Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে গরিবদের চিকিৎসার টাকা দিল খুদেরা

এমন পরিস্থিতিতে জ্বরে আক্রান্তদের চিকিৎসা ও মশা মারার কাজে এগিয়ে এল গাইঘাটা ব্লকের একটি প্রাথমিক স্কুল।

হাতে-হাতে: টাকা তুলে দেওয়া হচ্ছে। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

হাতে-হাতে: টাকা তুলে দেওয়া হচ্ছে। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

সীমান্ত মৈত্র
গাইঘাটা শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৭ ০১:১৪
Share: Save:

এলাকার বহু মানুষ জ্বরে আক্রান্ত। পাঁচজন ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছেন। অনেকেই টাকার অভাবে ঠিক মতো চিকিৎসাও করাতে পারছেন না।

এমন পরিস্থিতিতে জ্বরে আক্রান্তদের চিকিৎসা ও মশা মারার কাজে এগিয়ে এল গাইঘাটা ব্লকের একটি প্রাথমিক স্কুল। পাঁচপোতা নরেন্দ্র শিশুতীর্থ নামে ওই স্কুলের কয়েক’শো খুদে পড়ুয়ারা নিজেদের টিফিনের খরচ বাঁচিয়ে টাকা তুলে দেয় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের হাতে। বুধবার সকালে পড়ুয়াদের নিয়ে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা বনগাঁ মহকুমাশাসকের দফতরে আসেন। তাঁরা মহকুমাশাসক কাকলি মুখোপাধ্যায়ের হাতে দেড় হাজার টাকার একটি ড্রাফ তুলে দেন। পড়ুয়াদের ইচ্ছা, যাঁরা চিকিৎসা করাতে পারছেন না তাঁদের হাতে এই টাকা তুলে দেওয়া হোক। পাশাপাশি এলাকায় মশা মারার আরও বেশি করে ব্যবস্থা করা হোক।

স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ফাল্গুনী সরকার ও স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক পদ্মাবতী বিশ্বাস বলেন, ‘‘শিশুদের সামজিক দায়বদ্ধতা শেখাতে আমাদের এই পদক্ষেপ। তাদের সাধ্য সীমিত। তবু যতটা পেরেছে, করেছে।’’

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় ৪০০ জন। নার্সারি থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলটি। স্কুলের পড়ুয়া অরিত্র মল্লিক, অঙ্কিতা ঘোষ, অঙ্কন রায়, অংশুমান সরকারেরা জানায়, আমাদের এলাকায় অনেক মানুষ জ্বরে আক্রান্ত। অনেক গরিব মানুষ রয়েছেন। তাঁদের চিকিৎসার কথা ভেবে আমরা সকলে টাকা দিয়েছি। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুলে লেখাপড়ার পাশাপাশি অনেকে টিউশনও নেয়। স্কুল ছুটির পর সেই টিউশন দেওয়া হয়। তাই অভিভাবকেরা তাদের দুপুরে টিফিন খাওয়ার জন্য টাকাও দিয়ে দেন। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের ওই টিফিনের টাকা নিয়ে আশপাশের দোকান থেকে তাদের জন্য খাবার কিনে এনে দেন। প্রধান শিক্ষিকা বলেন, ‘‘অনেক পড়ুয়া আমাদের বলেছে আমরা টিফিন কম খেয়ে জ্বরে আক্রান্তদের চিকিৎসা জন্য টাকা দেব।’’ অভিভাবকেরাও পড়ুয়াদের ওই কাজে পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। তাঁদের কথায়, ‘‘জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চারপাশে মানুষও মারা যাচ্ছেন। অনেকে ঠিকমতো চিকিৎসাও করাতে পারছেন না। তাঁদের চিকিৎসার জন্য সামান্য কিছু টাকা দিয়েছি মাত্র।’’

পড়ুয়া ও স্কুল কর্তৃপক্ষের ভূমিকায় গর্বিত মহকুমাশাসকও । তিনি বলেন, ‘‘ছোট ছোট পড়ুয়াদের এমন মানবিক কাজে আমি গর্বিত। আমরা জেলাশাসককে টাকাটি পাঠাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Student Relief
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE