Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

আগুনে পুড়ে মৃত্যু যুবকের, গ্রেফতার ২

সোমবার সন্ধ্যায় নিজের বাড়িতেই অগ্নিদগ্ধ হয়েছিলেন সুজয় পাল (৩০)। তাঁকে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে বারাসত জেলা হাসপাতাল হয়ে ভর্তি করা হয় এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালে। মঙ্গলবার সকালে সেখানেই মারা যান সুজয়।

মৃত: সুজয় পাল। (ডান দিকে) ধৃত দম্পতি। নিজস্ব চিত্র

মৃত: সুজয় পাল। (ডান দিকে) ধৃত দম্পতি। নিজস্ব চিত্র

সীমান্ত মৈত্র
হাবড়া শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৮ ১২:১২
Share: Save:

আগুনে পুড়ে মৃত্যু হল এক যুবকের। মঙ্গলবার সকালে হাবড়া শহরের বাণীপুর ইতনা বি-ব্লক এলাকার ঘটনা। আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে এক দম্পতিকে। অভিযুক্ত মৃত যুবকের স্ত্রীও।

সোমবার সন্ধ্যায় নিজের বাড়িতেই অগ্নিদগ্ধ হয়েছিলেন সুজয় পাল (৩০)। তাঁকে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে বারাসত জেলা হাসপাতাল হয়ে ভর্তি করা হয় এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালে। মঙ্গলবার সকালে সেখানেই মারা যান সুজয়।

তাঁর মা কল্পনা হাবড়া থানায় স্থানীয় বাসিন্দা তপন দাস ও তাঁর স্ত্রী মঞ্জুলার বিরুদ্ধে ছেলেকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ করেছেন। তপনের সঙ্গে সুজয়ের স্ত্রীর সম্পর্ক নিয়ে দুই পরিবারে টানাপড়েন ছিল। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুজয় সাত বছরের মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে নিখিল মজুমদারের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। গেঞ্জি তৈরির কারখানায় কাজ করতেন ওই যুবক। সুজয়ের পরিবারের অশান্তি মেটাতে রবিবার রাতে স্থানীয় একটি ক্লাবে সালিশি সভা বসে। সেখানে সুজয়ের স্ত্রী বা তপন কেউই সম্পর্কের কথা স্বীকার করেননি বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। স্থানীয় সূত্রের অভিযোগ, মদ্যপ অবস্থায় সভায় গিয়েছিলেন সুজয়। তাঁকে ধাক্কাধাক্কি দিয়ে বের করে দেওয়া হয়। এ নিয়ে অবশ্য মুখে কুলুপ ক্লাবের কর্মকর্তাদের।

বৈঠকে গিয়েছিলেন হাবড়া পুরসভার প্রাক্তন সিপিএম কাউন্সিলর প্রসেনজিৎ দত্ত। তিনি বলেন, ‘‘আমি রাত ১১টা নাগাদ গিয়েছিলাম। বৈঠক শেষে সুজয়ের স্ত্রী তাঁর মায়ের সঙ্গে চলে যান। তপনও বাড়ি ফিরে যান।’’ পরিবার সূত্রের খবর, সুজয়ের স্ত্রী বামনগাছিতে মাসির বাড়ি গিয়েছেন। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, সোমবার তপনের সঙ্গে সুজয়ের ঝামেলা বাধে। কিছুক্ষণ পরেই তিনি নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ওই দিন সন্ধ্যায় ‘বাঁচাও বাঁচাও’ চিৎকার করতে করতে সুজয় ঘর থেকে বেরিয়ে কলতলায় এসে পড়ে যান। তাঁকে উদ্ধার করতে গিয়ে বাড়িওয়ালা নিখিলও জখম হন। আশেপাশের লোকজন এসে আগুন নেভান। সুজয়ের বাবা সুবল, মা কল্পনা ও ভাই সুব্রত কাছেই একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন। প্রতিমা শিল্পী হিসাবে সুবলের নামডাক আছে। বছর ষাটেকের মানুষটি শারীরিক ভাবে অসুস্থ। মঙ্গলবার সকালে বাড়ির কাছে একফালি জায়গায় কালী প্রতিমার সাজসজ্জার শেষ কাজটুকু সারছিলেন।

সেখানেই সুবলকে ছেলের মৃত্যুসংবাদ দেওয়া হয়। শুনে কিছুক্ষণ থমকে থাকে হাত। কয়েক মিনিটের নীরবতা। তারপরেই বৃদ্ধ কাঁপা হাতে ধরা তুলির টানে মায়ের চক্ষুদানে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Arrest Crime Tragedy Suicide
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE