মনুয়া-কাণ্ডের ছায়া এ বার নোদাখালিতে! বারাসতের হৃদয়পুরের বাসিন্দা অনুপম সিংহকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিল তার স্ত্রী মনুয়া ও প্রেমিক অজিত রায়। একই ভাবে নোদাখালির অরুণ সাঁপুইকে খুনের অভিযোগে তাঁর স্ত্রী সুজাতা সাঁপুই ও সুজাতার ‘প্রেমিক’ মৃত্যুঞ্জয় পাণ্ডেকে শুক্রবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় ধৃতেরা অপরাধ স্বীকার করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, গত ১৩ মার্চ নোদাখালির নতুন রাস্তার ধারে খাল থেকে উদ্ধার হয় বস্তাবন্দি একটি দেহ। সে সময়ে মৃতের পরিচয় জানতে পারেনি পুলিশ। পরে তারা বিভিন্ন থানায় মৃত ব্যক্তির ছবি-সহ বার্তা পাঠায়। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে শুরু হয় তদন্ত। বৃহস্পতিবার অরুণের বাবা দুর্লভচন্দ্র সাঁপুই নোদাখালি থানায় এসে ছেলের প্যান্ট, তাবিজ ও কোমরে থাকা তাগার ছবি দেখে তাঁকে শনাক্ত করেন।
তদন্তকারীরা জেনেছেন, ২০০৬ সালে অরুণের সঙ্গে বিয়ে হয় সুজাতার। সম্প্রতি সুজাতা একটি কাজ পান। তার পর থেকে ওই দম্পতি তাঁদের নোদাখালির নস্করপাড়ার বাড়ি ছেড়ে এলাকাতেই গণেশ পাণ্ডে নামে এক জনের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। অভিযোগ, তখন গণেশের ছেলে মৃত্যুঞ্জয়ের সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়ায় সুজাতা। জানতে পেরে অরুণ প্রতিবাদ করেন। পুলিশ জানিয়েছে, এর পর থেকেই সুজাতা ও মৃত্যুঞ্জয় মাদক, ধুতুরা ফুলের রস-সহ বিভিন্ন জিনিস খাইয়ে অরুণকে বেহুঁশ করে রাখত। কিছু বলতে গেলে জুটত মারধর, গালিগালাজ। এমনকি, তারা অরুণকে খুনের হুমকি দিত বলেও অভিযোগ। তবে সম্মানহানির ভয়ে অরুণ কাউকে কিছু জানাননি।
শেষমেশ পথের কাঁটা সরাতে অরুণকে শ্বাসরোধ করে খুনের ছক কষে সুজাতা ও মৃত্যুঞ্জয়। সেই মতো খুন করে, দেহ বস্তায় ঢুকিয়ে খালের জলে চুবিয়ে দেয় প্রমাণ লোপাটের জন্য। গত ফেব্রুয়ারি থেকে অরুণের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। সম্প্রতি অরুণের বাবা দুর্লভবাবু জানতে পারেন, নোদাখালি থানার পুলিশ খাল থেকে একটি দেহ উদ্ধার করে তদন্ত করছে। তার পরেই তিনি বৃহস্পতিবার থানায় এসে ছেলেকে শনাক্ত করেন। তাঁর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় সুজাতা ও মৃত্যুঞ্জয়কে। ধৃতদের এ দিন আলিপুর আদালতে তোলা হলে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy