নারীশক্তি: বনগাঁয় ছবিটি তুলেছেন নির্মাল্য প্রামাণিক
সিঁদুরে মেঘ দেখেই গর্জে উঠলেন মহিলারা।
চোলাই-গাঁজা-জুয়ার ঠেক তো ছিলই। বাড়ির পুরুষ সদস্যেরা অনেকেই সেখানে সন্ধেটা কাটিয়ে বাড়ি ফিরে হুজ্জুত বাধান। পরিশ্রমের টাকা উড়ে যায় নেশার পিছনে। সংসারের চাল-ডাল কিনতে হাত পাততে হয় লোকের কাছে।
এই যখন পরিস্থিতি, তখন গ্রামে মদের দোকান খোলার তোড়জোড় দেখে তাই স্থির থাকতে পারেননি মহিলারা। নেশার ঘোরে বাড়ির পুরুষমানুষদের অত্যাচার, উপদ্রব যে তাঁদেরই সহ্য করতে হয় বছরভর।
রুখে দাঁড়িয়েছেন তাঁরা। মঙ্গলবার সকাল থেকে বনগাঁ থানার নেতাজিনগর এলাকার কয়েকশো মহিলা পাইকপাড়া-পাটশিমুলিয়া রাস্তা অবরোধ শুরু করেন। নেতাজিনগর এলাকায় দোকান খোলার কথা ছিল। কিন্তু মদের দোকান যাতে খোলা না হয়, সে জন্য প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন নেতাজিনগর ছাড়াও আশপাশের আরও চারটি গ্রামের মেয়ে-বৌরা। ভাসানপোতা, রামচন্দ্রপুর, বোয়ালদহ, কেলমেঘা থেকেও শ’য়ে শ’য়ে মহিলা হাজির হন। নেতাজিনগরের মেয়েরা তো ছিলেনই।
তাঁরা জানালেন, বড় রাস্তার পাশেই ঘর ভাড়া নিয়ে খোলার কথা মদের দোকান। কাউন্টার তৈরি, গ্রিল দেওয়ার কাজ চলছে।
সেই কাজই বন্ধ রাখতে হবে, মদের দোকান খোলা যাবে না, এই দাবি নিয়ে রাস্তার গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ শুরু হয়। গাড়িঘোড়া আটকে পড়ে। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত অবরোধ চলে। বনগাঁ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। মহিলারা এ দিন থানার আইসি সতীনাথ চট্টরাজের কাছে মদের দোকান বন্ধের দাবিতে স্মারকলিপিও দিয়েছেন। আইসি তাঁদের জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
মাধবী মণ্ডল, অপর্ণা মণ্ডল, সন্ধ্যা দেবনাথদের বক্তব্য, ‘‘এলাকায় মদের দোকান চালু হলে আমাদের পরিবারেরই স্বামী-ছেলেরা নেশা করা শুরু করবে। সংসারে আশান্তি বাধবে। তাই আমরা মদের দোকান চালু করতে দেব না।’’ মহিলাদের আরও দাবি, এলাকা থেকে চোলাই ও জুয়ার ঠেকও বন্ধ করতে হবে।
মহিলাদের দাবি মেনে ওই দোকানের মালিক কথা দিয়েছেন, মদের দোকান করার জন্য ঘর ভাড়া দেবেন না তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy