সাফাই: বসিরহাটে। ছবি: নির্মল বসু
ডেঙ্গি নিয়ে গত বছরের অভিজ্ঞতা খুবই তিক্ত। তাই এ বার বসিরহাটে ডেঙ্গি রুখতে পথে নামল স্বাস্থ্য দফতর। এলাকা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা থেকে শুরু করে বাড়ি বাড়ি লোক পাঠিয়ে খোঁজ খবর নেওয়া— সবই করছে স্বাস্থ্য দফতর।
পুরওয়ার্ড এবং গ্রাম এলাকার একাংশের দাবি, গত বছর শুধু বাদুড়িয়াতেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছিল। স্বরূপনগর, বসিরহাট এবং হাসনাবাদে ১২ জন মারা গিয়েছিলেন। স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, গত বছর যে ভাবে গ্রামে গ্রামে ডেঙ্গি ছড়িয়েছিল এ বার যাতে এমন না হয়। তাই স্বাস্থ্য দফতরের লোকজন মানুষকে আগাম সতর্ক করছেন।
টাকি, বসিরহাট এবং বাদুড়িয়ার পুরপ্রধান সোমনাথ মুখোপাধ্যায়, তপন সরকার ও তুষার সিংহ জানান, এ বারে কোনও এলাকায় জল জমতে দেওয়া হচ্ছে না। নিকাশি নালা পরিষ্কার করে ফেলা হচ্ছে। আবর্জনা সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মশা মারার কামান ব্যবহার, ব্লিচিং ছড়ানোও হচ্ছে। বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এলাকায় কী ভাবে মশা নিধনের কাজ চলছে সেই বিষয়ে মাসে অন্তত দু’বার জেলা প্রশাসন বৈঠক করছে। ১৫ দিন অন্তর সেই বৈঠকে আমাদের রিপোর্ট দিতে হচ্ছে।’’
দেবব্রতবাবুর দাবি, গতবার থেকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে রক্ত পরীক্ষা করা এবং প্লেটলেট রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেউ জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে সেই ব্যক্তি ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন কিনা তা জানতে তার সব রকম রক্ত পরীক্ষা করা হচ্ছে। জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ জ্যোতি চক্রবর্তী জানান, গত বছর জেলায় ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েতে ডেঙ্গি বড় আকার নিয়েছিল। সেই সব এলাকাগুলিকে চিহ্নিত করে গত ৪ থেকে ৮ জুন বিশেষ অভিযানও চালানো হয়েছে।
মশার লার্ভা যাতে না জন্মায় সে জন্য বিভিন্ন পঞ্চায়েতে বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা চালানো হচ্ছে। কোথাও ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গি, কালাজ্বর কিংবা অজানা জ্বর হচ্ছে কিনা তার খোঁজ রাখা হচ্ছে। এ ভাবেই ডেঙ্গি প্রতিরোধ করা যাবে বলে মনে করছে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা।
এ বারে স্বাস্থ্যকর্তারা বেসরকারি প্যাথলজিক্যাল সেন্টারের রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টের ওপর বিশেষ নজর রাখছে। স্বাস্থ্য দফতরকে বেসরকারি ক্লিনিকগুলি ডেঙ্গি সংক্রান্ত রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট জানাচ্ছে। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘এর ফলে সরকারি ভাবে নেওয়া রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টের সঙ্গে বেসরকারি ক্লিনিকের রিপোর্টে ফারাক নিয়ে বিভ্রান্তি দূর হবে।’’
তবে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, কিছু জায়গায় ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজ ঠিকমতো হচ্ছে না। বাদুড়িয়া, টাকি, হাসনাবাদ, স্বরূপনগর-সহ বসিরহাট পুরসভা এলাকার কয়েকটি ওয়ার্ডে আবর্জনা পরিষ্কার হচ্ছে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। চুন-ব্লিচিং ছড়ানোও হয় না বলে
তাঁরা জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy