নির্যাতিতা মহিলা
মহিলাদের যদি কেউ অপমান করেন তা হলে দেখতে পেলে বারবার তার প্রতিবাদ করব। নিজেকে বিপন্ন করে হলেও। মেয়ে হয়ে মেয়েদের অপমান কিছুতেই সহ্য করব না।
রবিবার বিকেলে রাখি বন্ধন উপলক্ষে আমরা সপরিবারে চারটি মোটর বাইকে করে ১২ জন ঘুরতে বেরিয়েছিলাম। আমাদের বাড়ি বারুইপুরে। উত্তরভাগ পার হতেই একটি মোটর বাইকে তিন যুবক আমাদের পিছু নেয়। কিছু দূর যাওয়ার পর থেকেই ওরা আমাদের কটূক্তি করতে শুরু করে। চলন্ত বাইক থেকে আমাদের গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা করছিল। আমার দিদি ও বোনদের গায়ের ওড়না ধরে টানাটানি করছিল। আমি প্রতিবাদ করি। সে সময়ে ওরা সাময়িক ক্ষমা চাইলেও আগে শাসিয়ে যায়, ‘‘সামনে এগোলে কপালে দুঃখ আছে।’’ তখনও বুঝিনি, সামনে আমাদের জন্য কী অপেক্ষা করছে!
রামধারি সেতুর কাছে পৌঁছতেই ২০-২৫ জন আমাদের পথ আটকায়। আমরা ওদের অপমান করেছি, এই অভিযোগে গালিগালাজ করতে থাকে। আমার স্বামী, বাবা, জামাইবাবুকে ধাক্কা দিতে থাকে। প্রতিবাদ করলে আমাকেও কিল, চড়, লাথি মারতে থাকে। আমি গর্ভবতী বললেও কোনও কথা শুনতে চায়নি। আমাকে বাঁচাতে আমার পরিবারের সদস্যেরা এগিয়ে গেলে ওই ছেলের দল লাঠি, রড দিয়ে তাঁদের মারতে থাকে। আমার মায়ের মুখে ফেটে যায়। জামাইবাবুর মাথা ফেটে যায়। আশ্চর্যের বিষয়, স্থানীয় লোকজন কেউ আমাদের সাহায্য করতে এগিয়ে এলেন না। এক সময়ে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। পরে শুনি, কেউ একজন অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে দিয়ে আমাদের সাহায্য করেছিলেন।
কালকের ওই ঘটনা মনে পড়লে এখনও গায়ে কাঁটা দিচ্ছে। আমি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মী। এর আগেও স্কুটিতে চেপে ক্যানিং গিয়েছি। কখনও এমন কিছু ঘটেনি। অপরাধীদের কঠিন শাস্তি চাই। অপরাধীরা ধরা না পড়ায় খারাপ লাগছে।
তবে এরপরেও আমার সামনে এমন ঘটনা ঘটলে প্রতিবাদ করবই। আমি যে ভাবে অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছি, একই ধরনের ঘটনা ঘটলে অন্য মেয়েরাও রুখে দাঁড়াক, এটাই চাই। না হলে ওরা আরও সাহস পাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy