Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Fake police

স্বামী ভুয়ো পুলিশ, জানতেন না স্ত্রী-ও

তদন্তকারী এক পুলিশ অফিসার বলেন, ‘‘অরুণের স্ত্রী জানতেন, তাঁর স্বামী পুলিশ কর্মী। আমাদের কাছ থেকে সব জানতে পেরে মহিলা থ। ধৃতের বাড়ি থেকে পুলিশের পোশাক পরা অরুণের ছবি উদ্ধার করা হয়েছে। বেশ কিছু ভুয়ো নথিপত্রও মিলেছে।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা
বনগাঁ শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৮ ০৩:১৯
Share: Save:

স্ত্রী জানতেন স্বামী পুলিশে কাজ করেন। পাড়া-পড়শি, আত্মীয়েরাও সে কথাই জানতেন। আদব-কায়দা দেখে কারও মনে প্রশ্ন আসেনি কখনও। কিন্তু জানাজানি হয়েছে, আদৌ তিনি পুলিশ কর্মী নন। বরং কেপমারির সঙ্গে জড়িত। বিয়ের কুড়ি বছর পরেও স্ত্রী যা টের পাননি বলেই তাঁর দাবি। এমন কাণ্ডে অবাক তদন্তকারী অফিসারেরাও!

মঙ্গলবার দুপুরে বনগাঁ থানার পুলিশ গোপালনগর এলাকা থেকে অরুণ দাস নামে বছর বাহান্নর ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। তাঁর বাড়ি নোয়াপাড়া থানার ইছাপুর পূর্বাশা এলাকায়।

তদন্তকারী এক পুলিশ অফিসার বলেন, ‘‘অরুণের স্ত্রী জানতেন, তাঁর স্বামী পুলিশ কর্মী। আমাদের কাছ থেকে সব জানতে পেরে মহিলা থ। ধৃতের বাড়ি থেকে পুলিশের পোশাক পরা অরুণের ছবি উদ্ধার করা হয়েছে। বেশ কিছু ভুয়ো নথিপত্রও মিলেছে।’’

পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃতের বক্তব্য, তাঁর বাড়ি কল্যাণীতে। বাড়িতে বৃদ্ধা অসুস্থ মা ছাড়া আর কেউ নেই। স্ত্রী ছেড়ে চলে গিয়েছেন। তিনি কোনও কেপমারির ঘটনাতেও জড়িত নন। তবে অন্য একটি আর্থিক প্রতারণার ঘটনায় জড়িত বলে পুলিশের কাছে তিনি স্বীকার করেছেন।

ধৃতের কথাবার্তা অসংলগ্ন মনে হওয়ায় তদন্তকারী অফিসাররা ধৃতকে নিয়ে তার বাড়ি যান। কল্যাণী গিয়ে পুলিশ দেখেন, সেখানে তার কোনও বাড়ি নেই। সেখানে তার এক ভাই থাকেন। ভাই পুলিশকে জানায়, দাদার সঙ্গে তাঁদের বহু বছর কোনও সম্পর্ক নেই।

সেখান থেকে ঠিকানা নিয়ে বনগাঁ থানার পুলিশ ধৃতকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর ইছাপুরের বাড়িতে যায়। পুলিশের সঙ্গে ওই ভাবে স্বামীকে দেখে স্ত্রী অবাক হয়ে যান। তদন্তকারী পুলিশ অফিসারদের কাছ থেকে মহিলা জানতে পারেন, তাঁর স্বামীকে কেপমারির ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর স্বামী পুলিশ কর্মী নন।

এ দিকে, অরুণ কেপমারির ঘটনা অস্বীকার করলেও বনগাঁ থানায় এসে তিন মহিলা অরুণকে শনাক্ত করে গিয়েছেন। তাঁরা পুলিশকে জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তিই তাঁদের টাকার লোভ দেখিয়ে সোনার গয়না, নগদ টাকা নিয়ে গিয়েছিল।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন কয়েক আগে নদিয়ার ধানতলা থানা এলাকা থেকে বনগাঁ থানার পুলিশ আর্থিক প্রতারণা চক্রের দু’জনকে গ্রেফতার করে।

চক্রটি কম টাকায় চাল, সর্ষে, চিনি বিক্রি করবে বলে মানুষের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিয়ে সেই টাকা আত্মসাৎ করে বলে অভিযোগ। সেই চক্রের সঙ্গেও অরুণ জড়িত বলে অভিযোগ। চক্রটির বাকিরা অরুণকে থানার ‘মেজোবাবু’ হিসাবে পরিচয় করিয়ে দিত লোকজনের সঙ্গে।

পুলিশ ধৃত দু’জনকে দিয়ে ফোন করিয়ে অরুণকে গোপালনগরে আসতে বলে। অরুণ এলে পুলিশ তাঁকে ধরে ফেলে।

এক তদন্তকারী অফিসারের কথায়, ‘‘মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করতে অনেককে দেখেছি। তা বলে নিজের স্ত্রীর কাছেও মিথ্যে পরিচয় দিয়ে এতগুলো বছর কাটিয়ে দেওয়া, এই প্রথম দেখলাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fake police Kepmari
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE