এখানেই চলে গুলি। কাঁকিনাড়ায়। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়
রবিবার সকালের ভরা বাজার। আচমকায় গুলির শব্দে কেঁপে উঠল বাজার। দেখা গেল, বাজারের শৌচাগারের সামনে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন একজন। সেখান থেকে ছুটে পালানোর চেষ্টা করছেন আর এক জন। হাতে তার আগ্নেয়াস্ত্র। ঠিক যেন সিনেমা। কাঁকিনাড়ার রথতলা বাজারের এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়।
কয়েকজন তাড়া করে ধরে ফেলেন সশস্ত্র ওই যুবককে। শুরু হয় গণধোলাই। জনতার মারে জখম এবং গুলিবিদ্ধ দু’জনেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গুলিবিদ্ধের নাম মহম্মদ জাহাঙ্গির। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত যুবকের নাম শঙ্কর। স্থানীয় এলাকার বাসিন্দা সে। সে গলাকাটা শঙ্কর নামেই এলাকায় পরিচিত।
জাহাঙ্গির কাঁকিনাড়া এলাকারই বাসিন্দা। রথতলার খুবলাল সাউ বাজারে তাঁর খাসির মাংসের দোকান রয়েছে। ভাটপাড়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, জাহাঙ্গির বা শঙ্কর কেউই কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। ফলে কী কারণে এমন ঘটনা ঘটল সেই বিষয়ে রাত পর্যন্ত কিছু জানাতে পারছে না তারা। পরিবারের লোকেরাও এ বিষয়ে কিছু বলতে পারেনি। তবে ভরা বাজারে এমন ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জাহাঙ্গিরদের দীর্ঘদিনের মাংসের ব্যবসা। ভাটপাড়া বাজারে তাঁর দাদা মহম্মদ আলমগিরের মাংসের দোকান রয়েছে।
এ দিন ঘটনাটি ঘটে সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দোকান থেকে বেরিয়ে বাজারের শৌচালয়ে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে বেরনোর পরেই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। গুলি লাগে তাঁর কানের পাশে। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি একটি রিভলভার থেকে শঙ্করই গুলি চালিয়েছিল।
পালানোর চেষ্টা করলে জনতা তাড়া করে শঙ্করকে ধরে ফেলে। তার পরেই শুরু হয় মার। জনতার মারে জ্ঞান হারায় সে। পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখান থেকে তাকে কল্যাণী জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
জাহাঙ্গিরকেও প্রথমে ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অস্ত্রোপচার হলেও বিপদ কাটেনি বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
কেন তাঁকে গুলি করে খুনের চেষ্টা হল? পুলিশ এই বিষয়ে কিছু বলতে পারেনি। এমনকী, তাঁর পরিবারের লোকেরাও এই বিষয়ে কিছউ জানাতে পারেননি। জাহাঙ্গিরের দাদা আলমগির বলেন, ‘‘কেন ওকে গুলি করল, তা আমরা বুঝতে পারছি না। কারওর সঙ্গে ভাইয়ের শত্রুতা আছে বলে জানি না।’’ এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ আছে কি? আলমগিরের জবাব, ‘‘আমরা ব্যবসা করি। কোনও রকম রাজনীতির সঙ্গে আমরা যুক্ত নয়। আমার আবেদন, এতে যেন রাজনীতি না ঢোকে।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনার পর জাহাঙ্গিরের পরিবারের লোকেরা সকলকে শান্ত থাকার আবেদন জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy