Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Delhi Violence

রক্তাক্ত দিল্লি, সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে প্রতিবাদ

হিন্দুর গামছায় লেগে থাকা মুসলমানের রক্তের ছিটে নিয়ে অণুগল্প লিখেছিলেন বনগাঁ শহরের বাসিন্দা দেবাশিস রায়চৌধুরী। সেটি আবার নতুন করে পোস্ট করেছেন তিনি।

পথে-প্রতিবাদ: দিল্লিতে সাম্প্রতিক হিংসার ঘটনায় প্রতিবাদের ঝড় বইছে দিকে দিকে। পথে নেমে প্রতিবাদ জানালেন বামেরা। শুক্রবার বনগাঁয় ছবিটি তুলেছেন নির্মাল্য প্রামাণিক

পথে-প্রতিবাদ: দিল্লিতে সাম্প্রতিক হিংসার ঘটনায় প্রতিবাদের ঝড় বইছে দিকে দিকে। পথে নেমে প্রতিবাদ জানালেন বামেরা। শুক্রবার বনগাঁয় ছবিটি তুলেছেন নির্মাল্য প্রামাণিক

সীমান্ত মৈত্র
বনগাঁ শেষ আপডেট: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:৫৩
Share: Save:

দিল্লি কি খুব দূর?

সোশ্যাল মিডিয়ায় চোখ রাখলে বোঝা যাবে, নেটিজেনদের আলাপ-আলোচনায় দিল্লির সাম্প্রতিক ঘটনাবলীতে তাঁরা একই সঙ্গে উদ্বিগ্ন, বিরক্ত, হতাশ, ক্ষুব্ধ, ক্রুদ্ধ। দিল্লিবাসীর সঙ্গে একাত্ম বোধ করছেন অনেকেই। সেই সঙ্গে দিল্লিকে সামনে রেখে দেশ জুড়ে বেড়ে চলা সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা তাঁদের বিচলিত করছে। এ ভাবেই দিল্লির কাছাকাছি চলে এসেছে বনগাঁ। কেউ গল্প লিখছেন, কেউ কবিতা, কেউ শুধুমাত্র দু’চার লাইনে নিজেদের ভাব ব্যক্ত করে দিল্লির পাশে থাকার বার্তা দিচ্ছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।

হিন্দুর গামছায় লেগে থাকা মুসলমানের রক্তের ছিটে নিয়ে অণুগল্প লিখেছিলেন বনগাঁ শহরের বাসিন্দা দেবাশিস রায়চৌধুরী। সেটি আবার নতুন করে পোস্ট করেছেন তিনি। যা শেষ বিচারে সম্প্রীতির বার্তাই দেয়, বলে ধর্ম আলাদা হলেও মানুষের রক্তের রং আসলে একই।

দ্বেষ নয়, ভালবাসার বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টাই দেখা যাচ্ছে বেশির ভাগ পোস্টে। কবি বিভাস রায়চৌধুরী দশ মাস আগে নিজের লেখা কবিতা পোস্ট করেছেন। কবিতাটি ইংরেজি ও কয়েকটি ভারতীয় ভাষায় অনূদিত হয়েছে। শেষ ক’টি লাইন, ‘‘হারামিরা ক্ষমতা দেখায় /পথে নামে দেশহারা লোক/বিষণ্ণ মানুষ, ধ্বনি তোলো--- ধ্বংস হোক... রাষ্ট্র ধ্বংস হোক...।’’ লেখাটি দিয়ে বিভাস সঙ্গে লিখেছেন, ‘‘কবিতা লিখে কিছুই হয় না এই মৃত্যু উপত্যকায়।’’ গোবরডাঙা বাসিন্দা ইছাপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অশোক পাল নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, ‘‘এ মৃত্যু উপত্যকাই কি আমার দেশ? এই রক্ত নদী পার হয়েই কি আমাদের যেতে হবে?’’ বনগাঁর স্কুলশিক্ষক, পরিবেশ কর্মী বাসুদেব পাল লিখছেন, ‘‘দেশটা নিয়ে যা চলছে, তা আর সহ্য হচ্ছে না। লজ্জায় মাটিতে মিশে যাব, নাকি আগুন হয়ে উঠব।’’ শান্তনু টিকাদার নামে এক ছাত্র লিখেছেন, ‘‘ভাইয়ে ভাইয়ে লড়াইয়ে সব থেকে বেশি ক্ষতবিক্ষত ও রক্তাত্ব হন মা।’’ নাট্যব্যক্তিত্ব দীপা ব্রহ্ম লিখেছেন, ‘‘ফাগুনের আগুন নিভে গিয়েছে মানুষের চোখের জলে।’’ হাবড়ার এক স্কুলশিক্ষক প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যঙ্গচিত্র পোস্ট করে গুজরাতের সঙ্গে দিল্লির ঘটনার তুলনা করেছেন। কেউ লিখেছেন, ‘‘আমাদের লজ্জা। ভারতবাসী ভারতবাসীকে খুন করছে।’’ অনেকেই আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় উস্কানিমূলক পোস্ট থেকে সর্তক থাকার অনুরোধ জানাচ্ছেন। পোস্ট পাওয়া গেল, ‘‘দিল্লি জ্বলছে। এই মুহূর্তে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আর অস্থিরতা তৈরি করবেন না। তা আপনি ডান-বাম-গেরুয়া যে-ই হোন না কেন।’’

শান্তির বার্তা সমাজমাধ্যমে, সোশ্যাল মিডিয়ায়। কিন্তু সে বার্তা সমাজের কানে পৌঁছলে তো হয়, আক্ষেপ অনেকের!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Delhi Violence Social Media
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE