Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন বৃদ্ধা

মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির বা‌লিয়া গ্রামে থাকেন দেবু। দুই ছেলে ও তিন মেয়ে। স্বামী বেশ কয়েক বছর আগে মারা গিয়েছেন। বছর দু’য়েক আগে শিলিগুড়িতে বড় মেয়ের কাছে যাবেন বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন বৃদ্ধা। পথ ভুলে যান।

শুশ্রূষার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে দেবুকে। নিজস্ব চিত্র

শুশ্রূষার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে দেবুকে। নিজস্ব চিত্র

দিলীপ নস্কর
মন্দিরবাজার শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৫২
Share: Save:

রাস্তার ধারে বসে ঠান্ডায় কাঁপছিলেন বৃদ্ধা। দিনের পর দিন অনাহারে থেকে কথা বলার শক্তিটুকুও হারিয়েছেন।

পুলিশের নজরে আসায় বৃদ্ধাকে সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়। দিন চারেক শুশ্রূষার পরে রবিরার বিকেলে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ছিয়াত্তর বছরের দেবু বেওয়াকে। মন্দিরবাজার পুলিশের এ হেন উদ্যোগে বছর দু’য়েক পরে মাকে ফিরে উচ্ছ্বসিত পরিবার।

মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির বা‌লিয়া গ্রামে থাকেন দেবু। দুই ছেলে ও তিন মেয়ে। স্বামী বেশ কয়েক বছর আগে মারা গিয়েছেন। বছর দু’য়েক আগে শিলিগুড়িতে বড় মেয়ের কাছে যাবেন বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন বৃদ্ধা। পথ ভুলে যান। দুই ছেলে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও মাকে না পেয়ে সাগরদিঘি থানায় ডায়েরি করেন।

এ দিকে দিন চারেক আগে মন্দিরবাজার থানার লক্ষ্মীকান্তপুর স্টেশনের কাছে বিজয়গঞ্জ বাজারে দেবুকে পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় মানুষজন। পোশাক-আশাক দেখে মনে হয়েছিল, মহিলা আর যা-ই হোন, পথের ভিখারি নন।

খবর দেওয়া হয় থানায়। ওসি বাপি রায় আসেন। বৃদ্ধাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যান বাজারের পাশে পুলিশ ক্যাম্পে। খিদেয় কথা বলার শক্তি ছিল না দেবুর। চিকিৎসককে ডাকা হয়। নতুন কাপড়, চাদর কিনে দেওয়া হয় বৃদ্ধাকে। তারপর থেকে মহিলা পুলিশ কর্মীরা তাঁকে নিয়মিত শুশ্রূষা করেছেন। কয়েক দিনের মধ্যে কিছুটা সুস্থ হয়ে ওঠেন দেবু।

পুলিশ তাঁর কাছে বাড়ির ঠিকানা জানতে চায়। তিনি জানান, মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি থানার বালিয়া গ্রামে বাড়ি। ছেলেমেয়েদের নামও বলেন বৃদ্ধা।

সাগরদিঘি থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে মন্দিরবাজারের পুলিশ। সেখানকার পুলিশ খোঁজ নেয় বাড়িতে।

রবিবার মন্দিরবাজার থানায় বৃদ্ধাকে নিতে এসেছিলেন নাতজামাই কুরবান শেখ ও নাতি আতাউর শেখ। তাঁরা জানান, বৃদ্ধার দুই ছেলে দিনমজুর। ছোট ছেলের কাছে থাকতেন মা। আর কখনও ঠাকুমাকে চোখের আড়াল হতে দেব না, জানিয়ে গিয়েছে নাতি। পুলিশকে সাধুবাদ জানিয়েছেন দেবুর পরিবারের লোকজন।

বাপিবাবু বলেন, ‘‘ওঁকে বাড়ি ফেরাতে পেরে আমরা সকলেই খুব খুশি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE