Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
সোনারপুরে গুলি

জেলে বসেই যুদ্ধে ‘নেতৃত্ব’ দুই দুষ্কৃতীর

জেলে রয়েছে এলাকার দুই পরিচিত দুষ্কৃতী জ্ঞানসাগর শর্মা ও নান্টি ওরফে বাবলু ঘোষ। কয়েক মাস আগে দু’জনের গ্রেফতারের পরে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছিলেন এলাকার মানুষ। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে ফিরে এল আগেকার আতঙ্কের পরিবেশ। ওই দুই দুষ্কৃতীর দলের এলাকা দখলের লড়াইয়ে ফের গুলি চলল সোনারপুরের রানিয়া এলাকায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:০১
Share: Save:

জেলে রয়েছে এলাকার দুই পরিচিত দুষ্কৃতী জ্ঞানসাগর শর্মা ও নান্টি ওরফে বাবলু ঘোষ। কয়েক মাস আগে দু’জনের গ্রেফতারের পরে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছিলেন এলাকার মানুষ। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে ফিরে এল আগেকার আতঙ্কের পরিবেশ। ওই দুই দুষ্কৃতীর দলের এলাকা দখলের লড়াইয়ে ফের গুলি চলল সোনারপুরের রানিয়া এলাকায়।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে রানিয়ার তিরিশফুট নামে একটি জায়গায় জ্ঞানসাগরের দলের কয়েক জন মদ্যপান করছিলেন। আচমকা মোটরবাইক নান্টির দলের কয়েকজন এসে তাদের দিকে গুলি চালিয়ে চম্পট দেয়। পুলিশ জানায়, গুলিতে সামান্য জখম হয়েছেন সুমন দাস নামে এক যুবক। একটি গুলি তাঁর হাত ছুঁয়ে বেরিয়ে যায়। রাতেই এম আর বাঙুর হাসপাতালে ভর্তি করার পরে শুক্রবার সকালে ওই যুবককে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, রানিয়া এলাকায় জমির দালালি ও ইমারতি ব্যবসা নিয়ে বহু দিন ধরেই জ্ঞানসাগর ও নান্টির গোষ্ঠীর লড়াই চলছে। যার জেরে কয়েকটি খুনের ঘটনাও ঘটেছে। তার পরেই এলাকা ছেড়ে উধাও হয়ে যায় জ্ঞানসাগর। বছর দুই আগে তার বাড়িতে একটি অস্ত্র কারখানার হদিস পায় পুলিশ। অস্ত্র-কারবারি ও খুনের মামলায় অভিযুক্ত জ্ঞানসাগরকে মাস ছয়েক আগে হুগলি জেলা থেকে ধরা হয়। রানিয়ার বাসিন্দারা জানান, জ্ঞানসাগর গ্রেফতার হওয়ার পরে এলাকায় প্রভাব বেড়ে যায় নান্টির।

সম্প্রতি হরিদেবপুরের পানশালায় গুলি চলার ঘটনার মূল অভিযুক্ত ছিল নান্টি। ওই রাতে পানশালার সামনে তার দলবল প্রায় কুড়ি রাউন্ড গুলি ছুড়েছিল বলে পুলিশ জানায়। গুলিতে রাহুল নামে এক যুবকের মৃত্যুর পরে বাঁশদ্রোণীর সর্দারপাড়ার বাসিন্দা নান্টিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

বৃহস্পতিবারের ঘটনার পরে পুলিশের এক কর্তা জানান, জেলে বসেই অনুগামীদের নির্দেশ দিচ্ছে জ্ঞানসাগর ও নান্টি। সম্প্রতি রানিয়ায় একটি জমির দখল নিয়ে দু’দলের মধ্যে ফের লড়াই শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে তার জেরেই গুলি চলেছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। ওই রাতেই গুলি ছোড়ার ঘটনায় বিজয় দাস ও উত্তম পাল নামে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃতেরা জানিয়েছে, তারা নান্টির লোক।

এলাকাবাসীর কথায়, জ্ঞানসাগর গ্রেফতার হওয়ার পরে নান্টি নিজের জায়গা আরও মজবুত করার জন্য শাসক দলের একাধিক নেতার ঘনিষ্ঠ হয়েছিল। কলকাতা পুরসভা ও রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার নির্বাচনে তাকে শাসক দলের মিছিল-মিটিংয়েও দেখা গিয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এটা দুষ্কৃতীদের বিষয়। ওরা বোমা ছুড়বে না তো কি পিচকারি ছুড়বে! এদের সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই।’’ ওই দুষ্কৃতীরা তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ বলে স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করছেন শুনে শোভনবাবু বলেন, ‘‘আমি কোনও অনুষ্ঠানে গেলে যদি কেউ আমার পিছনে দাঁড়িয়ে থাকে, তবে তাঁরও ছবি উঠবে। পরে যদি সে দুষ্কর্ম করে, তা হলে বলা হবে, সে মেয়রের ঘনিষ্ঠ!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Two criminals jail police Rajpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE