Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
চ্যালেঞ্জ প্রশাসনের, সচেতনতার পরীক্ষা মানুষের
Railway Administration

নিরাপদ হবে তো যাত্রা, এখনও কাটছে না সংশয়

বনগাঁ প্ল্যাটফর্মের দোকানপাট এ দিন বন্ধই ছিল। হকারেরা জানিয়েছেন, এ দিন রাতে ইউনিয়ন অফিসে তাঁরা বৈঠকে বসবেন।

প্রস্তুতি: কাজ চলছে বসিরহাট স্টেশনে। ছবি: নির্মল বসু

প্রস্তুতি: কাজ চলছে বসিরহাট স্টেশনে। ছবি: নির্মল বসু

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২০ ০২:২৮
Share: Save:

মঙ্গলে উষা, বুধে পা। দীর্ঘ সাড়ে সাত মাস পরে আজ, বুধবারই সকালে ফের ছুটবে লোকাল ট্রেন। কিন্তু সেই মাহেন্দ্রক্ষণ সত্যিই মসৃণ হবে কিনা, তা নিয়ে চিন্তা কাটছে কই! মঙ্গলবার দিনভর দুই ২৪ পরগনার বিভিন্ন স্টেশনের টিকিট কাউন্টারে মান্থলি, কোয়ার্টারলি টিকিটের যাত্রীদের ভিড় আছড়ে পড়েছে। বিকেল পর্যন্ত সে লাইন শেষ হতে দেখা যায়নি। সকাল যদি সারা দিনের পূর্বাভাস হয়, তবে শুধু মান্থলি টিকিটের যাত্রীদের দেখে রেল আধিকারিকেরাও সন্দিগ্ধ, বুধবার সকালে যাত্রীদের ভিড়ে দূরত্ববিধি আদৌ নিয়ন্ত্রণে থাকবে কিনা।

সরকারি ভাবে বুধবার থেকে চালু হওয়ার কথা থাকলেও মঙ্গলবার সকালের দিকে প্রায় সব লাইনেই ‘ট্রায়াল রান’ দিয়েছে বেশ কিছু লোকাল। আচমকা সামনে ট্রেন পেয়ে তাতে চড়ে বসেছেন প্ল্যাটফর্মে বসে-দাঁড়িয়ে থাকা মানুষজন।সকালের দিকে ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ায় ক্যানিং শাখায় বহু মানুষজনই ট্রেনে উঠেছেন। তবে আগে থেকে খবর না থাকায়, এ দিন ট্রেন ছিল যথেষ্ট ফাঁকা। ক্যানিংয়ের বিভিন্ন স্টেশন সাফসুতরো করতে দেখা গিয়েছে।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ দিন ডায়মন্ড হারবার স্টেশনের টিকিট কাউন্টারে মান্থলি টিকিট আপডেট করার ভিড়ও বেড়েছে। টিকিট কাউন্টারের সামনে লাগানো হয়েছে ট্রেনের নতুন টাইম টেবিল। সকাল থেকে লাইন সারানোর কাজে কর্মীদের ব্যস্ত থাকতে দেখা গিয়েছে।

প্রস্তুতি: ঘিরে দেওয়া হচ্ছে বনগাঁ স্টেশন। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

হাসনাবাদ স্টেশনে মঙ্গলবার থেকেই দেখা গেল, রেল পুলিশকে ঘুরতে। হকারদের বারণ করা হয়েছে ট্রেনে উঠতে। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ তাঁরা। মান্থলি টিকিট কাটার দীর্ঘ লাইন পড়েছে হাবড়া স্টেশনেও। নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এখানকার প্ল্যাটফর্মে ইতিমধ্যেই অস্থায়ী দোকানপাট বসেছে। হকারেরা জানিয়েছেন, রেলের তরফে এ দিন দুপুর পর্যন্ত কোনও নির্দেশ আসেনি। ফলে বুধবার তাঁরা দোকান খুলবেন।

বনগাঁ প্ল্যাটফর্মের দোকানপাট এ দিন বন্ধই ছিল। হকারেরা জানিয়েছেন, এ দিন রাতে ইউনিয়ন অফিসে তাঁরা বৈঠকে বসবেন। তারপরেই দোকান খোলা নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। তবে ট্রেনে উঠে জিনিসপত্র ফেরি করেন যে হকারেরা, রেলের সিদ্ধান্তে হতাশ তাঁরা। তাঁদেরই একজন বনগাঁর শ্যামল সাহা। বললেন, “৩০ বছর ধরে ট্রেনে হকারি করছি। বুধবারও ট্রেনে উঠব। কামরায় বেচাকেনা করা না গেলে যে কোনও স্টেশনে নেমে বেচাকেনা করে ফিরে আসব।” বসিরহাটের বিভিন্ন স্টেশন পরিষ্কার করার কাজ হয়েছে এ দিন। বেশ কিছু ট্রেনও চলাচল করে। বিভিন্ন স্টেশনের প্রবেশ ও প্রস্থান পথ একাধিক থাকলে, দু’টি বা চারটি খোলা রেখে বাকি পথগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মান্থলি টিকিটের মেয়াদ থাকলেও যাঁরা তা ব্যবহার করতে পারেননি, তাঁরা এ দিন ফের সময়সীমা বাড়িয়ে নেন। তাঁদের কয়েকজন বলেন, ‘‘চাকরি রাখতে গাদা গাদা টাকা খরচ করে কলকাতা পৌঁছতে হচ্ছিল। এ বার কিছুটা সুরাহা হবে।’’

প্ল্যাটফর্মে দোকান খোলা নিয়ে হকার্স ইউনিয়নের পক্ষ থেকে কিছু জায়গায় আলোচনাসভা হয়েছে। বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে হকারদের জটলা বেড়েছে। রেল সুরক্ষা বাহিনীর (আরপিএফ) জওয়ানেরা বিক্রেতাদের সাবধান করেছেন। তারপরেও বিভিন্ন স্টেশনে দোকান খুলেছে। বুধবার সকাল থেকে বিশাল পরীক্ষায় বসতে চলেছেন তাঁরা, জানিয়েছেন রেল পুলিশের কর্তারা। কোথাও কোথাও সঙ্গে স্থানীয় থানার পুলিশকেও রাখা হচ্ছে বলে রেলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE