মদ্যপান: প্রকাশ্যেই। নির্মাল্য প্রামাণিক
সর্ষে খেতে বসে প্রকাশ্যেই চলছে মদ্যপান। কোথাও বাঁশের ঝোপের আড়ালে বসেছে ঠেক। কেউ আবার রাস্তার পাশে গাড়িতে বসেই মদ্যপান করছেন।
শীত পড়তেই বনগাঁ মহকুমার বিভিন্ন জায়গায় এসে বনভোজনে মাতছেন দূর দূরান্তের মানুষ। প্রকাশ্যে মদ খাওয়া চলছে প্রায় সর্বত্রই।
মঙ্গলবার বছর শুরুর দিনে সকাল থেকেই ভিড় বাড়তে থাকে পিকনিক স্পটগুলিতে। মাধবপুরে, গাইঘাটার ডুমা বাওর সংলগ্ন এলাকায়, বাগদার পারমাদন ও মঙ্গলগঞ্জে এ দিন বহু মানুষ বনভোজন করতে জড়ো হন।
মহকুমার গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলিতে দেখা গেল, গাড়িতে বড় বড় বক্স বেঁধে তারস্বরে মাইক বাজাতে বাজতে যুবক-যুবতীরা বনভোজনে যাচ্ছেন। বক্সের আওয়াজ এতটাই বেশি, পথচলতি বহু মানুষকে কানে হাত চাপা দিতে দেখা গেল।
এলাকায় প্রচুর সিভিক ভলান্টিয়ার চোখে পড়েছে এ দিন। বনগাঁর এসডিপিও অনিল রায় অবশ্য বলেন, ‘‘পিকনিক স্পটগুলিতে নজর রাখা হয়েছে। বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করা হবে না। জোরে সাউন্ড বক্স বাজানোর বিরুদ্ধেও থানাগুলিকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
স্থানীয় মানুষ অবশ্য জানিয়েছেন, এ সবই কথার কথা। পিকনিক করতে আসা লোকজনের মেজাজ-মর্জি ঠেকাতে পারছে না পুলিশ।
মাধবপুরে ইছামতীর পাড়ে পিকনিক করতে আসেন অনেকে। এখানে আছে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বসতবাড়ি। নদীর পাড়ে তৈরি হয়েছে বিভূতিভূষণ স্মৃতি ঘাট। মঙ্গলবার সকালে মাধবপুরে গোটা পনেরোটি দল বনভোজন করতে এসেছিলেন। অনেকেই এসেছেন পরিবার নিয়ে। তার মধ্যেও চলছে মদ খেয়ে তারস্বরে বক্স বাজিয়ে নাচ। এক যুবককে হাতে মদের বোতল নিয়ে নাচতে দেখা গেল। পারমাদনেও রাস্তার পাশে খেতের মধ্যে বসে অনেককে মদ খেতে দেখা গেল।
রাজারহাট নিউটাউন থেকে আসা এক যুবক মদ্যপান করছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘বছরের একটা দিনই তো আনন্দ করছি। আমরা কোনও ঝামেলা করছি না। তা ছাড়া, ঝামেলা করলে পুলিশ তো আছে।’’
পিকনিক করতে আসা মহিলারা সর্ষে খেতে ঘুরছিলেন। এক তরুণী বলেন, ‘‘ইচ্ছে ছিল গোটা এলাকাটা ঘুরে দেখার। কিন্তু ওদিকটায় যেতে সাহসই হল না। মদ খেয়ে নাচানাচি চলছে।’’ এক মহিলার কথায়, ‘‘মদ্যপেরা এখনও কোনও ঝামেলা করেনি ঠিকই, কিন্তু ভয় তো লাগেই।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেল, বছরের শুরুর দিনটায় মাধবপুরে কোনও আপত্তিকর ঘটনা না ঘটলেও অতীতে এখানে বনভোজনকারীদের সঙ্গে মদ্যপ যুবকদের মারপিট বেধেছে। আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে দাদাগিরির ঘটনাও ঘটেছে। মাঝে কয়েক বছর লোকজন কম আসতেন। এ বছর ফের ভিড় হচ্ছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের আশঙ্কা, পরিবেশ সুস্থ না থাকলে ভবিষ্যতে লোকজন আসা ফের কমে যেতে পারে। শীতের মরসুমে এখানে নৌকো চালিয়ে ও দোকানপাট দিয়ে কিছু মানুষ টাকা রোজগার করেন। সে ক্ষেত্রে তাঁরা পড়বেন আতান্তরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy