লেখা হচ্ছে মুচলেকা। নিজস্ব চিত্র।
বছর বারোর মেয়েটি চায় পড়াশোনা করতে। এখনই বিয়েতে সে নারাজ। কিন্তু পরিবার সে কথা শোনেনি। দু’দিন বাদেই ছিল বিয়ে। শেষ হাসি অবশ্য হাসল ছাত্রীটিই। তার পুরনো স্কুলের প্রধান শিক্ষকের তৎপরতায় বন্ধ হল বিয়ে।
বুধবার বাড়িতে পুলিশ প্রশাসনের কর্তাদের দেখে আশার আলো দেখে দেঙ্গার পশ্চিম চ্যাংদানা গ্রামের ওই নাবালিকা। পরিবারের লোকজনকে বুঝিয়ে পুলিশ প্রশাসনের কর্তারা যখন বিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন, তখন ‘মাস্টারমশাইকে’ প্রণাম করার জন্য খুঁজছিল ছাত্রীটি। কিন্তু ততক্ষণে সকলের চোখ এড়িয়ে ওই বাড়ি ছেড়েছেন মাস্টারমশাই। ছাত্রীটি জানায়, সে বিয়ে করতে চায় না। পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চায়।
বিডিও মানসকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘এত প্রচারের পরেও পুরোপুরি সচেতনতা বাড়ছে না। এক বছরের মধ্যে এই নিয়ে চারটি বিয়ে রুখলাম আমরা। এই মাস্টারমশাইয়ের মতো মানুষ এগিয়ে আসেন বলেই রক্ষে।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ছাত্রীটি বর্তমানে দেগঙ্গা আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। প্রাথমিকের পাঠ নিয়েছিল উত্তর কালিয়ানি দেবেন্দ্রলাল মৈত্র স্মৃতি প্রাথমিক স্কুলে। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক দুলাল মিস্ত্রি এ দিন স্কুলে গিয়ে ছাত্রীদের মুখেই প্রাক্তন ছাত্রীর বিয়ের কথা শোনেন। তা বন্ধ করার জন্য তখনই ছোটেন দেগঙ্গা থানায়। তার পরে বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিস এবং ব্লক অফিসেও। সব কথা শোনার পরে বিডিও-র নির্দেশে এক প্রতিনিধি দল হাজির হয় পশ্চিম চ্যাংদানা গ্রামে মেয়েটির বাড়িতে। যায় পুলিশও।
মেয়েটির বাবা জানান, তাঁর বাবা নাতনির বিয়ে দেখে যেতে চেয়েছিলেন। বাবার শরীর খারাপ হওয়ায় হঠাৎ করেই এই বিয়ের আয়োজন। পাশের বেলপুর গ্রামের এক বন্ধুর ছেলের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয়। এরপরেই ছাত্রীটির পরিবারের লোকজনকে কিছুটা ধমকে নাবালিকা-বিয়ের সমস্যার কথা বুঝিয়ে বলেন বিডিও-র পাঠানো প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা। এরপরে তাঁদের কাছে মুচলেকা দিয়ে মেয়েটির বাবা জানান, মেয়ের বয়স ১৮ বছর না হলে বিয়ে দেবেন না। পড়াশোনা করাবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy