মৃত: সোমা দেব
ব্যানারে লেখা, ‘ডেঙ্গি সচেতনতা পদযাত্রা’। কয়েকশো মানুষ হাঁটছেন। তাঁদের হাতে রয়েছে পোস্টার। তাতে লেখা, ‘ডেঙ্গি মোকাবিলায় এলাকার ক্লাবগুলিকেও এগিয়ে আসতে হবে।’
অশোকনগর-কল্যাণগড় পুর এলাকায় বহু মানুষ জ্বর ও ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এলাকায় জ্বর ও ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ছে। রবিবার সকালেও স্থানীয় বনবনিয়া এলাকার বাসিন্দা সোমা দেব (৩৯) নামে এক মহিলা মারা গিয়েছেন বারাসতের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। মৃত্যু শংসাপত্রে লেখা হয়েছে, ‘মাল্টি অরগ্যান ফেলিওর।’ সোমবাদেবী ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছিলেন।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার জ্বর নিয়ে সোমাদেবীকে ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টে এসএস১ পজিটিভ ছিল। শনিবার রাত পর্যন্ত তাঁর প্লেটলেটের সংখ্যা ভালই ছিল বলে দাবি পরিবারের। কিন্তু এ দিন সকালে হঠাৎ তাঁর অবস্থার অবনতি হয়।
সোমাদেবী-সহ পুর এলাকায় জ্বর ও ডঙ্গিতে মারা গেলেন চার জন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, মশার উপদ্রব রয়েছে। কিন্তু নিয়মিত মশা মারার তেল ও কামান দাগা হচ্ছে না। ফলে ভুগতে হচ্ছে বাসিন্দাদের।
পুরপ্রধান প্রবোধ সরকার বলেন, ‘‘মশা মারতে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে নিয়মিত মশা মারার তেল ব্লিচিং, চুন ছড়ানো হচ্ছে। লিফলেটও বিলি করা হচ্ছে।’’
মানুষকে সচেতন করতে এ দিন ওই এলাকায় পদযাত্রা করল সিপিএমের বিভিন্ন গণসংগঠনের নেতা কর্মী সমর্থকেরা। মহিলা সমিতি, পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ, নাগরিক মঞ্চ, এসএফআই, ডিওয়াইএফআই ওই মিছিলে যোগ দেয়। রবিবার সকালে স্থানীয় গোলবাজার থেকে ওই পদযাত্রা শুরু হয়। শেষ হয় কল্যাণগড় বাজার এলাকায়। সামনে ছিল ব্যানার। পদযাত্রা থেকে স্লোগান দেওয়া হয়, ধামা চাপা দিয়ে নয়। ডেঙ্গি প্রতিরোধে সার্বিক উদ্যোগ চাই। পদযাত্রায় বিভিন্ন পোস্টার ছিল। তাতে ডেঙ্গি প্রতিরোধে এলাকার ক্লাব ও সামাজিক সংগঠনগুলিকে এগিয়ে আসার আবেদন করা হয়েছে। পথ চলতি মানুষকে ডেঙ্গি নিয়ে লিফলেটও বিলি করা হয় ওই পদযাত্রা থেকে। চুন, ব্লিচিং ছড়ানো হয়েছে।
তবে সিপিএমের ডেঙ্গি মোকাবিলায় এই উদ্যোগকে অনেকেই ভোটের প্রচার বলে মনে করছেন। নিত্য সরকার নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘সিপিএমের এই উদ্যোগ ভাল। তবে ওরা তো চাইছে পঞ্চায়েত ভোটের আগে সংগঠন দৃঢ় করতে। তাই এ সব করছে।’’ স্থানীয় কল্যাণগড় এলাকার বাসিন্দা অমিত ধর বলেন, ‘‘পদযাত্রা না করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে চুন, ব্লিচিং তেল ছড়ানো হলে মানুষের আরও বেশি কাজে লাগত।’’
অশোকনগরের প্রাক্তন বিধায়ক সিপিএমের সত্যসেবী করের অভিযোগ, এলাকায় এখন লোক দেখানো মশা মারা হচ্ছে। পুরসভার পক্ষ থেকে বর্ষার আগে বা শুরুতে মশা মারা হয়নি। তখন পুরসভা কোনও কাজ করেনি। পুরসভা পরিচালিত সেবা সদন হাসপাতাল থেকেও কোনও পরিষেবা মিলছে না।
যদিও পুর কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ছেন। তাঁদের দাবি, এলাকায় এখনও পর্যন্ত ৭৭ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। ১ মে থেকে পুর এলাকার প্রতিটি বাড়িতে স্বাস্থ্যকর্মীরা গিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার কাজ করছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy