ধৃত: খুনে অভিযুক্ত। নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত বনকুমার দাসকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বুধবার রাতে তাকে দত্তপুকুর থেকে ধরা হয়। বনকুমারের কাছে ২৫ কেজি গাঁজা ছিল বলে পুলিশের দাবি। এই নিয়ে সন্দেশখালির জয়গোপালপুর অঞ্চলের দলের কার্যকরী সভাপতি অরবিন্দ করনকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগে ধরা পড়ল তিনজন। বাকি সাতজনের খোঁজে তল্লাশি চলছে। বৃহস্পতিবার বনকুমারকে বারাসত আদালতের বিচারক তাকে ৮ দিন পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্দেশখালির মণিপুর পঞ্চায়েতের জয়গোপালপুরের বাসিন্দা, প্রাথমিক স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক অরবিন্দবাবু দলের সভা সেরে ফেরার পথে খুন হন বাড়ির অদূরেই। সোমবার রাতে ধারাল অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে দুষ্কৃতীরা চড়াও হয় তাঁর উপরে। ঘটনার পরে বসিরহাটে এসে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বিজেপি এবং সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এই খুনে জড়়িত বলে অভিযোগ তোলেন। সে কথা অবশ্য মানেনি দুই বিরোধী দল। তাদের দাবি, শাসক দলের অন্তর্ন্দ্বন্দ্বের জেরেই এই খুন।
কিন্তু কে এই বনকুমার? সন্দেশখালির ‘ত্রাস’ বলে পরিচিত বছর পঁয়ত্রিশের ওই দুষ্কৃতী। বাড়ি আতাপুর তালতলায়। তবে ইদানীং ঘোরাফেরা করতে দেখা যাচ্ছিল বারাসত-দত্তপুকুর এলাকায়। সুপারি নিয়ে বহু খুনের ঘটনায় সে জড়িত বলে দাবি পুলিশের। গত কয়েক বছরের মধ্যে তুষখালির খালেক মোল্লা, কোড়াকাটির দিন কাপালি, বিশা মণ্ডল, আতাপুরের বলাই মণ্ডলকে খুনের অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। ডাকাতি, অস্ত্র বিক্রি, মাদক ব্যবসা, আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তোলা আদায়, ছিনতাই— নানা অপরাধের ঘটনায় গত কয়েক বছরে তার নাম জড়িয়েছে। বেশ কয়েকবার জেলও খেটেছে।
যখন যে দল এলাকায় ক্ষমতায় আসে তখন সেই দলেরই ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে বনকুমার, এমনটাই দাবি স্থানীয় মানুষজনের। তবে বনকুমার তাদের দলের কেউ না বলে দাবি করেছেন বিজেপির উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি বিকাশ সিংহ। তাঁর কথায়, ‘‘বনকুমার বলে কারও নাম শুনেছি বলে মনে পড়ে না। এমন কেউ আমাদের দলে নেই।’’ তাঁর দাবি, ‘‘সন্দেশখালিতে তৃণমূলের দলীয় কোন্দলের কথা সকলেরই জানা। কয়েক দিন আগে ওদের দলের বর্ষীয়ান নেতা তথা জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ দলের গোষ্ঠী কোন্দলের শিকার হয়ে মার খেয়েছেন। এখন আমাদের কর্মীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে।’’ সুশান্ত মাইতিকে অবশ্য ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি তাঁর। খুনের ঘটনা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলেই ঘটেছে বলে দাবি সিপিএম নেতৃত্বের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy