Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

হাবড়ায় উদ্ধার ২ শিশু শ্রমিক

একটি সেলাই কারখানা থেকে দু’জন শিশু শ্রমিককে উদ্ধার করল পুলিশ। বুধবার হাবড়া থানার উত্তর আয়রা এলাকায় শ্রম দফতর ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই দু’জনকে উদ্ধার করেছে।    

এই কারখানা থেকেই উদ্ধার হয়েছে ওই দুই শিশুশ্রমিক।

এই কারখানা থেকেই উদ্ধার হয়েছে ওই দুই শিশুশ্রমিক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাবড়া শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:৪৭
Share: Save:

একটি সেলাই কারখানা থেকে দু’জন শিশু শ্রমিককে উদ্ধার করল পুলিশ। বুধবার হাবড়া থানার উত্তর আয়রা এলাকায় শ্রম দফতর ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই দু’জনকে উদ্ধার করেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, দুই শিশু শ্রমিকের বয়স ১২ ও ১৩। তাদের বাড়িও ওই এলাকায়। তাদের চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। হাবড়া চাইল্ড লাইনের টিম মেম্বার প্রকাশ দাস বলেন, ‘‘চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির অনুমতি নিয়ে ওই দু’জন কিশোরকে বারাসতের কিশলয় হোমে পাঠানো হয়েছে।’’

শ্রম দফতরের এলডব্লুএফসি-র (লেবার ওয়েলফেয়ার ফেশিলিটেশন সেন্টার) এক ইন্সপেক্টর অভিজিৎ বিশ্বাসের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ কারখানা মালিক মজনু মোল্লার বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট মামলা রুজু করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, মজনুর খোঁজ চলছে।

পুলিশ ও শ্রম দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শিশু শ্রম (রোধ ও নিয়ন্ত্রণ) আইন অনুযায়ী ১৪ বছরের নীচে শিশুদের কোনও কাজে নিয়োগ করা সম্পূর্ণ বেআইনি। ওই শিশুরা সেলাই কারখানায় বোতাম লাগানোর কাজ করত।

শিশুদের কাজে নিয়োগ করে কেউ দোষী প্রমাণিত হলে তার তিন বছরের জেল ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা হতে পারে।

তবে আইন থাকা সত্ত্বেও কেন শিশুশ্রম বন্ধ হচ্ছে না?

সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ জানান, মূলত দারিদ্র, সামাজিক সুরক্ষা ও সচেতনতার অভাবের জন্যই শিশুশ্রম বন্ধ হচ্ছে না।

পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন উদ্ধার হওয়া দু’টি শিশুর পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ। দু’জনের বাবা দিন মজুরের কাজ করেন। ১৩ বছরের কিশোরটির মা মারা গিয়েছেন। বাবা আবার বিয়ে করেছে। ওই কিশোর তার ঠাকুমার কাছে থাকে। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। কিন্তু ঠিকমতো স্কুলে যেতে চায় না বলে তার ঠাকুমার দাবি। ঠাকুমা বলেন, ‘‘ওই কারখানার মালিকের কাছে গিয়ে একাধিকবার অনুরোধ করি নাতিকে কাজে নিতে। লেখাপড়ার সঙ্গে কাজও শিখুক। আমার কাছে হাতখরচ চায়। শিশুরা যে এখন কাজ করতে পাবরে না, তা জানতাম না। সপ্তাহ দু’য়েক হল নাতি কাজে ঢুকেছে।’’

অন্য জন চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে ছেড়ে দিয়েছে। তার বাবা জানান, মাস ছ’য়েক আগে সে কাজে ঢুকেছিল।

কারখানার মালিক জানান, তিনি কারখানায় শিশুদের কাজে রাখেন না। ওই দু’টি শিশুর পরিবারের লোকজন অনুরোধ করায় তিনি তাদের রেখেছিলেন। ওদের কাজে রেখে তাঁরও অসুবিধা হচ্ছিল। তাঁর কথায়, ‘‘শ্রম আইন সম্পর্কে জানতাম না। আর কখনও এমন কাজ করব না।’’

তবে হাবড়া-অশোকনগর থানা এলাকায় ছোট-বড় বিভিন্ন কারখানায় শিশুরা কাজ করে। এক কারখানা মালিক জানালেন, শিশু শ্রমিক সম্পর্কে আমাদের কোনও ধারণা নেই। তবে কমবয়সী দু-একজন থাকলেও তাদের দিয়ে ছোটখাটো কাজই করানো হয়।

হাবড়ার পুরপ্রধান নীলিমেশ দাস বলেন, ‘‘পুর এলাকায় যাতে কোনও শিশুশ্রমিক না থাকে তার জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Child Labour Rescue Habra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE