জমি নিয়ে প্রতিবেশীদের সঙ্গে বিবাদের জেরে এক বিধবা মহিলা ও তাঁর অন্তঃসত্ত্বা মেয়েকে মারধর করে, প্রকাশ্যে তাঁদের অধর্নগ্ন করে শ্লীলতাহানির অভিযোগে দুই ভাইকে গ্রেফতার করল পুলিশ। রবিবার বিকেলে উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটায় ওই নিগ্রহের ঘটনা ঘটে। ‘সুটিয়া প্রতিবাদী মঞ্চ’-এর মহিলারা গিয়ে ওই মা-মেয়ের শরীরে গামছা জড়িয়ে তাঁদের সম্ভ্রম ঢাকেন। সোমবার দুপুরে মঞ্চের সদস্যদের নেতৃত্বে গ্রামের মহিলারা অভিযুক্তদের বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। ছিলেন ওই মা ও মেয়েও। পরে পুলিশ গিয়ে অংশুপতি বৈদ্য এবং অনুপ বৈদ্য নামে ওই দুই ভাইকে ধরে।
এলাকার পার্বতী বিশ্বাস, সোমা বিশ্বাস, সুলতা বিশ্বাসের মতো মহিলারা জানিয়েছেন, মহিলাদের উপরে অত্যাচার কখনই মেনে নেওয়া যায় না। বিশেষ করে সুটিয়ায় মহিলাদের উপরে অত্যাচারের ‘কালো দিন’ কিছুতেই ফিরতে দেওয়া হবে না।
পুলিশ জানায়, এলাকার একটি জমিতে ওই বিধবা ঘর তৈরি করেছিলেন। অভিযোগ, অংশুপতি তা ভেঙে দেন ১৪৪ ধারা থাকলেও। রবিবার ওই ঘরের সামনে মা-মেয়ের সঙ্গে অংশুপতিদের প্রথমে বচসা, পরে মারপিট বেধে যায়। অভিযোগ, ওই সময়ই অংশুপতি ও তাঁর ভাই মা ও মেয়ের শ্লীলতাহানি করেন।
যদিও অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে অংশুপতি বলেছেন, ‘‘মা ও মেয়েই আমাদের মারধর করেছেন। কারও শ্লীলতাহানি করা হয়নি।’’ অংশুপতির দাবি, বেশ কিছু বছর আগে এলাকার বাসিন্দাদের কাছ থেকে তাঁরা তেত্রিশ শতক জমি কেনেন। ওই জমিটি একটা সময় ছিল ওই বিধবাদের। মহিলার দাবি, তেত্রিশ শতকের মধ্যে এক শতক জমি তাঁরা বিক্রি করেননি। ওই জমির দখল নিয়েই গোলমাল বেধেছে। সুটিয়াতেই বছর পনেরো আগে বহু মহিলাকে গণধর্ষণ, তাঁদের শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে দুষ্কৃতীদলের বিরুদ্ধে। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ গ্রামের মানুষ জোটবদ্ধ হয়ে তৈরি করেছিলেন প্রতিবাদী মঞ্চ। সেই প্রতিবাদী মঞ্চের সম্পাদক বরুণ বিশ্বাস অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে আন্দোলন করে গিয়ে দুষ্কৃতীদের গুলিতে প্রাণ দিয়েছেন।
সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে ‘প্রতিবাদী মঞ্চ’-এর মহিলা সদস্যরা এ দিন বলেন, ‘‘মা-মেয়ের উপরে যারা অত্যাচার করল, তাদের উপযুক্ত শাস্তি না হলে আমরা আন্দোলনের পথে যাব।’’ মঞ্চের সম্পাদক ননী গোপাল পোদ্দার বলেন, ‘‘জমি নিয়ে বিবাদ থাকতে পারে। তা মেটানোর জন্য আইন রয়েছে। তাই বলে মহিলাদের উপর অত্যাচার আমরা কিছুতেই মেনে নেব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy