এয়ারপোর্ট থেকে শুরু করে বারাসত পর্যন্ত উৎসব মানে ছিল কালীপুজো। কিন্তু এখন সে ধারণা বদলেছে। গত কয়েক বছর ধরে এখানেও জাঁকজমক করে দুর্গাপুজো হচ্ছে।
উত্তর কলকাতা ও শহরতলির পুজো কমিটিরা এখন কলকাতার সেরা পুজোর পুরস্কারও ছিনিয়ে নিচ্ছে। ঢুকছে বহুজাতিক সংস্থার বিজ্ঞাপন। দুর্গানগর, বিরাটি, নিউব্যারাকপুর, মধ্যমগ্রাম ও বারাসতের অনেক পুজোই একে অন্যকে টেক্কা দেওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। তবে মিল হল, এ বারে এই এলাকার প্রতিটি পুজো কমিটিগুলি আলোক সজ্জায় বাজেট বাড়িয়েছে। ফলে আলোয় সেজে উঠছে ৩৪ ও ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়ক।
প্রতি বছরই আলাদা করে ভিড় টেনে নেয় নিউ ব্যারাকপুরের বিদ্রোহী স্পোর্টিং ক্লাব। এ বার তাদের থিম, রাজস্থান। জয়পুরের মহলের আদলে তৈরি মণ্ডপের ভিতরে অপরূপ কারুকার্য থাকবে। থ্রি-ডি এফেক্টে দেখা যাবে অসুর বধ। মধ্যমগ্রামের শ্রীনগর সর্বজনীনের এ বারের থিম, পরিবেশ ও বিশ্ব উষ্ণায়ন। দেবীদুর্গার মূর্তির পাশে থাকবে প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণী। থাকবে জল সংকটের সমস্যাও। ওই এলাকারই উদয়রাজপুর নেতাজি সঙ্ঘে প্লাই, কাপড়ে তৈরি হচ্ছে কাল্পনিক মন্দির। একচালা সাবেক প্রতিমা নজর কাড়বে। ছোটদের মজা দিতে আলোয় রয়েছে বিভিন্ন কার্টুন চরিত্র।
ছেলেমেয়েদের কষ্ট করে বড় করার পরে বাবা-মাকে রেখে আসা হয় বৃদ্ধাশ্রমে। তারই প্রতিবাদে বারাসত চারের পল্লির এ বারের থিম, ঠিকানা। সেখানে যৌথ পরিবারের ভাবনা থাকবে। দেবী মূর্তির পরনে থাকবে রুপোর গয়না। বারাসতের বিবেকানন্দ সেবা সমিতিতে দেখা মিলবে পক্ষী নিবাস। বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বহুতলের চাপে হারিয়ে যাচ্ছে পাখি। সেই ভাবনায় বাঁশ দিয়ে অপরূপ কারুকাজে তৈরি হচ্ছে পক্ষী নিবাস। কৃষ্ণনগরের ঠাকুর ও আলো নজর কাড়বে।’’
বারাসতের সাউথ শেঠপুকুর সর্বজনীনে ঢুকলেই তিতুমিরের বাঁশের কেল্লার মধ্যে চলে যাবেন দর্শক। গোলাপি রঙের সাবেক প্রতিমা নজর কাড়বে। ফাইবার, থার্মোকল দিয়ে কাল্পনিক মন্দির তৈরি করছে শেঠপুকুর সর্বজনীন পূজা সমিতি। সন্ত্রাস বিরোধী থিম এ বার তাঁদের। আইসক্রিমের কাপ দিয়ে তৈরি হয়েছে ঝাড়বাতি।
বারাসতে এ বার দু’টি পুজোর সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষ। তাই রামকৃষ্ণপুর নবারুণ সঙ্ঘ তৈরি করছে কাল্পনিক মন্দির। গায়ে থাকবে থার্মোকলের কাজ। বিশ্বশান্তির ভাবনায় দেবী মূর্তি ও আলোয় রবীন্দ্রনাথের গল্প দেখতে পাওয়া যাবে। পাশাপাশি সুবর্ণপত্তন সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটি ফাইবার, প্লাই দিয়ে তৈরি করেছে ভেলোরের স্বর্ণ মন্দির। দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের আদলে আলোর গেট পেরিয়ে মণ্ডপে ঢুকে দেখা মিলবে কষ্টিপাথরে তিরুপতির আদলে দেবী মূর্তির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy