Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Arsenic

নতুন বছরেই আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জল পেতে চলেছে ভাঙড়

সূত্রের খবর, নিউটাউনের অ্যাকশন এরিয়া ১-এ হিডকোর ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট আছে। সেখান থেকেই ভূগর্ভস্থ পাইপ লাইনের মাধ্যমে জল সরবরাহ হবে শহরতলির ওই তিন ব্লকে।

নতুন আশা: শুরু হয়ে গিয়েছে পাইপলাইনের কাজ। — নিজস্ব চিত্র।

নতুন আশা: শুরু হয়ে গিয়েছে পাইপলাইনের কাজ। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভাঙড় শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২১ ০৩:২২
Share: Save:

নতুন বছরেই আর্সেনিক মুক্ত পরিস্রুত পানীয় জল পেতে চলেছে ভাঙড়। এমনটাই দাবি প্রশাসনের কর্তাদের। শুধু ভাঙড় নয়, পাশের রাজারহাট ও হাড়োয়া ব্লক মিলিয়ে মোট ২৩টি পঞ্চায়েত এলাকার আট লক্ষের বেশি বাসিন্দা নলবাহিত এই পরিশ্রুত পানীয় জল পাবেন। কর্তাদের দাবি, এত দিন কলকাতা বা বিধাননগর পুরনিগমের বাসিন্দারা যে গুণগত মানের জল পেয়ে আসছেন, সেটাই এবার পাবেন গ্রামের মানুষ। এর জন্য ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে কাজ হচ্ছে ওই তিনটি ব্লকে। ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিশ্বজিৎ মণ্ডল বলেন, “জলের পাইপ লাইন, ট্যাঙ্ক তৈরির কাজ প্রায় শেষ। বাড়ি বাড়ি সমীক্ষার কাজ চলছে। করোনা, লকডাউনের প্রভাব না থাকলে এত দিন এই প্রকল্পের উদ্বোধন হয়ে যেত। এ সবের জন্য কাজ কয়েক মাস পিছিয়ে গিয়েছে।”

জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর সূত্রের খবর, নিউটাউনের অ্যাকশন এরিয়া ১-এ হিডকোর ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট আছে। সেখান থেকেই ভূগর্ভস্থ পাইপ লাইনের মাধ্যমে জল সরবরাহ হবে শহরতলির ওই তিন ব্লকে। বছর তিনেক আগে নতুন উপনগরী রাজারহাটে পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দিতে এ ভাবেই পাইপ লাইনের মাধ্যমে গঙ্গা থেকে জল আনার ব্যবস্থা করেছিল হিডকো। এর জন্য বাগবাজার থেকে শ্যামবাজার, উল্টোডাঙ্গা, কেষ্টপুর, যাত্রাগাছি হয়ে বাগজোলা খাল বরাবর পাইপ বসিয়েছে হিডকো। জানা গিয়েছে সেই পাইপে অতিরিক্ত জল সরবরাহ করা হবে ওই ২৩টি পঞ্চায়েত এলাকায়। নিউটাউনের ওই ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট থেকে এক হাজার মিটার ব্যাসের পাইপের সাহায্যে ভাঙড় ২ ব্লকের ভূগর্ভস্থ জলাধারে জল আসবে। সেখান থেকে আবার সাতশো মিটার ব্যাসের পাইপে জল চলে যাবে হাড়োয়া ব্লকে। অন্যদিকে, নিউটাউন থেকে সরাসরি চারশো মিটার ব্যাসের পাইপে জল চলে যাবে হাড়োয়া ব্লকে। এই প্রকল্পে ভাঙড় ব্লকে মোট দু’টি ভূগর্ভস্থ জলাধার এবং ১৭টি ওভারহেড জলাধার তৈরি করা হবে। ইতিমধ্যেই ৫টি ওভারহেড জলাধার তৈরি হয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন গ্রামে সব মিলিয়ে ৬২ শতাংশ পাইপ লাইন পাতার কাজও শেষ হয়ে গিয়েছে। এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাঙ্কের সহায়তায় এই প্রকল্পের শুরুতে ৬০০ কোটি বরাদ্দ করা হয়েছিল। পরে তা বাড়িয়ে ৬৫০কোটি টাকা করা হয়েছে। প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়তকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, জল সরবরাহের জন্য একটি করে কাস্টমার কেয়ার সেন্টার তৈরির জন্য। জল পাওয়ার জন্য বাড়িতে কল বসাতে সাধারণ মানুষকে ওই কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে যোগাযোগ করতে হবে। জল বিনামূল্যে পাওয়া যাবে নাকি কিছু বিনিময় মূল্য দিতে হবে তা অবশ্য এখনও ঠিক হয়নি।

ভাঙড় ২-এর বিডিও কার্তিকচন্দ্র রায় বলেন, “এই প্রকল্প সম্পূর্ণ হলে ভাঙড়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়ি মিলিয়ে ৭১ হাজারটি বাড়ি প্রতিদিন তিন বার করে পানীয় জল পাবে। এতে উপকৃত হবেন ভাঙড়ের সাড়ে তিন লক্ষের বেশি সাধারণ মানুষ।” এই খবরে স্বভাবতই খুশি ওই তিনটি ব্লকের সাধারণ মানুষ। উচ্ছ্বাস গোপণ করেননি ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি আরাবুল ইসলামও। তিনি বলেন, “আর্সেনিকে জেরবার ভাঙড়ের সাধারণ মানুষ। এবার আমরা এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Arsenic Bhangar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE