বাজেয়াপ্ত: ধরা পড়ার পরে ট্রাক থেকে নামিয়ে আনা হচ্ছে ছোট ইলিশ। ছবি: দিলীপ নস্কর।
পাইকারি বাজারে নিলাম করার জন্য রাখা হয়েছে স্তূপ করা ছোট ইলিশ। কিন্তু তা কিনতে এলেন না কোনও মাছ ব্যবসায়ী। কারণ ছোট ইলিশ বাজারে না আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। শেষ পর্যন্ত ওই ইলিশ পুঁতে ফেলা হল মাটিতে। সোমবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে কাকদ্বীপ বন্দরে।
সমুদ্র থেকে ছোট ইলিশ ধরা আইনত নিষেধ থাকলেও এক শ্রেণির ট্রলি মালিক ছোট মাছ ধরে সোজা পাঠাতেন পাইকারি বাজারে। ওই মাছ খুচরো বাজারে বিকোতও দেদার। মৎস্যজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এ ভাবে ছোট মাছ কেউ ধরলে তার বেচাকেনা হবে না।
ঘটলও তাই। সোমবার দুপুরের প্রায় এক টন ছোট ইলিশের একটি গাড়ি পুলিশ আটক করার পর ওই মাছ কেনার জন্য কোনও ক্রেতাই হাজির হননি। সেই মাছ পরে কাকদ্বীপ বন্দরে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মাছভর্তি গাড়ি আটক করা হয়েছে এবং সমস্ত মাছ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
মৎস্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ছোট ফাঁসের জাল পেতে ছোট ইলিশ ধরা কোনও ভাবেই বন্ধ করা যাচ্ছিল না। প্রায়ই চোরাগোপ্তা পথে ছোট ইলিশ (লম্বায় ২৩ সেন্টিমিটারের কম) ধরে বাজারে চালান করা হত। এটা বন্ধ করতে ‘কাকদ্বীপ মৎস্যজীবী কল্যাণ সমিতি’ প্রশাসনিক বৈঠকে সমস্ত ট্রলি মালিকদের জানিয়ে দেয়, ওই মাছ বাজারে আনলে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবং ওই মাছ বাজারে কেউ কিনবেও না।
এ দিন দুপুর দেড়টা নাগাদ নামখানা ঘাটে এফবি রূপসা নামে ট্রলিটি প্রায় ১ টন ছোট ইলিশ ধরে আনে। তা পাইকারি বাজারে বিক্রির জন্য ম্যাটাডরে করে ডায়মন্ড হারবার পাইকারি বাজার নগেন্দ্রবাজারে পাঠানোও হচ্ছিল। হারউড কোস্টাল থানা এলাকায় অক্ষয়নগর মোড়ের কাছে পৌঁছলে মাছবোঝাই গাড়িটিকে টহলদার পুলিশ আটকায়। খবর যায় মৎস্য দফতরে ও স্থানীয় মৎস্য ইউনিয়নের কাছে। গাড়ি নিয়ে যাওয়া হয় কাকদ্বীপ মৎস্য বন্দরে। সেখানে মাছের নিলাম করলেও কোনও বিক্রেতা তা কেনেননি।
পরে প্রশাসন থেকে সমস্ত মাছ মাটি পুঁতে ফেলা হয়।কাকদ্বীপ মৎস্যজীবী কল্যাণ সমিতির পক্ষে বিজন মাইতি ও সতীনাথ পাত্র বলেন, ‘‘ছোট মাছ ধরা আটকাতে আমরা বদ্ধপরিকর। কিন্তু এক শ্রেণির অসাধু ট্রলি মালিক ছোট ফাঁসের জাল ব্যবহার করে এই মাছ ধরছে।’’ ডায়মন্ড হারবার সহ মৎস্য অধিকর্তা সুরজিৎ বাগ মৎস্যজীবী ইউনিয়নের কাজের প্রশংসা করে বলেন, ‘‘মাছ না কিনলে আর কেউ চুরি করেও ধরবে না। ইউনিয়ন শাস্তির রাস্তাটা খুব ভাল ভেবেছে। যে ট্রলিটি ছোট মাছ ধরে এনেছে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy