Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

খুনিরাও বাড়ি নিচ্ছে বনগাঁয়

নথি জমা রাখার জন্য করা হয়েছে পুলিশের খাতা। নিজস্ব চিত্র

নথি জমা রাখার জন্য করা হয়েছে পুলিশের খাতা। নিজস্ব চিত্র

সীমান্ত মৈত্র
বনগাঁ শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৮ ০০:৫৭
Share: Save:

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া খাল থেকে উদ্ধার হয়েছিল অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির দেহ। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে মর্কেচুর রহমান নান্নু নামে ওই ব্যক্তির বাড়ি বাংলাদেশে। ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে বাংলাদেশে খুন-সহ নানা অপরাধমূলক কাজের অভিযোগ ছিল। সে বোয়ালদহ এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকত। কিন্তু বাড়ির মালিক কোনও তথ্যই পুলিশের কাছে জমা দেয়নি।

একজন বাংলাদেশি দুষ্কৃতী এ দেশে এসে গা ঢাকা দিয়ে বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল অথচ পুলিশ বা পঞ্চায়েত কারও কাছে কোনও তথ্য নেই। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী সীমান্তবর্তী এলাকায় যে সমস্ত লোকজন বাড়ি ভাড়া নেবেন তাঁদের সমস্ত নথি পুলিশের কাছে জমা দিতে হবে বাড়ির মালিকদের। কিন্তু এই নিয়ম এখনও সবাই মেনে চলছে না বলেই অপরাধমূলক কাজকর্ম এলাকায় বেড়ে যাচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

বনগাঁ মহকুমার সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় অনেক বাড়ির ভাড়াটিয়াদের সম্পর্কেই পুলিশ কিছু জানে না। পুলিশ জানিয়েছে, নান্নুর ঘটনার পর বনগাঁ থানার পুলিশ অবশ্য ভাড়াটিয়াদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের কাজে আরও গতি এনেছে। থানায় ভাড়াটিয়াদের সম্পর্কে নথি সংগ্রহ করে করা হচ্ছে। বাড়ির মালিকদের দিয়ে ভাড়াটিয়াদের পরিচয় সংক্রান্ত নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ করে রাখা হচ্ছে।

বনগাঁর এসডিপিও অনিল রায় জানিয়েছেন, ‘‘চেষ্টা করা হলেও যথেষ্ট সাড়া পাওয়া যায়নি ঠিকই। আমরা আরও বেশি করে প্রচার করব।’’ বনগাঁর মহকুমাশাসক কাকলি মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সমস্যা সমাধানে ভাবনা চিন্তা করা হচ্ছে। গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি ধ্যানেশ নারায়ণ গুহ বলেন, ‘‘প্রচার করা হলেও ভাড়াটিয়া সম্পর্কে কেউ তথ্য দেন না।’’

পুলিশ কর্তাদের মতে, এ ক্ষেত্রে বাড়ির মালিকদেরও সচেতন হতে হবে। কারণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বাড়ির মালিক পুলিশকে তথ্য জানান না। পুলিশের তরফে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিয়মিত ভাড়াটিয়া সম্পর্কে তথ্য রাখাও হয় না। ফলে অনায়াসে দুষ্কৃতীরা গা ঢাকা দিতে পারে।

কিছুদিন আগে হাবড়া থানার পুলিশ মছলন্দপুর এলাকা থেকে এক ভাড়াটিয়াকে ধরে। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, ধরা পড়া যুবক বাংলাদেশি। সে বসিরহাটে একটি ডাকাতির ঘটনায় যুক্ত ছিল। ওই ঘটনার পর কিছুদিন পুলিশ এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভাড়াটিয়াদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের কাজ করেছিল।

বনগাঁ, বাগদা, গাইঘাটা থানা এলাকায় রয়েছে দীর্ঘ সীমান্ত এলাকা। ওই সব এলাকা দিয়ে চোরাপথে বাংলাদেশ থেকে দুষ্কৃতীরা এসে বাড়ি ভাড়া নেয়। বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ করে— এমন উদাহরণও অতীতে মিলেছে।

এই সব ঘটনা ঘটার পরেও কেন পুলিশকে ভাড়াটিয়া সম্পর্কে জানান না বাড়ির মালিকেরা? গাইঘাটা সীমান্ত এলাকার এক বাড়ির মালিক বলেন, ‘‘পুলিশকে জানাতে হয় বলে তো আগে শুনিনি। তবে এখন থেকে সর্তক থাকব।’’ তবে বাসিন্দাদের মতে, ভাড়াটিয়াদের সমস্ত তথ্য বাড়ির মালিকেরা পুলিশকে ভয়ে জানান না। তা ছাড়া মোটা টাকা পেলেই তাঁরা খুশি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tenant Record Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE