Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

লাভের মুখ দেখাচ্ছে ‘জলপরী’

স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা জৈব পদ্ধতিতে মাছ চাষের প্রকল্পের ক্ষেত্রে ব্লক প্রশাসনের তরফে নানা রকম সুযোগ-সুবিধার প্রতিশ্রুতি পেলেন।

তাজা-মাছ: নতুন পদ্ধতিতে মাছ চাষে খুশি মহিলারা। ছবি: নির্মল বসু

তাজা-মাছ: নতুন পদ্ধতিতে মাছ চাষে খুশি মহিলারা। ছবি: নির্মল বসু

 নিজস্ব সংবাদদাতা 
বসিরহাট শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:৪০
Share: Save:

স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা জৈব পদ্ধতিতে মাছ চাষের প্রকল্পের ক্ষেত্রে ব্লক প্রশাসনের তরফে নানা রকম সুযোগ-সুবিধার প্রতিশ্রুতি পেলেন।

২০১৭ সালে জৈব পদ্ধতিতে মাছ চাষের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল তিনশো পরিবার। অধিকাংশই মহিলা। জৈব পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে তাঁরা এই এক বছরে প্রায় দু’লক্ষ টাকা লাভ করেছেন বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।

হিঙ্গলগঞ্জ ব্লক প্রশাসনের তরফে প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘জলপরী।’ প্রশাসন সূত্রের খবর, আয়লার পরে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকায় বড় অংশের জমি অনুর্বর হয়ে যায়। এক বছর আগে হিঙ্গলগঞ্জের গোবিন্দকাটি পঞ্চায়েতের কিছু মানুষ সেই সব জমিতে হিঙ্গলগঞ্জ ব্লক ও পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে ফসলের পরিবর্তে জৈব পদ্ধতিতে মাছ চাষের সিদ্ধান্ত নেন। প্রাথমিক ভাবে তিরিশটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারাই মাছচাষ শুরু করেন। এ বিষয়ে হিঙ্গলগঞ্জের যুগ্ম বিডিও সৌগত বিশ্বাস বলেন, ‘‘জৈব পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে বহু পরিবার উপকৃত হয়েছে।’’

জৈব পদ্ধতিতে মাছ চাষ ব্যাপারটা কী?

স্বনির্ভর গোষ্ঠীর এক মহিলা জানান, অন্য পদ্ধতিতে সাধারণত ইউরিয়া, পটাশ-সহ নানা রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয়। ফলে স্বাভাবিকের চেয়ে মাছের বৃদ্ধি বেশি হয়। কিন্তু জৈব পদ্ধতিতে রাসায়নিক কোনও জিনিসই ব্যবহার করা হয় না। গোবর, খোল, চুন, বেসন, খুদকুঁড়ো এই সব ব্যবহার করা হয় বলে মাছের বৃদ্ধি হয় স্বাভাবিক। এই মাছ স্বাস্থ্যের পক্ষেও নিরাপদ।

সম্প্রতি গোবিন্দকাটির পঞ্চায়েত প্রধান, হিঙ্গলগঞ্জের বিডিও এবং যুগ্ম বিডিও ‘জলপরী’ প্রকল্পের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে উৎপন্ন মাছ যাতে দ্রুত বিভিন্ন বাজারে পৌঁছে দেওয়া যায়, তা নিয়ে কথা হয়। মহিলারা জানান, প্রশাসন মাছ ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিয়ে তাঁদের সহযোগিতা করলে তাঁরা বিশেষ উপকৃত হন। একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর পক্ষে স্বপ্না মাঝি জানান, ‘জলপরী’ প্রকল্পে মাছ চাষ করে আমরা উপকৃত হয়েছি। এখন জরুরি সরকারি ভাবে সাহায্য এবং শহরের নির্দিষ্ট বাজারে মাছ বিক্রির সুবিধা।

ব্লক প্রশাসনের পক্ষে অন্যান্য দফতরের সঙ্গে প্রকল্পটিকে জুড়ে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। মাছ চাষ করার ক্ষেত্রে মহিলারা যাতে সব রকম সুবিধা পান, ব্লকের তরফে সেই প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গোবিন্দকাটির প্রজেক্ট যদি সফল হয় তা হলে বিশপুর, রূপমারি, যোগেশগঞ্জ পঞ্চায়েত এলাকাতেও ‘জলপরী’ শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। এই প্রকল্পের মাছ যাতে হিঙ্গলগঞ্জ-সহ বসিরহাট মহকুমার বিভিন্ন বাজারে পাঠানো সম্ভব হয়, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

‘জলপরী’র মাছের স্বাদ কেমন?

গোবিন্দকাটির বাসিন্দা পেশায় চিকিৎসক বিলাসরঞ্জন মণ্ডল বলেন, ‘‘এই মাছ খেয়েছি। অত্যন্ত সুস্বাদু। স্বাস্থ্যকরও। তবে জৈব পদ্ধতিতে চাষের কারণে দাম সামান্য বেশি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cultivation Fish Self Help Group Woman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE