Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

সিবিআই সেজে ডাকাতি বসিরহাটে

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার প্রায় দু’ঘণ্টা পর পুলিশকে সব জানানো হলে তদন্তে নামেন বসিরহাটের এসডিপিও এবং আইসি। তল্লাশি চলছে। এখনও কোনও হদিস মেলেনি ওই দুষ্কৃতী দলের।

ডাকাতির-পরে: নিমতলায়। নিজস্ব চিত্র

ডাকাতির-পরে: নিমতলায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদাতা
বসিরহাট শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৭ ০৩:০২
Share: Save:

ঠিক যেন বলিউড ফিল্মের দৃশ্য!

সিবিআই পরিচয় দিয়ে ডাকাতির ঘটনা ঘটল এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর বাড়িতে। বৃহস্পতিবার রাতে বসিরহাট থানার কাছেই ইটিন্ডা রাস্তার পাশে নিমতলায় ঘটনাটি ঘটে। অভিযোগ, কয়েক লক্ষ টাকা ও কয়েক ভরি সোনা নিয়ে চম্পট দেয় সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা। তাও একেবারে বলিউডি কায়দায়। এই ঘটনার সঙ্গে অনেকটাই মিলে গিয়েছে হিন্দি ছবি ‘স্পেশাল ২৬’-এর প্লট।

ওই সিনেমার মতোই এখানেও সিবিআই অফিসার সেজে স্বর্ণ ব্যবসায়ী শঙ্করপ্রসাদ দত্তের দোকানে এসেছিল ডাকাত দল। সে সময় দোকানে ছিলেন শঙ্করবাবুর ছেলে তরুণবাবু। নকল পরিচয়পত্র দেখিয়ে তাঁকে বাড়ি নিয়ে যেতে বলে ওই ডাকাত দল। এরপরেই চলে লুঠপাট।

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার প্রায় দু’ঘণ্টা পর পুলিশকে সব জানানো হলে তদন্তে নামেন বসিরহাটের এসডিপিও এবং আইসি। তল্লাশি চলছে। এখনও কোনও হদিস মেলেনি ওই দুষ্কৃতী দলের।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ গলায় সিবিআই লেখা পরিচয়পত্র ঝুলিয়ে ৪জন দোকানে ঢুকে তরুণবাবুকে বলে, ‘‘বাড়িতে কয়েক কিলো সোনা আছে। যা রাখা বেআইনি। যদি বার করে না দেওয়া হয়। তাহলে গ্রেফতার করা হবে শঙ্করবাবুকে।’’ বাড়িতে নিয়ে যেতেই ডাকাত দল বাড়িতে ঢুকে দরজা দিয়ে দেয়। বাড়িতে ছিলেন শঙ্করবাবু, তরুণবাবু ও তাঁদের হিসাবরক্ষক জয়ন্ত মিত্র। শঙ্করবাবুর স্ত্রী ও বৌমা বাড়ি ছিলেন না। এরপরেই আলমারি খুলে দিতে বলা হয় শঙ্করবাবুকে।

শঙ্করবাবু পুলিশকে জানান, প্রায় এক ঘণ্টা পর ওই দুষ্কৃতীরা শঙ্করবাবুর কাছ থেকে একটি ব্যাগ চায়। তাতে টাকা ও সোনা ভরে। এরপর তরুণবাবুকে বলে, ‘‘আপনাকে আমাদের সঙ্গে বসিরহাট থানায় যেতে হবে।’’ সে সময় তরুণবাবুর মা ফিরে আসেন। তিনি ছেলেকে না নিয়ে যাওয়ার জন্য কান্নাকাটি করেন। তখন দুষ্কৃতীরা শঙ্করবাবু ও তাঁর স্ত্রীকে বাড়িতে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে তালা দিয়ে দেয়।

তরুণবাবু বলেন, ‘‘গাড়িতে ওঠার পর আমাকে বলা হয় বসিরহাট থানা নয়, সিজিও কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এরপর আমাকে মালঞ্চের সামনে ছেড়ে দিয়ে চলে যায়।’’

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার প্রায় দু’ঘণ্টা পর থানায় অভিযোগ করা হয়। এরপর থেকেই তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে ঘটনায় রহস্য জানা বেঁধেছে। যে সময় ঘটনাটি ঘটেছে সে সময় জমজমাট থাকে ওই এলাকা। এলাকার অন্য সোনার দোকানগুলি এই ঘটনার সম্পর্কে কিছু জানে না বলে পুলিশকে জানিয়েছে। শুধু তাই নয়, তরুণবাবুকে যে ওই দুষ্কৃতীদল নিয়ে যাচ্ছে তাও কেউ দেখেননি।

পুলিশ জানিয়েছে, বিভিন্ন সিসি টিভি ফুটেজ পরীক্ষা করা হচ্ছে। রহস্যের কিনারা শীঘ্রই মিলবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE