Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

রাতে ট্রাকের দাপটে যানজট বারাসতে

রাতের জাতীয় সড়কে পরপর দাঁড়িয়ে ট্রাক। তার পিছনে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে অন্য গাড়ি, উত্তরবঙ্গগামী দূরপাল্লার বাস, এমনকি অ্যাম্বুল্যান্সও।

থমকে: জাতীয় সড়কে এ ভাবেই সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে ট্রাক। ছবি: সুদীপ ঘোষ

থমকে: জাতীয় সড়কে এ ভাবেই সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে ট্রাক। ছবি: সুদীপ ঘোষ

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:০০
Share: Save:

রাতের জাতীয় সড়কে পরপর দাঁড়িয়ে ট্রাক। তার পিছনে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে অন্য গাড়ি, উত্তরবঙ্গগামী দূরপাল্লার বাস, এমনকি অ্যাম্বুল্যান্সও। যানজটের জেরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে অবস্থা এমনই যে, হেলাবটতলা থেকে ডাকবাংলো মোড় পর্যন্ত মাত্র দেড় কিলোমিটার পথ পার হতেই লেগে যাচ্ছে প্রায় এক ঘণ্টা। জাতীয় সড়ক ধরে যাতায়াত করতে গিয়ে প্রতি রাতেই এমন যান-যন্ত্রণা সহ্য করতে হচ্ছে উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সদর বারাসতের যাত্রীদের।

বারাসত থেকে কলকাতা যাতায়াত করতে ভরসা এই ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। এই পথেই কৃষ্ণনগর এবং উত্তরবঙ্গগামী সমস্ত বাস ও যানবাহনও চলাচল করে। অভিযোগ, উত্তরবঙ্গগামী ট্রাকগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করে জাতীয় সড়ককে যানজটমুক্ত করা তো দূরের কথা, উল্টে রাস্তার মোড়ে-মোড়ে ট্রাক থামিয়ে টাকা আদায় করে পুলিশের একাংশ। যার জেরে এই যানজট বেড়ে চলেছে বলেই অভিযোগ।

রাতে বারাসতের ডাকবাংলো মোড়ে গিয়ে দেখা গেল, সেখান থেকে কলকাতার দিকে যাওয়ার রাস্তা প্রায় ফাঁকা। কিন্তু সেখান থেকে হেলাবটতলার দিকে যাওয়ার রাস্তায় গাঁ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে একের পর এক ট্রাক। মাঝেমধ্যে দাঁড়িয়ে ছোট গাড়ি, টোটো, বাস। এক ট্রাকচালক জানান, ট্র্যাফিক পুলিশের সঙ্গে ট্রাকমালিকদের গাড়িপিছু মাসে মাসে টাকা দেওয়ার চুক্তি রয়েছে। তা সত্ত্বেও স্থানীয় থানা এবং সিভিক পুলিশ গাড়ি থামিয়ে টাকা তোলে বলে অভিযোগ ওই ট্রাকচালকের। ফলে রাস্তায় সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে ট্রাক। একই অবস্থা যশোর রোড এবং টাকি রোডেও।

পুলিশের অবশ্য দাবি, রাত ১০টার আগে পর্যন্ত ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে ট্রাকের ‘নো এন্ট্রি’ থাকে। তাই তার পর থেকে ওই রাস্তায় ট্রাকের চাপ বাড়তে থাকে, ফলে যানজট হয়। যদিও স্থানীয়দের দাবি, রাত ১০টার অনেক আগে থেকেই ট্রাকের সৌজন্যে জাতীয় সড়কে যানজট শুরু হয়। এ প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, ‘‘যানজট এড়াতে ট্রাকগুলিকে বারাসতের আগে জাগুলিয়া মোড় থেকে ঘুরিয়ে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে যাতায়াতের নির্দেশ জারি হয়েছে। শীঘ্রই তা চালু হবে।’’

তবে বিধিনিষেধ সত্ত্বেও জাতীয় সড়কে টোটো, অটো, রিকশা ওঠা বন্ধ করা যায়নি। সে কারণেও যানজট লেগে থাকে বলে জানাচ্ছেন বারাসতের চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘অটো, টোটো নিয়ম না মেনে জাতীয় সড়কে উঠে আসায় এই বিপত্তি। বেশ কিছু বেআইনি অটো, টোটোও রয়েছে। এ ব্যাপারে পরিবহণ দফতরের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

এ ছাড়া এক নম্বর বিমানবন্দর থেকে বারাসত পর্যন্ত ৯ কিলোমিটার রাস্তায় যানজটও এখন লেগেই থাকে। নিয়ম না মেনে জাতীয় সড়কে যে কোনও সময়েই চলাচল করে মালবাহী গাড়ি। বিমানবন্দর সংলগ্ন রাস্তার কিছু এলাকায় ফুটপাতও দখল হয়ে গিয়েছে। গৌরীপুর থেকে গঙ্গানগর কাটাখাল পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারে গ্যারাজে চলে গাড়ি সারাইয়ের কাজ। রাস্তার পাশে

দাঁড়িয়ে থাকে বাসও। বিরাটি মোড় আর আড়াই নম্বর গেটের মাঝে বিমানবন্দরের ভিতর দিয়ে ভিআইপি রোডে ওঠার একটি বাইপাস রয়েছে। ফলে সেই রাস্তায় ওঠার জন্য দীর্ঘক্ষণ

দাঁড়িয়ে থাকে নাগেরবাজারগামী যানবাহনও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Barasat Truck Road
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE