ফাইল চিত্র।
বয়স মাত্র দু’বছর। আড়ম্বর বা আতিশয্যে অন্যদের ধারে-কাছে আসে না। তবুও এই পুজো ঘিরে এলাকার বাসিন্দাদের আনন্দ সীমাহীন।
এলাকায় ‘শামিমের কালীপুজো’ নামে পরিচিতি পেয়েছে এই পুজো। তাতে হাত লাগাতে পেরে বেজায় খুশি সুদীপ-বিশ্বজিৎ-দীপক-রবিরা। বর্তমান অস্থির সময়ে সম্প্রীতির অন্য গল্প লিখছে নোয়াপাড়ার এই পুজো।
ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলেরই ভাটপাড়া-কাঁকিনাড়া গত বছর দুই সম্প্রদায়ের সংঘাতের ছবি দেখেছিল। কিন্তু তার প্রভাব পড়েনি এই মহল্লায়। নোয়াপাড়ার রামপ্রসাদ মোড় এলাকা মানেই যেন সম্প্রীতির আবরণে মোড়া এক যৌথ পরিবার।
পুজোর মূল কারিগর শামিম আখতার পেশায় মাংস বিক্রেতা। গত ১৬ বছর ধরে প্রতি শনিবার কালীর উপোস করেন তিনি। সন্ধ্যায় পুজো দিয়ে উপোস ভাঙেন। শুধু পুজো নয়, অজমের শরিফের সঙ্গে কাশীও ঘুরে এসেছেন শামিম। মঙ্গলবার শেষ হয়েছে কালীপুজো। এ বার তিনি হাত লাগাবেন ছটপুজোর প্রস্তুতিতে। শামিম বলছেন, ‘‘এতেই আমার আনন্দ। হিংসার খবর শুনলে অসুস্থ বোধ করি।’’
শামিম জানান, কালীপুজো করার ভাবনা তাঁর মাথায় আসে গত বছর। কথা বলেন পরিবারের লোকেদের সঙ্গে। পরিবার বলতে স্ত্রী নুজ়হত পরভিন এবং বছর আটেকের ছেলে। তাঁরা উৎসাহ জুগিয়েছিলেন। তার পরেই পাড়ার লোকেদের ডেকে নিজের ইচ্ছার কথা জানান শামিম। আপত্তি আসেনি সেখান থেকেও।
পুজোর কথা জেনে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন কয়েক জন সহৃদয় মানুষ। তাঁদের এক জন সুদীপ নাগ। তাঁর কেটারিংয়ের ব্যবসা। সুদীপ ছাড়াও বিশ্বজিৎ নন্দী, দীপক প্রসাদ, রবি চৌধুরী, জাভেদ আসলাম, মেহতাব আলম, হামিদ আনসারির মতো আরও কয়েক জন পুজোর কাজে হাত লাগান। ফলে গত বারের তুলনায় এ বার আরও গুছিয়ে পুজো হয়েছে। তবে ছিল কোভিড-সুরক্ষার ব্যবস্থা। সুদীপ বলেন, ‘‘শামিমের নিষ্ঠায় কোনও খাদ নেই। ওর কাছে ধর্ম মানে সব মানুষ সমান। ইদেও আমরা ওর পাশে থাকি।’’
আর শামিমের কথায়, ‘‘ছোট থেকে এই পরিবেশে বড় হয়েছি। এটাই তো বাংলার সংস্কৃতি। এখন সময় বড় অশান্ত। তাই সব উৎসবেই আমাদের এমন বেঁধে বেঁধে থাকা উচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy