Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

হোর্ডিং-ব্যূহে বন্দি দুই অঞ্চল

শুধু ‘মুখ’ নয়, বারাসত-মধ্যমগ্রামের গোটা শরীরটাই যেন ঢেকে গিয়েছে বিভিন্ন সংস্থার বিজ্ঞাপন আর রাজনৈতিক প্ল্যাকার্ডে। ছোট-বড়-মাঝারি এবং পাশাপাশি অতিকায় মাপের হোডিং, প্ল্যাকার্ড, পোস্টারে ভরে গিয়েছে চার দিক।

আড়াল: এ ভাবেই ঢেকেছে শহরের মুখ। বারাসতে। ছবি: সুদীপ ঘোষ

আড়াল: এ ভাবেই ঢেকেছে শহরের মুখ। বারাসতে। ছবি: সুদীপ ঘোষ

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৭ ০২:৫০
Share: Save:

শুধু ‘মুখ’ নয়, বারাসত-মধ্যমগ্রামের গোটা শরীরটাই যেন ঢেকে গিয়েছে বিভিন্ন সংস্থার বিজ্ঞাপন আর রাজনৈতিক প্ল্যাকার্ডে।

ছোট-বড়-মাঝারি এবং পাশাপাশি অতিকায় মাপের হোডিং, প্ল্যাকার্ড, পোস্টারে ভরে গিয়েছে চার দিক। বিজ্ঞাপনের আড়ালে সিগন্যালও যাচ্ছে নজর এড়িয়ে। এর মধ্যে কিছু বিজ্ঞাপন লাইসেন্সবিহীন এবং অবৈধ বলে জানিয়েছে পুরসভাই। দৃশ্যদূষণের আড়ালে এ ভাবে আকাশটাই হারিয়ে গিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সদর বারাসত ও মধ্যমগ্রামে।

৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে বারাসতের কলোনি মোড়, হেলাবটতলা। চারপাশে আকাশচুম্বী বিজ্ঞাপন। মোড়ের একপাশে বিবেকানন্দের মূর্তির মাথা ছুঁতে না পারলেও কোমর পর্যন্ত ঢেকে গিয়েছে বিজ্ঞাপনে। নির্মীণমাণ একটি বাড়ি ওই অবস্থাতেই ভরে গিয়েছে বিজ্ঞাপনে।

৩৫ নম্বর জাতীয় সড়ক ও টাকি রোডের সংযোগস্থল চাঁপাডালি মোড় ছেয়ে রয়েছে মোবাইল, আবাসন আর রাজনৈতিক দলের বিজ্ঞাপনে। ঢেকে গিয়েছে সুলভ শৌচাগার। ট্র্যাফিক পুলিশের কিয়স্কের উপরেও বিজ্ঞাপন।

আরও খারাপ অবস্থা ডাকবাংলো মোড়ে। সেখানে মাটি থেকে শুরু হয়েছে বড় বড় হোর্ডিং আর রাজনৈতিক দলের ব্যানার। বিজ্ঞাপনে কোথাও দাঁত বার করে হাসছেন সেলিব্রিটি, কোথাও ছিপি খোলা বিলিতি পানীয়ের ফোয়ারার সঙ্গে আকাশে উড়ে যাচ্ছেন স্বল্পবসনা তন্বী।

একই হাল মধ্যমগ্রামেও। চৌমাথায় রয়েছে যাত্রী-প্রতিক্ষালয়। তার উপরে বেসরকারি হাসপাতলের বিজ্ঞাপন। ট্র্যাফিক পুলিশের সিগন্যাল পোস্ট ছেয়ে গিয়েছে সিমেন্ট সংস্থার বিজ্ঞাপনে।

এই সব মোড় দিয়ে যাতায়াত করে উত্তরবঙ্গ ও বাংলাদেশের যানবাহনও। গাড়িচালকদের অভিযোগ, বারাসত, মধ্যমগ্রামের এই মোড়গুলির এমনই অবস্থা যে, বিজ্ঞাপনের জন্য ট্র্যাফিক সিগন্যাল আড়াল তো হয়ই, তা ছাড়া বেশ কিছু ক্ষেত্রে সিগন্যালের পোস্টেও বিজ্ঞাপন সাঁটা থাকে। অনেক সময়ে তার জন্য সিগন্যাল চালকের চোখে না পড়ায় দুর্ঘটনাও ঘটে।

শহরে বিজ্ঞাপন লাগাতে পুরসভার অনুমতি প্রয়োজন হয়। পুরকরও দিতে হয়। গাছে কোনও ভাবেই বিজ্ঞাপন লাগানো যায় না।
অন্যত্র বিজ্ঞাপন লাগাতে পুরসভার অনুমতি প্রয়োজন হয়। না নিলে শাস্তির ব্যবস্থাও আছে বলে জানিয়েছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। কিন্তু কোনও নিয়মই মানা হচ্ছে না এ সব এলাকায়।

গত আর্থিক বছরে বিজ্ঞাপন-কর বাবদ প্রায় দু’কোটি টাকা আয় করেছে বারাসত পুরসভা। চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘যে যার খেয়াল খুশি মতো বিজ্ঞাপন লাগিয়ে যাচ্ছে। বেআইনি বিজ্ঞাপনগুলি অবিলম্বে খুলে ফেলা হবে।’’

কর বাবদ বছরে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা আয় করেছে মধ্যমগ্রাম পুরসভাও। চেয়ারম্যান রথীন ঘোষ বলেন, ‘‘বেআইনি বিজ্ঞাপন খোলার কাজ চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hoarding Two Regions
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE