জট: দিনে-রাতে এমনই ছবি দেখা যায় জাতীয় সড়কে। ছবি: সুদীপ ঘোষ
রাত-ই হোক কিংবা দিন। টানা যানজটের কারণে বারাসত শহর পেরোতেই লেগে যাচ্ছে নিদেনপক্ষে দেড় থেকে দু’ঘণ্টা। এমনই অভিযোগ বাসিন্দা থেকে নিত্যযাত্রীদের।
উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সদর বারাসত পেরিয়ে এক দিকে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে যেতে হয় কৃষ্ণনগর হয়ে উত্তরবঙ্গ। অন্য দিকে, ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়ক, যশোর রোড হয়ে যেতে হয়
বনগাঁ-বসিরহাট হয়ে বাংলাদেশ। অভিয়োগ, এমন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ট্র্যাফিক পুলিশের যান নিয়ন্ত্রণের অব্যবস্থার জন্য ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে সব যানবাহনকে। ভুগছেন হাজার হাজার মানুষ।
এমনিতেই রাত ১০টার আগে জাতীয় সড়কে ট্রাকের ‘নো এন্ট্রি’ থাকে। তার পর থেকে ট্রাকের চাপ বাড়তে থাকে বলেই যানজট হয় এমনটাই দাবি পুলিশের। কিন্তু অভিযোগ, সব সময়েই ট্রাক চলে বারাসত শহরে। পাশাপাশি বিকেল গড়ালেই ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে কলকাতাগামী ট্রাকগুলিকে ছাড়তে শুরু করে পুলিশ। লেগে যায়
তীব্র যানজট। মাসখানেক আগে এ নিয়ে বিস্তর সমালোচনা এবং বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে আসার পরে যানজট এড়াতে ট্রাকগুলিকে বারাসতের আগে জাগুলিয়া মোড় থেকে ঘুরিয়ে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে যাতায়াতের নির্দেশ জারি করা হয়। এর পরে কিছু দিন বন্ধ ছিল ট্রাকের অবাধ বিচরণ, ছিল না যানজট।
ফের শুরু হয়েছে ট্রাকের অবাধ যাতায়াত, যানজট।
কেন এই হাল? প্রশ্ন করলে পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, ‘‘নির্বাচনের জন্য এই সমস্যা হচ্ছে। পুলিশও নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত। ভোট মিটে গেলে আবার বারাসত শহরে ট্রাক ঢোকার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি হবে।’’
তবে পুলিশ সুপারের এই বক্তব্যের বিরুদ্ধে পাল্টা যুক্তি দিয়েছেন এলাকার মানুষ। তাঁদের অভিযোগ, কলকাতাগামী ট্রাকগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করে যানজট মুক্ত করা তো দূরের কথা উল্টে রাস্তার মোড়ে মোড়ে সেই ট্রাক থামিয়ে পুলিশের তোলাবাজির জন্যই এমন যানজট। অথচ হেলদোল নেই পুলিশ বা বারাসত পুরসভা কারও।
বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, পরিবহণ দফতর থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি সত্ত্বেও বারাসতের দুই জাতীয় সড়কেই টোটো, অটো, ভ্যান রিকশার যাতায়াত সমস্যার অন্য কারণ। বারাসতের চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নিষেধ সত্ত্বেও অটো, টোটো, ভ্যান নিয়ম ভেঙে জাতীয় সড়কে চলায় এই সমস্যা।’’
বিমানবন্দর থেকে যানজট ছাড়া আট কিলোমিটার পথ চলার পরে বারাসতের ডাকবাংলো মোড়ের আগে রথতলা থেকে শুরু হচ্ছে তীব্র যন্ত্রণা। ডাকবাংলো মোড় থেকে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে ময়না পর্যন্ত ২ কিলোমিটার পথ যেতে তীব্র গরমে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। কখনও রেলগেট পেরিয়ে ঢুকতে না পারায় ১১ নম্বর রেলগেটের সামনে রাস্তার উপরে দাঁড়িয়ে রয়েছে ট্যাঙ্কার। ময়নার দিকে রাস্তা খুঁড়ে ফেলে রাখা হয়েছে। রাস্তার পাশ দিয়ে যেতে গিয়ে ফুট দশেকের সেই গর্তে উল্টে পড়ছে মোটরবাইক।
ডাকবাংলো মোড় থেকে ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরেও যাওয়ার উপায় নেই। সেখান থেকে কাজিপাড়া রেলগেট পর্যন্ত দু’কিলোমিটার রাস্তার দু’পাশে রাখা বাস, ট্রাক, ম্যাটাডর, অটো, টোটো। রাস্তা পথে ট্র্যাফিক বা পুলিশ না থাকায় ওভারটেক করতে গিয়ে আটকে থাকছে গাড়ি। ডাকবাংলো মোড়ে দেখা যাবে, কলকাতার দিকে যাওয়ার রাস্তা প্রায় ফাঁকা। কিন্তু বারাসতের দিকে দাঁড়িয়ে ট্রাক, ছোট গাড়ি, টোটো, বাসও।
অভিযোগ, চাঁপাডালি, কলোনি মোড় বা হেলাবটতলায় ট্রাক থামিয়ে টাকা নিতে ব্যস্ত পুলিশ। ট্রাক চালকদের পাল্টা অভিযোগ, ট্র্যাফিকের সঙ্গে চুক্তি থাকা সত্ত্বেও ট্র্যাফিক, থানা, সিভিক পুলিশ, যে যেমন পারছে টাকা তুলছে। এই অভিযোগ অবশ্য মানতে চাননি পুলিশ কর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy