বিপত্তি: দোকানের উপরে ভেঙে পড়েছে ডাল। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
যশোর রোডে ফের গাছের ডাল ভেঙে পড়ে জখম হলেন তিন জন। এ বার ঘটনাস্থল বনগাঁ থানার কালুপুর বাজার। শনিবার রাত পৌনে ৮টা নাগাদ হঠাৎ কোনও ঝড়-বৃষ্টি ছাড়াই প্রাচীন একটি শিরিষ গাছের ডাল ভেঙে পড়ে তিনটি দোকানের উপরে। তিন জনের চোট লাগে। জয়দেব পাল, ফটিক আদিত্য ও মনোরঞ্জন কর্মকার নামে ওই তিন জনের মধ্যে জয়দেবকে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার সময়ে জয়দেব নিজের দর্জির দোকানে ছিলেন। দোকানটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একটি চায়ের দোকানে কয়েক জন বসে চা খাচ্ছিলেন, তাস খেলছিলেন। অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন তাঁরা।
এই ঘটনার পরে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী প্রশ্ন তুলেছেন, আর কত দুর্ঘটনার পরে হুঁশ ফিরবে প্রশাসনের? যশোর রোডের দু’পাশে গাছের মরা, শুকনো ডাল কাটার দাবি উঠেছে নতুন করে। সাম্প্রতিক সময়ে যশোর রোডে গাছের ডাল ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটা নিয়মিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। স্থানীয় মানুষ শুকনো ডাল কাটার দাবিতে পথ অবরোধ করেছেন। তারপরেও সমস্যা মেটেনি।
কিছু দিন আগে বনগাঁ থানার পুলিশ নিজেদের এলাকার গাছগুলির সমীক্ষা করে। শুকনো ও মরা ডাল, গাছের হিসেব তৈরি করা হয়। আইসি সতীনাথ চট্টরাজ জানিয়েছেন, পুলিশের তরফে বিপজ্জনক শুকনো ও মরা ডাল, গাছের ছবি তোলা হয়েছে। প্রশাসনের কাছে তা জমা দেওয়া হয়েছে। মোট ১৮টি গাছ চিহ্নিত করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। গাইঘাটা পুলিশের তরফেও মরা শুকনো ডাল চিহ্নিত করতে গাছগুলির সমীক্ষা করা হয়েছে।
পেট্রাপোল থেকে হাবড়া পর্যন্ত পথ ঘুরে দেখা গেল, কিছু গাছে শুকনো ডাল বিপজ্জনক ভাবে ঝুলে রয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হয় বলে জানালেন অনেক অটো চালক। যশোর রোডের আশেপাশের বহু বাসিন্দা আবার মনে করেন, শুকনো, মরা ডাল কাটা জরুরি। কিন্তু দেখতে হবে, ওই কাজ করতে গিয়ে যেন জ্যান্ত ডাল বা গোটা গাছটাই না কাটা পড়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেল, গাছে গোবরের ঘুটে দেওয়া হয়। গোড়ায় গরম চা, জল ফেলা হয়। গাছের গায়ে পেরেক ঠুকে বিজ্ঞাপনের বোর্ড ঝোলানো হয়। এ সবের জেরে গাছের ক্ষতি হয়। এর পাশাপাশি রয়েছে কাঠ চোরদের দৌরাত্ম্য। এ সব ঠেকানোর জন্যও কোনও নজরদারি নেই বলে অভিযোগ।
প্রশাসন ও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, যশোর রোডের পাশে থাকা গাছের মরা শুকনো বিপজ্জনক ডাল শনাক্ত করার কাজ হয়ে গিয়েছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছেন, কালীপুজোর পরে বিপজ্জনক ভাবে ঝুলে থাকা মরা ও শুকনো ডাল কাটার কাজ শুরু করা হবে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের নির্বাহী বাস্তুকার (ডিভিশন-৫) অজয়শঙ্কর কুণ্ডু বলেন, ‘‘মরা, শুকনো ডাল কাটার কাজের টেন্ডার হয়ে গিয়েছে। একটি ঠিকাদার সংস্থা কাজের বরাতও পেয়েছে। দুর্গাপুজোর জন্য কাজ করা যায়নি। কালীপুজোর পরে ডাল কাটার কাজ শুরু হয়ে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy