Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
আজ থানা ঘেরাও কর্মসূচি বিজেপির

ঘরছাড়াদের ফেরানোর কাজ শুরু ভাটপাড়ায়

তৃণমূলের দাবি, ভাটপাড়া থানায় ৩০টি ‘ঘরছাড়া’ পরিবারের তালিকা দেওয়া হয়েছে। তাঁদেরই মধ্যে আছেন শ্যামনগরের রাউতার বাসিন্দা রতন হালদার।

পুরনো-চেহারায়: বৃহস্পতিবার তৃণমূলের এই কার্যালয়টিই নিজের হাতে ‘দখলমুক্ত’ করেছিলেন মমতা।

পুরনো-চেহারায়: বৃহস্পতিবার তৃণমূলের এই কার্যালয়টিই নিজের হাতে ‘দখলমুক্ত’ করেছিলেন মমতা।

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য
ভাটপাড়া শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৯ ০৭:৫২
Share: Save:

এর আগে ‘ঘরছাড়াদের’ নিয়ে নবান্নে দরবার করেছেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তাঁর অভিযোগ, ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির সন্ত্রাসের জেরে শ’চারেক তৃণমূল কর্মী-সমর্থক ঘরছাড়া। পরিস্থিতির মোকাবিলায় বৃহস্পতিবার এলাকায় গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী নিজে। এ বার পরিবারগুলিকে ঘরে ফেরাতে উদ্যোগ করল পুলিশ।

তৃণমূলের দাবি, ভাটপাড়া থানায় ৩০টি ‘ঘরছাড়া’ পরিবারের তালিকা দেওয়া হয়েছে। তাঁদেরই মধ্যে আছেন শ্যামনগরের রাউতার বাসিন্দা রতন হালদার। এ দিন দুই ছোট মেয়েকে নিয়ে থানায় দাঁড়িয়ে কাঁদছিলেন তিনি। রতনের দাবি, ২৪ মে থেকে ভয়ে ঘরছাড়া তাঁরা। শুক্রবার দুপুরে জগদ্দল থানার পুলিশ তাঁদের বাড়িতে ফিরিয়ে দিয়ে এসেছে।

তৃণমূলের অভিযোগ, ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে তাদের একাধিক দলীয় কার্যালয়ের দখল নিয়েছে বিজেপি। বৃহস্পতিবার কাঠগোলায় নিজে এমন একটি দলীয় কার্যালয়ে রং-তুলি দিয়ে ‘এআইটিসি’ (অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস) লিখে অফিস ‘দখলমুক্ত’ করেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। এ দিন আরও তিনটি দলীয় কার্যালয় ‘পুনদর্খল’ করেছে তৃণমূল। কর্মসূচিতে হাজির ছিলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, সুজিত বসু, পার্থ ভৌমিক, মদন মিত্ররা। পরে নৈহাটি পুরসভার সামনে সদ্য ‘পুনদর্খল’ নেওয়া দলীয় কার্যালয়ে বসে জ্যোতিপ্রিয় বলেন, ‘‘রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলা এক। আর ভয় দেখানো, জবরদখল করা আর এক জিনিস। আমরা এখানে মাটি কামড়ে পড়ে থেকে সকলকে ঘরে ফেরাবই।’’

অন্য দিকে, বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় যাওয়ার সময়ে ‘জয় শ্রীরাম ধ্বনি’ দেওয়া এবং তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া ঘিরে সরগরম শিল্পাঞ্চল। এ দিন রিলায়েন্স এবং নৈহাটি জুটমিলে গিয়ে দেখা গেল, এলাকা সুনসান। এখান দিয়েই কনভয় যাওয়ার সময়ে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান শুনতে হয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

কারখানার উল্টো দিকের গলিতে ঢুকে বোঝা গেল, লোকজন ভয়ে ভয়ে রয়েছেন। প্রমোদ গুপ্ত নামে এক বাসিন্দা বললেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে দেখার জন্যই সকলে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়েছিল। কে কী বলেছে, তা শুনে উনি গাড়ি থেকে নেমে কত কিছু বললেন।’’ হরি শা নামে একজনের কথায়, ‘‘আমরা এখানে অনেক কালের বাসিন্দা। কিন্তু কাল রাত থেকে বাড়ি ফিরতে পারছি না। কাজেও যেতে পারিনি। রাত থেকেই পুলিশ বাড়ি-বাড়ি গিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে।’’

পুলিশের বিরুদ্ধে জুলুমের অভিযোগ তুলছে বিজেপি। প্রতিবাদে আজ, শনিবার জগদ্দল, নৈহাটি-সহ অন্যান্য থানা ঘেরাও করা হবে বলে জানিয়েছেন দলের নেতারা। বিজেপি। এ দিন দিল্লি থেকে ফোনে ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহ বলেন, ‘‘জয় শ্রীরাম বললেও মুখ্যমন্ত্রীর এমন অবস্থা হচ্ছে। আমাদের সমর্থকদের ধরছে পুলিশ। শনিবার থেকে এর প্রতিবাদে থানা ঘেরাও, বিক্ষোভ চলবে।’’

পুলিশের অবশ্য দাবি, কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার তন্ময় রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। কেউ গ্রেফতার হয়নি। এর থেকে আর বেশি কিছু বলা যাবে না।’’ তবে তাঁর কনভয়ে হামলা চালানো হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার অভিযোগ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই ঘটনা নিয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।

তবে পুলিশের মহলের অনেকেই জানালেন, গত কয়েক দিনে ঘন ঘন পুলিশ মহলে রদবদলের জেরেও কিছুটা বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। কমিশনার বদলের পরে শুক্রবার সরিয়ে দেওয়া হয়েছে জগদ্দলের আইসিকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC BJP Bhatpara
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE