অশান্তি: রাস্তার ধারের দোকান ভেঙে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বুধবার, আমডাঙায়। ছবি: সুদীপ ঘোষ
একটি মোটরবাইকের দোকানে তোলাবাজি এবং তা নিয়ে তৃণমূল-বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে বুধবার উত্তপ্ত হয়ে উঠল আমডাঙা। স্থানীয় একটি স্কুলের সামনেই চলে দেদার বোমাবাজি। ঘণ্টাখানেকেরও বেশি সময় ধরে চলে হামলা এবং পাল্টা হামলা। বোমার আঘাতে ছ’জন জখম হন। ঘটনায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী ও র্যাফ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। তবে কাউকে এখনও গ্রেফতার করা হয়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে আমডাঙার রায়পুরে মোটরবাইকের একটি নতুন দোকান ঘিরে গোলমালের সূত্রপাত। ওই দোকানের মালিক রাকিবুল ইসলামের অভিযোগ, দোকানটির জন্য মোটা টাকা দাবি করেছিল কিছু দুষ্কৃতী। না হলে দোকান বন্ধ করে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছিল। স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশে এই তোলাবাজির কথা জানিয়েছিলেন রাকিবুল। অভিযোগ, এ দিন দোকান খোলার পরে কিছু দুষ্কৃতী সেখানে এসে সেখানে ভাঙচুর চালাতে শুরু করে। দোকানের কর্মীদেরও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই এলাকায় তৃণমূল ও বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও বোমাবাজি শুরু হয়। এলাকার একটি বাড়ি এবং আর একটি মোটরবাইকের দোকানেও ভাঙচুর চালানো হয়। রাস্তার পাশের ঝুপড়ি দোকান ভেঙে তাতে কেরোসিন-পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এমনকি, স্থানীয় আমডাঙা হাই স্কুলের গেটের সামনেও শুরু হয়ে যায় বোমাবাজি। স্কুলের ভিতরে ছাত্রছাত্রীরা ভয়ে কান্নাকাটি, ছুটোছুটি শুরু করে দেয়। স্কুলের পঠন-পাঠন বন্ধ হয়ে যায়। ওই স্কুলের এক শিক্ষক সপ্তর্ষি চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পরপর বোমা ফাটছিল। আমরা স্কুলের গেট বন্ধ করে ক্লাসের মধ্যে ছাত্রছাত্রীদের ঢুকিয়ে দিই। খবর দেওয়া হয় পুলিশেও। এমন ভয়ঙ্কর অবস্থা কখনও দেখিনি।’’ খবর পেয়ে স্কুলে ছুটে আসেন অভিভাবকেরা। পুলিশি ঘেরাটোপে বাড়ি ফেরে পড়ুয়া ও স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা।
এরই মধ্যে রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ শুরু করে কিছু মানুষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নামানো হয় র্যাফ। ঘটনাস্থলে যান উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিশ্বচাঁদ ঠাকুরও। এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তায় ছড়িয়েছিটিয়ে পড়ে রয়েছে স্প্লিন্টার, পোড়া দোকানের অংশ। বেশ কিছু তাজা বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ। আহতদের মধ্যে দু’জনকে বারাসত হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় বিজেপি নেতা জয়দেব মান্না অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল হামলা চালিয়ে এই কাণ্ড করেছে।’’ বিজেপির বিরুদ্ধে পাল্টা হামলার অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক রফিকুর রহমানও। তবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিশ্বচাঁদবাবু বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত চলছে। কেউ এখনও গ্রেফতার হয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy