এই স্কুলেই পড়ে সাবিনা। — নিজস্ব চিত্র
২০১৬ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল বেরনোর পরেই বিয়ে হয়েছিল হাবড়া রাধারানি গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী সাবিনা খাতুনের। বয়স তখন তার ষোলো। কিন্তু সে খবর তাঁদের কাছে ছিল না বলে মানছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
হাবড়ার এই স্কুলটি নাবালিকা বিয়ে আটকানোর ক্ষেত্রে গত কয়েক বছরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। বেশ কয়েকটি নাবালিকা বিয়ে আটকানোও হয়েছে স্কুলের উদ্যোগে। পড়ুয়াদের নিয়ে একটি দল আছে, যারা এ ব্যাপারে নজরদারি চালায়। সাবিনার ঘটনা যে এই স্কুলের ক্ষেত্রে নেহাতই ব্যতিক্রম, তা মনে করছেন স্কুলের অভিভাবক, শিক্ষিকারা। কিন্তু যে স্কুলে এত নজরদারি, সেখানেই যদি সকলের অলক্ষ্যে নাবালিকার বিয়ে হয়ে যেতে পারে, তা হলে প্রত্যন্ত গ্রামের স্কুলে কী পরিস্থিতি হতে পারে, তা সহজেই অনুমেয়।
সাবিনা যখন গত বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার টেস্ট পরীক্ষা দেয়নি, তখন স্কুলের তরফে খোঁজ-খবর করা হয়েছিল। তখনই বিয়ের বিষয়টি তাঁরা জানতে পারেন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা প্রমিতা দাস বলেন, ‘‘স্কুলের তরফে খবর পেলেই ছাত্রীদের বিয়ে বন্ধ করতে পদক্ষেপ করা হয়। ছাত্রীদেরও বলা হয়, বাড়ি থেকে জোর করে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হলে তারা যেন স্কুলে এসে জানায়।’’
অতীতে এই স্কুলে নাবালিকা ছাত্রীদের বিয়ের ঘটনা ঘটেছে। তবে কয়েক বছর হল স্কুল কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসেছেন। শিক্ষিকা অমৃতা মুখোপাধ্যায় নিজে খোঁজ-খবর নিয়ে গত দেড় বছরে পুলিশ-প্রশাসনের সাহায্যে কয়েকজন ছাত্রীর বিয়ে বন্ধ করেছেন। স্কুলের কোনও ছাত্রীর বিয়ে হচ্ছে কিনা, তা জানতে পড়ুয়াদের নিয়ে তিনি দল গঠন করেছেন।
জেলাশাসক অন্তরা আচার্য বলেন, ‘‘ছাত্রী ও শিক্ষিকারা যাতে নাবালিকা বিয়ের বিষয়ে আরও সচেতন হন, সে জন্য স্কুলে স্কুলে নিয়মিত কর্মশালা করা হয়।’’
তা সত্ত্বেও ফাঁকফোঁকর গলে কিছু নাবালিকা বিয়ে যে হয়েই যাচ্ছে, সাবিনার ঘটনা তা-ই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy