তারাপদ সাধুখাঁ
পরনে সাধারণ লুঙ্গি-চেক জামা, হাতে লাঠি। তবে বৃদ্ধের হাতের ঘড়িটি রীতিমতো দামি। বসেছিলেন কাঁচরাপাড়া কলেজ লাগোয়া খালপাড়ে।
দীর্ঘক্ষণ সেখানেই বসে ছিলেন তিনি। কারওর সঙ্গে কথা বলছিলেন না তিনি। সন্ধ্যা হয়ে গেলেও উঠছিলেন না। তাই দেখে সন্দেহ হয়েছিল এক যুবকের। তাঁর সন্দেহ ঠিক প্রমাণিত হয়। বাড়ির ঠিকানা বলতে পারেননি বৃদ্ধ। শেষ পর্যন্ত খবর দিয়েছিলেন পুলিশে। দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে শেষ পর্যন্ত তাঁকে বাড়িতে ফিরিয়ে দিল বীজপুর থানার পুলিশ। শনিবার রাতের ঘটনা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বৃদ্ধের নাম তারাপদ সাধুখাঁ। বাড়ি কাঁচরাপাড়া মানিকতলা এলাকায়। থাকেন মেয়ে বনানী চট্টরাজের বাড়িতে। প্রায় কোনও কিছুই মনে রাখতে পারেন না তিনি। তাই বাড়ির লোকেরা তাঁকে চোখে চোখে রাখেন। তবে সুযোগ পেলেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন তিনি। তবে বাড়ি থেকে বেশি দূরে যাননি কখনও। শনিবারও দুপুরের পর তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন। বাড়ি থেকে অনেকটাই দূরে চলে যান। বিকেল থেকে বনানীরা তাঁকে খোঁজাখুজি শুরু করলেও সন্ধান মেলেনি তাঁর।
পুলিশ জানিয়েছে তারাপদবাবু বাড়ির ঠিকানা বলতে না পারলেও নিজের নাম ঠিকই বলেছিলেন। শনিবার রাস্তায় টহলদারির ডিউটি ছিল বীজপুর থানার এস আই অশোক দে-র। তিনি বৃদ্ধকে গাড়িতে তুলে নেন। তাঁর খোঁজে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে থাকেন। কিন্তু কেউই চিনতে পারেননি তারাপদবাবুকে। তারাপদবাবুকেও বিভিন্ন এলাকা ঘুরিয়ে দেখানো হয়। তিনিও কিছু চিনতে পারেননি। এমনকী রাস্তা-ঘাটও চিনতে পারছেন না বলে জানান তিনি। রাত বাড়তে থাকে। পুলিশ কিন্তু খোঁজা থামাননি। তাঁরা এক এলাকা থেকে আর এক এলাকায় ঘুরতে থাকেন তারাপদবাবুকে নিয়ে। বেশি রাতের দিকে এক টোটো চালক তাঁকে চিনতে পারেন। তিনি মানিকতলা এলাকার কথা জানান। কিন্তু মানিকতলা এলাকায় বৃদ্ধের বাড়ির খোঁজ মেলেনি। সেখান থেকে জানা যায়, রমেশ গোস্বামী রোডে মেয়ের বাড়িতে থাকেন তিনি। পুলিশ তাঁকে সেখানে পৌঁছে দেন। বনানী জানান, দীর্ঘক্ষণ ঘোরাঘুরি করেও বাবাকে খুঁজে পাননি তিনি। বাবাকে ফিরে পেয়ে পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
পুলিশ জানিয়েছে, এই ধরনের রোগীর ক্ষেত্রে হাতে উল্কি দিয়ে ফোন নম্বর লেখা থাকলে ভাল হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy