টি দেখার জন্য রেল পুলিশকে নির্দেশ দেয়। পরে রেলমন্ত্রকের পক্ষ থেকে মেহেদিকে পাল্টা ট্যুইট করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়। তাঁর ফোন নম্বরও চায় মন্ত্রক। রেল পুলিশ ওই ছাত্রের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে ঘটনার কথা জানতে চায়। রেল পুলিশ ওই ছাত্রের অভিযোগ মতো অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে গ্রেফতার করে এবং জরিমানা করে। পরে সকলে জামিনে ছাড়া পেয়েছে। রেলমন্ত্রক এত দ্রুত এমন ব্যবস্থা নেবে তা ভাবতেও পারেননি মেহেদি। তিনি জানান, প্রত্যন্ত সুন্দরবনের বহু মানুষ বিভিন্ন কাজে নিত্য শহর ও শহরতলিতে যান। তাঁদের কাছে একমাত্র ভরসা ক্যানিং লোকাল। তাঁর কথায়, ‘‘রেল পুলিশ সব কিছু দেখেও না দেখার ভান করে থাকে। এর আগে একবার বিষয়টি নিয়ে ক্যানিং রেল পুলিশকে মৌখিক ভাবে জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা তখন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।’’
রেল পুলিশ যদি মাঝে মধ্যে অভিযান চালায়, তা হলে লোকাল ট্রেনে ধূমপান বন্ধ হবে আশা নিত্যযাত্রীদের অনেকেরই। রেল পুলিশের অবশ্য দাবি, মাঝে মধ্যেই এমন অভিযান চালায় তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy