Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মাকে খুন, ধৃত ছেলে

তদন্তে নেমে হাসনাবাদ থানার পুলিশ রবিবার সকালে খুনের অভিযোগে সরস্বতীর ছেলে সুমন দাসকে গ্রেফতার করে।

আদালতের-পথে: সুমন দাস। —নিজস্ব চিত্র।

আদালতের-পথে: সুমন দাস। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
বসিরহাট শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৯ ০৩:২৩
Share: Save:

সরস্বতী দাসকে খুনের অভিযোগে তাঁর ছেলেকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এ বিষয়ে বিজেপির বক্তব্য, তাদের নেত্রীকে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা খুন করেছে।

তদন্তে নেমে হাসনাবাদ থানার পুলিশ রবিবার সকালে খুনের অভিযোগে সরস্বতীর ছেলে সুমন দাসকে গ্রেফতার করে। পুলিশের দাবি, জেরার মুখে সুমন নিজের অপরাধ স্বীকার করেছে। রবিবার তাকে বসিরহাট আদালতে তোলা হলে বিচারক ৫ দিন পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।

১৩ জুন বৃহস্পতিবার রাতে হাসনাবাদ থানার আমলানি পঞ্চায়েতের তকিপুর গ্রামে কাঠগোলা পাড়ায় রহস্যজনক ভাবে খুন হন সরস্বতী দাস (‌৩৭)‌। তাঁকে বাড়ির উঠানে খুন করে ফেলে রাখা হয়।

ঘটনার পরে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য ও জেলা সভাপতি গণেশ ঘোষ বসিরহাট জেলা হাসপাতালে গিয়ে এবং ভারতী ঘোষ সরস্বতীর বাড়িতে গিয়ে তাঁর মৃত্যুর জন্য স্পষ্টতই তৃণমূলকে দায়ী করেন। শুধু তাই নয়, সরস্বতীর দেহ দলীয় পতাকায় ঢেকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে স্লোগান তুলে মিছিলও করা হয়। লকেট চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে কলকাতায় হয় মোমবাতি মিছিলও। অবশ্য সুমনকে গ্রেফতারের প্রসঙ্গে বিজেপির জেলা সভাপতি গণেশ ঘোষ বলেন, ‘‘পুলিশের ভূমিকায় আমরা সন্তুষ্ট নই।’’

এ দিন পুলিশ জানায়, স্বামী শুভঙ্কর দাসের সুদের কারবার ইদানীং সরস্বতীই সামলাতেন। সেই টাকা নিয়েই মায়ের সঙ্গে ঝামেলা হয় সুমনের। পাশাপাশি, বিভিন্ন লোকের সঙ্গে মায়ের মেলামেশাও সে মেনে নিতে পারছিল না। ঘটনার সন্ধ্যায় এ সব বিষয় নিয়েই মায়ের সঙ্গে বচসা বাধে ছেলের। অভিযোগ, সে দিন উঠোন দিয়ে সরস্বতী যখন বাথরুমের দিকে যাচ্ছিলেন সে সময়ে সুমন মাকে লাথি মারে। মা পড়ে যেতেই হাতের সামনে পড়ে থাকা একটা কাঠ দিয়ে মায়ের মাথায় মারে সে। রক্তাক্ত মাকে ফেলে সে হাসনাবাদে পালিয়ে যায়। মায়ের মৃত্যু পরে অবশ্য সুমনের দাবি ছিল, রাজনৈতিক কারণেই খুন হতে হয়েছে মাকে।

পুলিশ জানায়, ঘটনার দিন ছেলের হাতে মার খেয়ে দীর্ঘক্ষণ উঠোনে পড়েছিলেন সরস্বতী। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই মৃত্যু হয় তাঁর। মৃত্যুর পরের ঘটনাক্রম থেকে বিন্দুমাত্র সন্দেহ করা যায়নি যে, এর সঙ্গে কোনও ভাবে সুমন যুক্ত থাকতে পারে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার পরেই সব কিছু স্পষ্ট হয়।

স্ত্রীর মৃতদেহ বিজেপি দখল করায় স্বামী শুভঙ্কর দাস বলেন, ‘‘সরস্বতী কবে বিজেপি হল জানি না। তবে আমার এক ‘ধর্ম ভাই’ বিজেপি করে। সে-ই সরস্বতীকে সঙ্গে করে এখানে-ওখানে নিয়ে যেত।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমার সুদের কারবার আছে। বেশ কয়েক লক্ষ টাকা সুদে খাটে। সরস্বতী কারবার দেখাশোনা করত। ঘটনার রাতে আমি বাজারে গিয়েছিলাম। রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ ফিরে দেখি, শৌচালয়ের পাশে সরস্বতী রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। তখন ভেবেছিলাম টাকা-সংক্রান্ত কোনও গোলমালের জেরে কারও হাতে মার খেয়ে এই অবস্থা ওর। লোকজন ডেকে ওকে টাকি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।’’

হাসনাবাদ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি এসকেন্দার গাজি বলেন, ‘‘প্রথম থেকেই আমরা বলে আসছি সরস্বতীর মৃত্যুর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। তৃণমূলকে ছোট করতে এবং এলাকার শান্তি নষ্ট করতেই বিজেপির এই কাণ্ড। সরস্বতীর ছেলেকে আড়াল করার জন্যই বিজেপি জেনে-শুনে মিথ্যা বলেছে।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder crime Hasnabad
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE