Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

কারখানা-জট কাটল বিকল্প ঘর গড়ে দিয়ে

এর পরেই গত ৩০ মে ব্যারাকপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী রীতিমতো তুলোধোনা করেন স্থানীয় পুরসভার চেয়ারম্যান-সহ তৃণমূল নেতাদের।

জবরদখল: এ ভাবেই আটকে আছে ওয়াগন বেরোনোর পথ। নিজস্ব চিত্র

জবরদখল: এ ভাবেই আটকে আছে ওয়াগন বেরোনোর পথ। নিজস্ব চিত্র

বিতান ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৭ ০১:৫০
Share: Save:

জাহাজের বড় যন্ত্রাংশ এবং ওয়াগন বেরোনোর জন্য প্রয়োজন চওড়া রাস্তা। কিন্তু সেই রাস্তা এবং রেল লাইন দখল করে রীতিমতো ঘর তৈরি করে রয়েছেন প্রায় শ’দেড়েক বাসিন্দা। পথ আটকে আছে বেশ কিছু দোকানও। ফলে যন্ত্রাংশ তো দূর, ওয়াগন বার করাও বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে টিটাগড় ওয়াগন কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃপক্ষের কাছে। বিষয়টি নিয়ে কয়েক বার তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কর্তৃপক্ষের অভিযোগ ছিল, শাসক দলের একাংশের মদতে দখলদারেরা ওই এলাকা ছাড়তে চাইছেন না।

এর পরেই গত ৩০ মে ব্যারাকপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী রীতিমতো তুলোধোনা করেন স্থানীয় পুরসভার চেয়ারম্যান-সহ তৃণমূল নেতাদের। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের তৃণমূলের শ্রমিক নেতা তথা ভাটপাড়ার বিধায়ক অর্জুন সিংহ ও ব্যারাকপুরের বিধায়ক শীলভদ্র দত্তকে দায়িত্ব দেন দ্রুত জট কাটিয়ে জাহাজ কারখানার মুখ উন্মুক্ত করতে। পরদিনই দুই বিধায়ক ও টিটাগড়ের চেয়ারম্যান প্রশান্ত চৌধুরী ওই বস্তিতে গিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন।

শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার জাহাজ কারখানার পথ ও রেল লাইনের প্রায় গা-ঘেঁষে থাকা ঘরগুলির বাসিন্দাদের মধ্যে প্রাথমিক ভাবে ১১টি পরিবারকে বিকল্প বাসস্থানের ব্যবস্থা করল টিটাগড় পুরসভা। তাদের ঠাঁই হয়েছে পাশেই এক কামরার অ্যাসবেস্টসের চালের ঘরে। কিন্তু এই ঘরও স্থায়ী ঠিকানা হবে না ওই পরিবারগুলির। টিটাগড়ের পুর চেয়ারম্যান প্রশান্তবাবু বলেন, ‘‘আপাতত কারখানায় বড় ট্রেলার বা ট্রাক ঢোকা-বেরোনোর জন্য বি টি রোডের উপরে কলিন্স মোড়ের কাছে পথটা প্রশস্ত করা হয়েছে। এর পরে রেল লাইনের ধারে থাকা সবাইকেই সরতে হবে। তাঁদের জন্য আবাসন তৈরির পরিকল্পনা করেছি।’’ স্থানীয় বাসিন্দা অশোক বাঁশফোড়, সুরেন্দ্র যাদবদের কথায়, ‘‘আমরা গরিব। আমাদের ঘর বানিয়ে দিলে অসুবিধা নেই। কিন্তু এত দিন তো শুধু উচ্ছেদের কথা বলেছেন নেতারা। কোথায় থাকব কেউ বলেননি।’’

টিটাগড়ের কলিন্স মোড় থেকে জাহাজ কারখানার মূল গেট পর্যন্ত যে রেল লাইনটি গিয়েছে, তার গায়ে গজিয়ে ওঠা বস্তির বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের বিষয়ে বিকল্প ভাবনার প্রস্তাব পুরসভাকে একাধিক বার দিয়েছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। জায়গা দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে কারখানার তরফে। কিন্তু তাঁদের অভিযোগ, নানা টালবাহানায় বাসিন্দারা সরতে চাননি। পুরসভাও গড়িমসি করেছে। এ দিন পুরসভার এই প্রাথমিক পদক্ষেপ স্বতঃস্ফূর্তভাবে বাসিন্দারা মেনে নেওয়ায় পুর কর্তৃপক্ষ মনে করছেন, পরের ধাপে কাজ শুরু করতে সমস্যা হবে না। টিটাগড় ওয়াগনের ডিরেক্টর সুদীপ্ত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী উদ্যোগী বলে আমরাও এগোতে পারছি। না হলে জাহাজ শিল্প ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে আনার সাহস দেখাতে পারতাম না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE