ছবি: সংগৃহীত
চোর সন্দেহে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে মারার ঘটনায় নাম জড়াল তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের।
ঘটনাস্থল, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিঙের ইটখোলা পঞ্চায়েতের মধুখালি। শনিবার বিকেলে ওই এলাকায় তৃণমূল অঞ্চল অফিসের সামনেই হারুন মির (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে মোবাইল চোর সন্দেহে শুরু হয় গণধোলাই।
নিহতের স্ত্রী আসমা মিরের দাবি, চোর পেটানো হচ্ছে শুনতে পেয়ে তিনি এলাকায় গিয়ে দেখেন, তাঁর স্বামীকেই মারধর করছে কিছু লোক। তাঁর অভিযোগ, ঘটনাস্থলে হাজির ছিলেন স্থানীয় পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান খতিব সর্দার। তাঁর নিরাপত্তা রক্ষী হিসাবে দুই পুলিশ কর্মীও ছিলেন। আসমার অভিযোগ, মারধর ঠেকানো তো দূরের কথা, উল্টে আরও মারার জন্য ইন্ধন দিচ্ছিলেন প্রধান। দুই পুলিশ কর্মীও দাঁড়িয়ে তামাশা দেখছিলেন।
আসমা বলেন, ‘‘আমি প্রধানকে হাতেপায়ে ধরে বলি, মানুষটা চুরি করেনি। আর যদি করেও থাকে, ওকে পুলিশের হাতে তুলে দিন। এ ভাবে মারধরের হাত থেকে বাঁচান। কিন্তু কে শোনে কার কথা! উনি আমার কোনও কথা কানেও তোলেননি।’’
তাঁর দাবি, অনেকক্ষণ ধরে মারধরের জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন হারুন। ধীরে ধীরে ভিড় পাতলা হয়। কোনও মতে তাঁকে তুলে বাড়ি আনেন আসমা।
রবিবার সকাল থেকে অসুস্থ বোধ করতে থাকেন হারুন। তাঁকে গোলাবাড়িতে এক হাতুড়ে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি ওষুধপত্রও দেন। কিন্তু বেলা ৩টে নাগাদ মারা যান হারুন।
রাতেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেন আসমা। তাঁর দাবি, প্রধান চাইলে মারধর ঠেকাতে পারতেন। তা না করে উল্টে আরও উসকানি দিয়েছেন তিনি। যার জেরে মারা গিয়েছেন হারুন। দেহ ময়না-তদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ। এক পুলিশ আধিকারিক জানান, তদন্ত শুরু হয়েছে।
কিন্তু কেন মারধর করা হল হারুনকে?
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৪ ফেব্রুয়ারি মধুখালির একটি মোবাইলের দোকানে চুরি হয়েছিল। ওই ঘটনায় লোকমুখে নাম জড়ায় হারুনের। তাকে দেখতে পেয়ে শনিবার চড়াও হয় কিছু লোক।
গণপিটুনির ঘটনায় তৃণমূলের প্রধানের নাম জড়ানোয় বিতর্ক দানা বেঁধেছে। বাম পরিষদীয় দলের নেতা সুজন চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। পঞ্চায়েত প্রধানের অফিসে তুলে নিয়ে গিয়য়ে পিটিয়ে মারা হয়েছে।’’
তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অবশ্য মানছেন না প্রধান। খতিবের দাবি, একজনকে মারধর করা হচ্ছে শুনে তিনিই পুলিশকে খবর দিয়েছিলেন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমাকে বদনাম করতে এ সব বিরোধীদের চক্রান্ত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy