বেহাল: এটাই হলো অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ঘর। নিজস্ব চিত্র
চারপাশে জমে আবর্জনা। দুর্গন্ধে টেঁকা দায়। তার মধ্যেই বাঁশ দিয়ে টাঙানো ত্রিপলের নীচে চলছে রান্না, পড়ানো। রায়দিঘির মথুরাপুর ২ ব্লকে বকুলতলার সখেরহাট এলাকার ৩৫৪ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটির অবস্থা এমনই।
প্রসূতি এবং শিশুদের নানা পরিষেবা দেওয়ার জন্যই সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পের আওতায় অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্রগুলি তৈরি হয়। প্রসূতি এবং শিশুদের পুষ্টিকর খাবার এবং প্রাথমিক শিক্ষা দেওয়া হল এর মূল কাজ।
সখেরহাট এলাকার ওই কেন্দ্রটির পাশেই রয়েছে আবর্জনা ফেলার জায়গা। মরা গরু থেকে কুকুর— সেখানে ফেলা হয় সব। কেন্দ্রের সহায়িকাদের ক্ষোভ, বৃষ্টি হলেই চারপাশ জলে ভরে যায়। এই পরিবেশে কোনও সুস্থ মানুষ থাকতে পারে না, ঠিক ভাবে পরিষেবা দেওয়া তো পরের কথা। তাঁরা জানান, ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি ২০১০ সালে অনুমোদন পেয়েছিল। তবে তার নিজস্ব কোনও ঘর নেই। আগে সেটি একটি ক্লাবে চলত। কয়েক বছর আগে ওই ক্লাব ঘরটি ভাঙা হয়। তার পর থেকেই এই অবস্থা। বর্তমানে ওই কেন্দ্রের আওতায় শিশু ও প্রসূতি মিলিয়ে ৯৫ জন রয়েছে। তাদের ভাল ভাবে বসার জায়গাটুকু নেই।
এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, একচিলতে জমিতে কয়েকটি বাঁশ ও ত্রিপল দিয়ে কোনও ভাবে চলছে অঙ্গনওয়াড়ির কাজকর্ম। বাঁশে লাগানো রয়েছে হোর্ডিং। সেটি না থাকলে কোনও ভাবেই বোঝা সম্ভব নয় যে সেটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী মোনালিসা মণ্ডলের ক্ষোভ, ‘‘চারপাশে দুর্গন্ধ। তাই খাবার দিয়ে ছুটি দিয়ে দিই। বর্ষায় জল জমে যাওয়ার জন্য অধিকাংশ দিন ছুটি দিতে হয়।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মথুরাপুর ২ ব্লকে প্রায় চারশো অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। তার মধ্যে মাত্র ৩৯টির নিজস্ব বাড়ি রয়েছে। বাকিগুলি চলে ভাড়া বাড়ি, কোনও বাড়ির দালান অথবা ক্লাব ঘরে। তবে সখেরহাট এলাকার ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটির অবস্থা বোধহয় সব থেকে খারাপ। মথুরাপুর ২ ব্লকের সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পের আধিকারিক প্রশান্ত রায় জানালেন, জমি পাওয়া যাচ্ছে না বলেই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির নিজস্ব ঘর তৈরি করা যাচ্ছে না। কেউ কেউ জমি দিতে ইচ্ছুক হলেও জমির বদলে চাকরি দাবি করছে। তাঁর আশ্বাস, ‘‘ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটিকে অন্য কোনও ক্লাব ঘর অথবা বাড়িতে স্থানান্তরিত করার চেষ্টা চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy